বগুড়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বিক্ষোভ সমাবেশ চলাকালে এনসিপি ও বৈষম‌্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া ও মারামারি হয়েছে। এ সময় চারজন আহত হয়েছে। 

বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকেল সোয়া ৫টায় শহরের পৌর পার্কে টিটু মিলনায়তন প্রাঙ্গণে এনসিপি বগুড়া জেলা শাখার আয়োজনে গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার ও তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। 

আহতরা হলেন, রিয়াদ হাসান (২৬), তাহমীদ হোসেন (২৫), জুনায়েদ হোসেন (২১) ও তাওহীদ (১৯)। 

আরো পড়ুন:

গণঅভ্যুত্থানে শহীদ রিজভীর ভাইকে কুপিয়ে জখম, গ্রেপ্তার ৩

বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ওপর ছাত্রদলের হামলা, আহত ৩

এনসিপির অনুষ্ঠান চলাকালে বিকাল ৫টার দিকে এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, যুগ্ম সদস্য সচিব তাহসিন রিয়াজসহ কেন্দ্রীয় নেতারা মঞ্চে ওঠেন। সমাবেশ শুরুর কিছুক্ষণ পরেই ছাত্র আন্দোলনের একাংশ ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ স্লোগান দিতে দিতে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করে। এনসিপির নেতাকর্মীরা তাদের বাধা দিলে প্রথমে কথা কাটাকাটি এবং একপর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়। এরপর তিন দফা মারামারি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এমনকি সারজিস আলম বক্তব্য দেওয়ার সময়ও উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলতে থাকে। 

এনসিপির বগুড়া জেলা সংগঠক সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘‘আমাদের এনসিপির পূর্ব নির্ধারিত বিক্ষোভ সমাবেশ গত কয়েক দিন ধরে ভন্ডুল করার জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দিয়ে আসছিল। বৈষম্যাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বগুড়ার আহ্বায়ক মাহমুদুলের নেতৃত্বে কিছু দুষ্কৃতকারী অনুষ্ঠান ভন্ডুল করতে আসলে আমাদের কর্মীরা তাদের মাঠ থেকে বের করে দেয়।’’

এ বিষয়ে বৈষম্যাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বগুড়ার আহ্বায়ক মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘‘হামলাটা মূলত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটিতে যারা ছিল, তাদের উপর হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মূলত এনসিপি গঠন করা হয়েছে রানিং জামায়াতের, শিবিরের সাথী, কর্মীদের দিয়ে। সঙ্গে আওয়ামী লীগের কিছু ক্যাডার বাহিনীকে নিয়ে। এ কারণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সারজিসের কাছে যায় জানতে চাই, এনসিপি কেন বগুড়ায় জামায়াত দিয়ে গঠন করা হচ্ছে? কেন বগুড়ায় আওয়ামী লীগ এনসিপির ভেতর থাকবে? কিন্তু সারজিসের কাছে আমরা পৌঁছাতে পারিনি। ভেতরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের উপর আক্রমণ করা হয়। আক্রমণে আমাদের অনেকে আহত হয়েছে। তবে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চারজন ভর্তি রয়েছেন।’’ 

বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঈনুদ্দীন বলেন, ‘‘অনুষ্ঠানস্থলে কয়েকজন ছেলেপেলে ঢুকেছিল, তাদের দু-একটা চড়থাপ্পড় মেরে বের করে দিয়েছে। পরে রাস্তার উপর তারা মারামারি করেছে। ওটা আমাদের আউট অব রেঞ্জ ছিল। পরে শুনলাম, একজন আহত হয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’’ 

এখনো কোনো পক্ষই থানায় অভিযোগ জানায়নি বলে জানান তিনি। 
 

ঢাকা/এনাম/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণঅভ য ত থ ন আহত এনস প র আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী হতাহতের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার শোক

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে সন্ত্রাসীদের অতর্কিত ড্রোন হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শান্তিরক্ষীদের হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

প্রধান উপদেষ্টা শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, “শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার মহান দায়িত্ব পালনের সময় আমাদের ছয়জন বীর শান্তিরক্ষীর শাহাদাত বরণ এবং আরো আটজনের আহত হওয়ার সংবাদে আমি গভীরভাবে মর্মাহত। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের বিপুল অবদান আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত; বীরদের এই আত্মত্যাগ একদিকে জাতির গৌরব, অন্যদিকে গভীর বেদনার।”

আরো পড়ুন:

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় ৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত: আইএসপিআর

ঢামেক হাসপাতালে নিরাপত্তা জোরদার

তিনি নিহত শান্তিরক্ষীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। একই সঙ্গে আহত শান্তিরক্ষীদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আহত শান্তিরক্ষীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করতে  জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইতিমধ্যেই জাতিসংঘের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। এই দুঃসময়ে সরকার শান্তিরক্ষীদের পরিবারগুলোর পাশে থাকবে।”

বিবৃতিতে তিনি এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলা আন্তর্জাতিক শান্তি ও মানবতার বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধ।”

তিনি জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা আরও জোরদারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।

নিহত শান্তিরক্ষীদের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা এবং আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ চালিয়ে যাবে বলেও বিবৃতিতে বলা হয়।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ