রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের আশ্বাসে অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত, নতুন অ্যাডহক কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত
Published: 1st, May 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (রুয়া) কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন স্থগিতের প্রতিবাদে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের আশ্বাসে অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করেছেন। শুক্রবারের মধ্যে নতুন করে অ্যাডহক কমিটি গঠন ও নির্বাচন কমিশনের কাজ শুরু করার আশ্বাসে তাঁরা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে শুক্রবারের মধ্যে কমিটি গঠন না হলে আবারও আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১০ মে রুয়ার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জন করেন জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। বুধবার ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে রুয়া নির্বাচন কমিশনের প্রধান কমিশনার পদত্যাগ করেন। সেই সঙ্গে বুধবার গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদের বাসভবনে ককটেল হামলার ঘটনা ঘটে।
এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে রুয়া নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে বিক্ষোভকারীদের একটি প্রতিনিধিদল উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনার জন্য বাসভবনের ভেতরে প্রবেশ করে। পরে সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ প্রশাসনের কর্তা-ব্যক্তিরা বাইরে এসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, ‘আমি ওয়াদা ভঙ্গকারী নই। যে কথা আমি রাখতে পারব না, সেই কথা বলব না। বিধিমালার বাইরে আমি কোনো কাজ করব না। আগামীকালের (শুক্রবার) মধ্যে অ্যাডহক কমিটি গঠন ও নির্বাচন কমিটির কাজ শুরু করব। আমি এমন কোনো অ্যাডহক কমিটি করব না, যার জন্য আমাকে আবার ধাক্কা খেতে হয়। এমন অ্যাডহক কমিটি ও নির্বাচন কমিশন গঠন করব, যেন নৈতিকতা ও মেরুদণ্ড নিয়ে প্রশ্ন না ওঠে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান বলেন, ‘উপাচার্যের আশ্বাসে আমরা আজকে আন্দোলন স্থগিত করছি। কালকের মধ্যে অ্যাডহক কমিটি না হলে আমরা আবার একই স্থানে এসে আন্দোলন করব। আমাদের সবাইকে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপ চ র য র
এছাড়াও পড়ুন:
জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সম্পূরক বৃত্তিসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের আশ্বাসে ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
বুধবার রাত দশটার দিকে প্রশাসনের পক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের ফলের রস খাইয়ে অনশন ভাঙানো হয়। শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ করান করান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ও সিন্ডিকেট সদস্য বিলাল হোসাইন।
এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াসউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই মোতাবেক নির্বাচনের রূপরেখাও ঘোষণা করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগামী জানুয়ারি থেকে আবাসন ভাতা পাবেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে বৃত্তির জন্য উপযুক্ত শিক্ষার্থীদের নভেম্বরের মধ্যে যাচাই-বাছাই করার কাজ শেষ করা হবে।
অনশনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২৭ নভেম্বরের আগেই কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপন করা হবে। ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মানোন্নয়নে প্রশাসন কাজ করবে।
আরও পড়ুনতিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৪ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ১২ ঘণ্টা আগেএ সময় অনশনে বসা উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আবাসন ভাতার জন্য প্রতিশ্রুত সময়ও দিয়েছে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা অনশন ভেঙে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি।
সতর্ক করে দিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যদি প্রশাসন ঘোষিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সমস্ত দায় মাথায় নিয়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনকে পদত্যাগ করতে হবে।
এর আগে তিন দফা দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন চারজন শিক্ষার্থী। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়। অনশনে বসা চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন বাগছাসের নেতা।
আরও পড়ুনজকসু নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা, ভোট ২৭ নভেম্বর২ ঘণ্টা আগে