২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর সৃষ্ট উত্তেজনা দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে যেকোনো সময় যুদ্ধ বেঁধে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। আর রাজনৈতিক কারণে দুই দেশ যখন লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন দেশটির সাবেক ক্রিকেটাররা বাক্‌যুদ্ধে জড়াবেন না, তা কি হয় নাকি!

বিভিন্ন সময়ই নানা ইস্যুতে কথার লড়াইয়ে নামতে দেখা গেছে দুই দেশের ক্রিকেটারদের। সেই ধারাবাহিকতায় এবার পাল্টাপাল্টি কথার তির ছুঁড়েছেন দুই দেশের দুই সাবেক ক্রিকেটার শহীদ আফ্রিদি ও শিখর ধাওয়ান। যেখানে লড়াইয়ের একপর্যায়ে ধাওয়ানকে ‘চা খাওয়ার’ দাওয়াত দিয়ে খোঁচা দিলেন আফ্রিদি।

ঘটনার শুরু পাকিস্তানি টেলিভিশন চ্যানেল সামা টিভির এক টক শোতে আফ্রিদির করা মন্তব্যকে ঘিরে। পেহেলগামের ঘটনায় ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের ভূমিকার সমালোচনা করে আফ্রিদি বলেন, ‘কোনো একটা ঘটনা ঘটার এক ঘণ্টার মধ্যে ওদের সংবাদমাধ্যমগুলো বলিউডে পরিণত হয়ে যায়। আল্লাহর ওয়াস্তে এর মধ্যে বলিউডকে টেনে আনবেন না। তারা যে ধরনের কথা ছড়াচ্ছিল, আমি উপভোগই করছিলাম বরং। বলছিলাম, এরা নাকি নিজেদের শিক্ষিত লোক মনে করে। অথচ সংবাদমাধ্যমের কাজ তথ্য জানানো, মানুষকে শিক্ষিত করা।’

আরও পড়ুনপাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সব সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত, বললেন সৌরভ২৬ এপ্রিল ২০২৫

ভারতীয় ক্রিকেটারদের পাকিস্তানের দিকে আঙুল তোলার সমালোচনা করে আফ্রিদি আরও যোগ করেন, ‘তাদের দুজন ক্রিকেটার, যারা ভারতের হয়ে দীর্ঘ সময় ক্রিকেট খেলেছে, ক্রিকেটের দূত ও শীর্ষ ক্রিকেটারও ছিলেন, তারা সরাসরি বলল পাকিস্তানের কথা। আরে ভাই, পাকিস্তান কেন? কোনো প্রমাণ থাকলে দেখাও। যেভাবে আমরা আপনাদের প্রমাণ দিয়েছি।’ এ সময় অতীতে ভারতীয় পাইলট ও বিএসএফ সদস্যের পাকিস্তানে আটক হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে আফ্রিদি বলেন, ‘একজন এখনো আমাদের হাতে আটক আছে এবং আরেকজনকে আমরা চা খাইয়ে বিদায় করেছি। প্রমাণ তো দাও। কোনো কিছু হলেই পাকিস্তানের দোষ। কেন পাকিস্তান।’

শুধু সাবেক ক্রিকেটারদেরকেই নয়, এ সময় ভারতীয় সৈন্যদের সামর্থ্য নিয়েও প্রশ্ন তোলেন আফ্রিদি, ‘কাশ্মীরে তোমাদের ৮ লাখ সৈন্য আছে, তারপরও এমন ঘটনা ঘটে গেল। এর অর্থ তারা এতই অকর্মা ও অকেজো যে মানুষকে নিরাপত্তা দিতে পারে না।’
সাবেক এই পাকিস্তানি অলরাউন্ডারের কথার জবাব দিতে অবশ্য দেরি করেননি ভারতের সাবেক ওপেনার ধাওয়ান। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘কারগিলে হারিয়েছিলাম। এখনই এত নিচে নেমেছ, আর কত নামবে? অহেতুক মন্তব্য করার চেয়ে নিজেদের দেশের উন্নতিতে মনোযোগ দেওয়া উচিত। নিজেদের সেনাবাহিনীর ওপর আমাদের অনেক গর্ব।’

আরও পড়ুনশোয়েব আখতারের ইউটিউব চ্যানেল কি ভারতে নিষিদ্ধ, যা জানা গেল২৮ এপ্রিল ২০২৫

ধাওয়ানের এই পোস্ট শেয়ার করে ফিরতি জবাব দিয়েছেন আফ্রিদিও। তিনি লিখেছেন, ‘হার-জিতের কথা বাদ দাও। শিখর, আসো তোমাকে চা খাওয়াই।’ পোস্টের নিচে নিজের চা খাওয়ার ছবিও জুড়ে দিয়ে আফ্রিদি হ্যাশট্যাগ দিয়েছেন ‘ফ্যান্টাস্টিক-টি।’ এই চা খাওয়ানোর দাওয়াত কি ভারতীয় বিমানবাহিনীর সদস্যকে চা খাইয়ে বিদায় করার ঘটনা মনে করিয়ে দিতেই দেওয়া কি না, সেটি অবশ্য আফ্রিদি স্পষ্ট করেননি।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী হতাহতের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার শোক

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে সন্ত্রাসীদের অতর্কিত ড্রোন হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শান্তিরক্ষীদের হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

প্রধান উপদেষ্টা শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, “শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার মহান দায়িত্ব পালনের সময় আমাদের ছয়জন বীর শান্তিরক্ষীর শাহাদাত বরণ এবং আরো আটজনের আহত হওয়ার সংবাদে আমি গভীরভাবে মর্মাহত। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের বিপুল অবদান আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত; বীরদের এই আত্মত্যাগ একদিকে জাতির গৌরব, অন্যদিকে গভীর বেদনার।”

আরো পড়ুন:

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় ৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত: আইএসপিআর

ঢামেক হাসপাতালে নিরাপত্তা জোরদার

তিনি নিহত শান্তিরক্ষীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। একই সঙ্গে আহত শান্তিরক্ষীদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আহত শান্তিরক্ষীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করতে  জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইতিমধ্যেই জাতিসংঘের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। এই দুঃসময়ে সরকার শান্তিরক্ষীদের পরিবারগুলোর পাশে থাকবে।”

বিবৃতিতে তিনি এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলা আন্তর্জাতিক শান্তি ও মানবতার বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধ।”

তিনি জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা আরও জোরদারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।

নিহত শান্তিরক্ষীদের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা এবং আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ চালিয়ে যাবে বলেও বিবৃতিতে বলা হয়।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ