সারজিসের সামনে এনসিপির সমাবেশে মারামারি, আহত ৪
Published: 30th, April 2025 GMT
বগুড়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বিক্ষোভ সমাবেশ চলাকালে এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া ও মারামারি হয়েছে। এ সময় চারজন আহত হয়েছে।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকেল সোয়া ৫টায় শহরের পৌর পার্কে টিটু মিলনায়তন প্রাঙ্গণে এনসিপি বগুড়া জেলা শাখার আয়োজনে গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার ও তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, রিয়াদ হাসান (২৬), তাহমীদ হোসেন (২৫), জুনায়েদ হোসেন (২১) ও তাওহীদ (১৯)।
আরো পড়ুন:
গণঅভ্যুত্থানে শহীদ রিজভীর ভাইকে কুপিয়ে জখম, গ্রেপ্তার ৩
বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ওপর ছাত্রদলের হামলা, আহত ৩
এনসিপির অনুষ্ঠান চলাকালে বিকাল ৫টার দিকে এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, যুগ্ম সদস্য সচিব তাহসিন রিয়াজসহ কেন্দ্রীয় নেতারা মঞ্চে ওঠেন। সমাবেশ শুরুর কিছুক্ষণ পরেই ছাত্র আন্দোলনের একাংশ ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ স্লোগান দিতে দিতে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করে। এনসিপির নেতাকর্মীরা তাদের বাধা দিলে প্রথমে কথা কাটাকাটি এবং একপর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়। এরপর তিন দফা মারামারি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এমনকি সারজিস আলম বক্তব্য দেওয়ার সময়ও উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলতে থাকে।
এনসিপির বগুড়া জেলা সংগঠক সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘‘আমাদের এনসিপির পূর্ব নির্ধারিত বিক্ষোভ সমাবেশ গত কয়েক দিন ধরে ভন্ডুল করার জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দিয়ে আসছিল। বৈষম্যাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বগুড়ার আহ্বায়ক মাহমুদুলের নেতৃত্বে কিছু দুষ্কৃতকারী অনুষ্ঠান ভন্ডুল করতে আসলে আমাদের কর্মীরা তাদের মাঠ থেকে বের করে দেয়।’’
এ বিষয়ে বৈষম্যাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বগুড়ার আহ্বায়ক মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘‘হামলাটা মূলত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটিতে যারা ছিল, তাদের উপর হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মূলত এনসিপি গঠন করা হয়েছে রানিং জামায়াতের, শিবিরের সাথী, কর্মীদের দিয়ে। সঙ্গে আওয়ামী লীগের কিছু ক্যাডার বাহিনীকে নিয়ে। এ কারণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সারজিসের কাছে যায় জানতে চাই, এনসিপি কেন বগুড়ায় জামায়াত দিয়ে গঠন করা হচ্ছে? কেন বগুড়ায় আওয়ামী লীগ এনসিপির ভেতর থাকবে? কিন্তু সারজিসের কাছে আমরা পৌঁছাতে পারিনি। ভেতরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের উপর আক্রমণ করা হয়। আক্রমণে আমাদের অনেকে আহত হয়েছে। তবে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চারজন ভর্তি রয়েছেন।’’
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঈনুদ্দীন বলেন, ‘‘অনুষ্ঠানস্থলে কয়েকজন ছেলেপেলে ঢুকেছিল, তাদের দু-একটা চড়থাপ্পড় মেরে বের করে দিয়েছে। পরে রাস্তার উপর তারা মারামারি করেছে। ওটা আমাদের আউট অব রেঞ্জ ছিল। পরে শুনলাম, একজন আহত হয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’’
এখনো কোনো পক্ষই থানায় অভিযোগ জানায়নি বলে জানান তিনি।
ঢাকা/এনাম/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণঅভ য ত থ ন আহত এনস প র আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
সবাই ভেবেছিলেন কিশোরী ডুবে গেছে, ১০ দিন পর ফোন করে জানাল সে গাজীপুরে আছে
১০ দিন আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল করতে গিয়েছিল কিশোরী সোহানা খাতুন। বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদীতে অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান পায়নি। তবে গত বুধবার রাতে মাকে ফোন করেছে সোহানা; জানিয়েছে সে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।
নিখোঁজ হওয়া কিশোরীর নাম সোহানা খাতুন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম কারিগর পাড়ায়। তার বাবা গোলাম মওলা ও মা শিরিনা খাতুন।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯ জুলাই দুপুরে বাড়ির পাশের মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল ও কাপড় ধুতে গিয়েছিল সোহানা। দীর্ঘ সময়েও না ফেরায় তার মা নদীর ধারে যান; দেখেন, সোহানার কাপড় পড়ে আছে। এরপর স্বজন ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। খবর পেয়ে ওই রাতে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায়। পরদিন খুলনা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ১২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান না পেয়ে অভিযান স্থগিত করে। ২১ জুলাই এক কবিরাজ এনে নদীতে খোঁজার চেষ্টাও করেন সোহানার বাবা–মা।
এমন অবস্থায় বুধবার রাতে হঠাৎ সোহানা তার মায়ের ফোনে কল দিয়ে জানায়, সে ঢাকার গাজীপুরে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছে রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সোহানার বাবা গোলাম মওলা। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম, মেয়ে নদীতে ডুবে গেছে। সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করেছি। এমনকি কবিরাজও এনেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ বুধবার আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে জানায়, সে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে। আমরা বিষয়টি গতকাল রাতে পুলিশকে জানিয়েছি।’ বিষয়টি বুঝতে না পেরে সবাইকে কষ্ট দেওয়ার জন্য তিনি ক্ষমা চান।
স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় দুই বছর আগে খালাতো ভাই কুতুব উদ্দিনের সঙ্গে পালিয়ে যায় সোহানা এবং দুজন বিয়ে করে। তবে বনিবনা না হওয়ায় তিন মাস আগে সোহানা তাকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে। নদীতে নিখোঁজ হওয়ার ‘নাটক’ করে সে পালিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম বলেন, শুরুতে পরিবারের লোকজন জানিয়েছিল, নদীতে গোসলে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে সোহানা। গতকাল আবার তার বাবা জানিয়েছে, মেয়ে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।