মহান মে দিবস: শ্রমিকের অধিকার রক্ষায় সংস্কারে জোর সরকারের
Published: 30th, April 2025 GMT
শ্রম আইন সংস্কার করে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার বুঝিয়ে দিয়ে মালিক-শ্রমিক সুসম্পর্কের বন্ধনে নতুন করে দেশ গড়ার প্রত্যয়ের মধ্যে এলো মহান মে দিবস; আজ ১ মে বিশ্ব শ্রমিক দিবস।
পুরো বিশ্বের সঙ্গে আজ বাংলাদেশে শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় জাতীয়, রাজনৈতিক ও সংগঠনিক বিভিন্ন পক্ষ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করবে।
মহান মে দিবসে এবার বাংলাদেশের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়ব এ দেশ নতুন করে’।
আরো পড়ুন:
অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা করতে হবে
পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা স্থায়ী চাকরির নিশ্চয়তা ও সম্মান পাক
সভ্যতা নির্মাণের কারিগর শ্রমিকদের সম্মানে এবং ১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রে আন্দোলনে আত্মহুতি দেওয়া শ্রমিকদের শ্রদ্ধাচিত্তে স্মরণে দিবসটিতে বিশ্বের ৮০টির বেশি দেশে জাতীয় ছুটি থাকে। বাংলাদেশেও আজ জাতীয় ছুটি। অনেক দেশে বেসরকারিভাবে দিবসটি পালন করা হয়।
১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে শ্রমের মর্যাদা, শ্রমের মূল্য এবং দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে আন্দোলনে নেমে শ্রমিকেরা আত্মাহুতি দেন। দিনটির ঘটনা ইতিহাসে আজো অম্লান। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন হিসেবে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয় দিবসটি।
মহান মে দিবসের সবচেয়ে বড় অর্জন শ্রমশোষণ কমিয়ে আনার পথ সুগম করা। তবে শ্রমদাসত্ব বিলোপ হয়নি। আধুনিক শ্রমদাসত্বের শেকলে নতুন কায়দায় বন্দি বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ উপযুক্ত শ্রমের বিনিময়ে ন্যায্য অধিকার চায়; যেখানে নিয়োগকারী ও শ্রমিক চোখে চোখ রেখে কথা বলবে, যে যার পাওনা ও অধিকার বুঝে নেবে।
বাংলাদেশে শ্রম ব্যবস্থা এখনো সেকেলে শোষণের ধারণায় পুষ্ট, যা থেকে শ্রমিকদের বের করে আনার দীর্ঘদিনের দাবি রয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার শ্রমিকের অধিকার রক্ষা ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে কাঙ্ক্ষিত সংস্কারের লক্ষ্যে গঠন করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন। এরই মধ্যে কমিশন তাদের সুপারিশমালা সরকারকে দিয়েছে; এখন চলছে পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ। সরকার, রাজনৈতিক দল, নিয়োগকারী, শ্রমিক ও বিশেষজ্ঞ- সব অংশীজন মিলেই কমিশনের সুপারিশ চূড়ান্ত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত সুপারিশে কী কী পরিবর্তন আসছে, জানতে চাইলে বুধবার (৩০ এপ্রিল) শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “শ্রম আইনে অনেক পরিবর্তন আসছে।”
“এখনো পাকাপোক্ত হয়নি, তবে অনেক পরিবর্তন আসছে। আমাদের আলোচনা হয়েছে। যেসব প্রস্তাব আমরা দিয়েছি, যেগুলো আমরা একসেপ্ট করেছি, সেগুলো আইএলও-কে (আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা) বলা হয়েছে। সেগুলো ফাইনালাইজ করতে হবে। আরো অনেক কিছু আছে,” বলেন তিনি।
কবে নাগাদ শ্রমিকরা নতুন আইনের বিষয়ে ‘সুখবর’ পাবেন, তার কোনো দিনক্ষণ না জানালেও সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, “যত দ্রুত সম্ভব চূড়ান্ত করা হবে।”
অবশ্য কমিশনের সুপারিশ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রচলিত শ্রমিকদের পাশাপাশি অপ্রচলিত খাতের শ্রমিকদেরও স্বার্থ রক্ষার উপায় বাতলে দেওয়া হয়েছে।
তৈরি পোশাকখাতসহ সব শিল্পখাতের শ্রমিকদের বিষয়ে কমিশনের সুপারিশে বলা হয়েছে, শ্রম আইনে শিল্পের উদ্যোক্তাদের ‘মালিক’ এর বদলে ‘নিয়োগ কর্তা’ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। কোনো শ্রমিককে এক দিনের জন্য নিয়োগ দেওয়া হলেও চুক্তিপত্র বা পরিচয়পত্র থাকতে হবে।
সব খাতের শ্রমিকদের পরিচয়পত্র নিশ্চিত করতে শ্রম আইন ‘সর্বজনীন’ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সারা দেশের শ্রমিকদের নিয়ে একটি কেন্দ্রীয় তথ্য ভাণ্ডার গঠনের কথা বলেছে কমিশন।
সুপারিশমালা বলা হয়েছে, সেবা খাতে থাকা শ্রমিকদের মধ্যে স্ব-উদ্যোগে নিয়োজিতরা তথ্য ভাণ্ডারের ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন বা নিবন্ধন করার সুযোগ পাবেন এবং এই নিবন্ধনই শ্রমিক হিসেবে তার পরিচয়পত্র হবে।
মৎস্যজীবী, রিকশাওয়ালা, দিনমজুর, কৃষি শ্রমিক ও হকারের মতো স্বাধীন শ্রমজীবীদেরও একইভাবে নিবন্ধন করে পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব বলে কমিশন মত দিয়েছে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের শ্রম শাখার এক স্মারকে শ্রমিককে চাকরিচ্যুতি, ছাঁটাই এবং মহান মে দিবসে কারখানা বন্ধ রাখা প্রসঙ্গে যা বলা হয়েছে, গত ৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত আরএমজি-বিষয়ক ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদের (আরএমজি বিষয়ক টিসিসি) ২০তম সভায় বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এসব সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে, যৌক্তিক কারণ এবং শ্রম আইনের প্রতিপালন ব্যতীত শ্রমিক চাকরিচ্যুত বা ছাঁটাই করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে শ্রমিককে চাকরিচ্যুত বা ছাঁটাই করার পূর্বে স্থানীয় প্রশাসন, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, শিল্পাঞ্চল পুলিশ এবং বিজিএমইএর ছাড়পত্র গ্রহণ করতে হবে। শ্রম আইন মেনে শ্রমিককে চাকরিচ্যুত বা ছাঁটাই করা না হলে, মালিকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
সিদ্ধান্তের মধ্যে আরো রয়েছে, মহান মে দিবসে সকল কারখানা বা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। কোনো কারখানা কর্তৃপক্ষ মে দিবসে কারখানা খোলা রেখে কার্যক্রম পরিচালনা করলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
বাংলাদেশে মহান মে দিবসে ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য সেফটি দিবস’ পালন করা হচ্ছে। সে অনুযায়ী আজ বৃহস্পতিবার (১ মে) শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বর্ণাঢ্য র্যালি করবে, যেটি উদ্বোধন করবেন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে হবে এই র্যালি।
মে দিবসে ঢাকার নয়া পল্টনে দুপুর ২টায় শ্রমিক সমাবেশের ডাক দিয়েছে বিএনপি। সেখানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে কথা বললেন। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
ঢাকা মহানগরের বাইরে নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইলসহ আশপাশের জেলা থেকে বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা মে দিসবের শ্রমিক সমাবেশে যোগ দেবেন বলে বিএনপি থেকে জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে পুরানা পল্টন মোড়ে শ্রমিক সমাবেশের করবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সেখানে কথা বললেন দলটির আমির ডা.
মেহনতি মানুষের প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা: প্রধান উপদেষ্টা
মহান মে দিবস এবং জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস উপলক্ষে বিশেষ বাণী দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বাণীতে তিনি বলেছেন, বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতে দেশব্যাপী যথাযোগ্য মর্যাদায় ‘মহান মে দিবস-২০২৫’ পালন করা হচ্ছে জেনে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। দৈনিক ৮ ঘণ্টা শ্রম, ন্যায্য মজুরি ও শ্রমের মর্যাদা আদায়ের লক্ষ্যে ১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের ‘হে’ মার্কেটে শ্রমিকদের রক্তাক্ত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে শ্রমিক ও শ্রমের মর্যাদা সম্মানের সঙ্গে বিশ্বময় স্বীকৃতি লাভ করে। এ দিবসে আদায় হয়েছে শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার।
“সে প্রেক্ষাপটে এটি শুধু একটি সাধারণ দিবস নয়, শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন-সংগ্রামের অনুপ্রেরণার উৎস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার ঐতিহাসিক এ দিনে যাদের আত্মত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে শ্রমিক অধিকার স্বীকৃতি পেয়েছে, তাদেরসহ দেশের সকল মেহনতি মানুষের প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।”
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “শ্রমিক-মালিক সুসম্পর্কের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে মে দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম। এ বছর মে দিবসের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়ব এ দেশ নতুন করে’, আমাদের দেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।”
“শ্রমিক ও মালিক পরস্পরের পরিপূরক, আর তাদের যৌথ প্রচেষ্টাই একটি শক্তিশালী, আত্মনির্ভর ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। বাংলাদেশের পোশাক খাত, কৃষি, শিল্প, নির্মাণ, পরিবহণ, প্রযুক্তি - প্রতিটি খাতের উন্নতির পেছনে রয়েছে শ্রমিক এবং মালিকের মেধা ও প্রাণান্তকর পরিশ্রম,” বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
এ দেশকে নতুন করে গড়ে তুলতে ঐক্য, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং আস্থার পরিবেশ সুদৃঢ় করার আহ্বান রেখে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “আমরা যদি ঐক্য ও সহযোগিতার ধারা অব্যাহত রাখি, তাহলে জুলাই-আগস্টের ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন শুধু স্বপ্ন নয়, বাস্তব হয়ে উঠবে।”
তিনি বলেন, “এ বছর মহান মে দিবসের পাশাপাশি একইসঙ্গে আমরা ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস-২০২৫’ পালন করছি। শ্রমিকের ন্যায্য স্বীকৃতি ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা শুধু শ্রমিকদের অধিকারই নয়, এটি শিল্প ও অর্থনীতির উন্নয়নের অন্যতম শর্ত।”
বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা আরো বলেন, “একইসঙ্গে শ্রমিকের জীবনমান উন্নয়ন ও কল্যাণ পুরো শিল্পখাত এবং দেশের অর্থনীতিতে প্রতিফলিত হয়। বাংলাদেশের উন্নয়ন-যাত্রায় শ্রমিক ও মালিকের অংশীদারিত্বে দেশের অগ্রগতি আরো ত্বরান্বিত হবে মর্মে আমার বিশ্বাস। আমি ‘মহান মে দিবস-২০২৫’ এবং ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস-২০২৫’ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।”
ঢাকা/এএএম/রাসেল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ত য় প শ গত স ব স থ য ন শ চ ত কর চ কর চ য ত শ রমজ ব ন বন ধ নত ন ক প রস ত সরক র দ বসট
এছাড়াও পড়ুন:
৮৭ কোটি টাকা মানিলন্ডারিং, গাজীসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা
সাবেক বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী এবং নারায়ণগঞ্জ (রূপগঞ্জ-১) এর সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী (৭৭) ও তার সাবেক পিএস এমদাদুল হক (৫২) সহ মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছে সিআইডি।
মামলার অন্য অভিযুক্তরা হলেন- সৈয়দা ফেরদৌসী আলম নীলা (৫৭), তোফায়েল আহমেদ আলমাছ (৫৫), মো. মাহাবুবুর রহমান জাকারিয়া মোল্লা (৪৮), মো. আনছার আলী (৫৫), আলফাজ উদ্দিন (৬৩) ও দিমন ভূঁইয়া (৫৫)।
প্রতারণাপূর্বক চাঁদাবাজীর মাধ্যমে ভুয়া দলিল তৈরি করে অবৈধভাবে মোট ২৪০১.৪৬ শতাংশ জমি (যার বর্তমান সরকারি বাজারমূল্য ৮৬ কোটি ৭৮ লাখ ৮৭ হাজার ৬৪৪ টাকা) জবর দখল, হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করায় তাদের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট রূপগঞ্জ থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ৪৩
মামলার এজাহার ও সিআইডি সূত্রে জানাগেছে, অভিযুক্তরা অজ্ঞাত ৭/৮ জন ব্যক্তির সহায়তায় একটি সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্র গড়ে তোলে। অপরাধ চক্রটি পরস্পর যোগসাজশে গত ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি হতে ২০২৪ সালের ২০ জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ভিকটিম মো. শাহ আলমের ১২৪ শতাংশ, আব্দুস সোবহান মিয়ার ১০ শতাংশ, নাঈম প্রধানের ১৮ শতাংশ, হাসিনা বেগমের ০৯ শতাংশ, আলেয়ার ৪৫ শতাংশ, ইয়াছিন প্রধানের ২৭.৫ শতাংশ, সানজুরা বেগমের ০৪ শতাংশ, মো. আশরাফ উদ্দিন ভুইয়ার ৭২ শতাংশমোস্তফা মনোয়ার ভুইয়ার ৩৪৬ শতাংশ, মো. হাবিব খানের ১৮৩.৫ শতাংশ, রাশিদা ভুইয়ার ১২৪ শতাংশ, আমজাদ আলী ভুইয়ার ৭৬০.৫ শতাংশ, মোবারক ভুইয়ার ৩১ শতাংশ, নূর-ই-তাছলীম তাপসের ৪৩০.৭ শতাংশ, মো. মাহবুবুল হক ভুইয়ার ৭১.৪৭ শতাংশ ও মোহাম্মদ মাহমুদুল হকের ৬৫ শতাংশসহ সর্বমোট ২৪০১.৪৬ শতাংশ জমি যার বর্তমান মূল্য (সরকারি দর অনুযায়ী) ৮৬ কোটি ৭৮ লাখ ৮৭ হাজার ৬৪৪ টাকা পরস্পর সংঘবদ্ধভাবে প্রতারণাপূর্বক চাঁদাবাজির মাধ্যমে ভুয়া দলিল সৃজন করে অবৈধভাবে স্থাবর সম্পত্তি জবর দখল করে হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করেছে।
এ বিষয়ে সিনিয়র স্পেশাল জজ, মহানগর আদালত, ঢাকার পারমিশন পিটি. নং- ৬৮৪/২০২৫, তারিখ-৮ জুলাই ২০২৫ খ্রি. মুলে সম্পত্তি ক্রোক করা আছে, যার বর্তমান বাজার মূল্য ৪০০ (চারশত) কোটি টাকা।
ক্রোককৃত সম্পত্তির রিসিভার হিসেবে বিজ্ঞ সিনিয়র স্পেশাল জজ, মহানগর আদালত, ঢাকা সিআইডি প্রধান (এ্যাডিশনাল আইজিপি) কে নিয়োগ করেছেন। ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট এই মামলার তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অজ্ঞাত অপর সদস্যদের শনাক্তকরণ ও অন্যান্য আইনানুগ প্রক্রিয়ার স্বার্থে সিআইডির অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।
মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাবজাল বলেন, মামলাটি থানায় দায়ের হলেও তদন্ত করছে সিআইডি।