চিলি ও আর্জেন্টিনার দক্ষিণ উপকূলে ৭ দশমিক ৪ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে চিলির সরকারি কর্তৃপক্ষ সুনামি সতর্কতা জারি করেছে এবং উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

চিলির জাতীয় দুর্যোগ প্রতিরোধ ও উদ্ধারবিষয়ক সংস্থা আজ শুক্রবার দেশটির সর্ব দক্ষিণের ম্যাগালেনাস অঞ্চল ও দেশটির অ্যান্টার্কটিক অঞ্চলের ভূখণ্ডে সুনামি ঝুঁকির কারণে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করেছে।

সংস্থাটি নিজেদের ওয়েবসাইটে বলেছে, পুয়ের্তো উইলিয়ামস শহরসহ কয়েকটি এলাকার কয়েক শ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তারা আরও জানিয়েছে, জনগণের ওপর ভূমিকম্পের প্রভাব এবং অবকাঠামো ও মৌলিক সেবায় এর ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে কাজ করে যাচ্ছে সংস্থাটি।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানায়, ভূমিকম্পটি কেপ হর্ন ও অ্যান্টার্কটিকার মধ্যবর্তী ড্রেক প্যাসেজে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে আঘাত হানে।

ম্যাগালেনাস চিলির সবচেয়ে বড় ও সর্বদক্ষিণের এলাকা। এটি দেশটির অন্যতম কম জনবসতিপূর্ণ অঞ্চলও। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ২০১৭ সালে এ অঞ্চলের জনসংখ্যা ছিল প্রায় ১ লাখ ৬৬ হাজার জন।

চিলির প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েল বোরিচ বলেছেন, ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় দেশের সক্ষমতার সবটুকু ব্যবহার করা হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বার্তায় তিনি লেখেন, ‘আমরা ম্যাগালেনাস অঞ্চলের পুরো উপকূল থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। এই মুহূর্তে আমাদের দায়িত্ব হলো প্রস্তুত থাকা এবং কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মেনে চলা।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, সাইরেনের শব্দ শুনে লোকজন শান্তভাবে এলাকা ত্যাগ করছেন।

চিলির হাইড্রোগ্রাফিক ও ওশানোগ্রাফিক সার্ভিসের ধারণা, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সুনামির ঢেউ অ্যান্টার্কটিকার বিভিন্ন স্থাপনা ও চিলির দক্ষিণাঞ্চলের শহরগুলোতে পৌঁছে যাবে।

অন্যদিকে বিশ্বের সর্ব দক্ষিণের শহর হিসেবে বিবেচিত আর্জেন্টিনার উশুয়াইয়া শহরের বিগল চ্যানেলে অন্তত তিন ঘণ্টার জন্য সব ধরনের জলযান চলাচল ও পানিতে নামার কাজ বন্ধ করে রেখেছে কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মূলত উশুয়াইয়া শহরে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে এবং প্রদেশের অন্যান্য এলাকায় কিছুটা কম মাত্রায় অনুভূত হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ভ ম কম প

এছাড়াও পড়ুন:

আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য

এশিয়া কাপে আজকের রাত যেন এক নাটকীয় অধ্যায়। ‘বি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে আবুধাবির মাঠে মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হওয়া এই লড়াই কেবল দুই দলের নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের ভাগ্যও। কোটি টাইগার সমর্থক তাই আজ তাকিয়ে থাকবে টিভি পর্দায়। কারণ, এই ম্যাচেই নির্ধারিত হবে, বাংলাদেশ কি সুপার ফোরে উড়াল দেবে, নাকি গ্রুপ পর্বেই শেষ হবে স্বপ্নযাত্রা।

গ্রুপের সমীকরণ এখন টানটান নাটকের মতো। তিন ম্যাচে পূর্ণ ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে শ্রীলঙ্কা। সমান ৪ পয়েন্ট থাকলেও রান রেটে পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের ঝুলিতে আছে ২ পয়েন্ট; এক জয় ও এক হারের ফল। হংকং অবশ্য তিন ম্যাচেই হেরে অনেক আগেই বিদায় নিয়েছে।

আরো পড়ুন:

আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

আরব আমিরাতকে ১৪৭ রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান

এখন হিসাবটা এমন—
আফগানিস্তান হেরে গেলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই সুপার ফোরে।
আফগানিস্তান জিতলে সমীকরণ জটিল হবে। তখন শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের পয়েন্ট সমান ৪ হলেও নেট রান রেটে স্পষ্ট এগিয়ে থাকবে আফগানরা (২.১৫০)। শ্রীলঙ্কার রান রেট ১.৫৪৬, আর বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে -০.২৭০-তে।

অর্থাৎ আফগানিস্তান যদি জেতে, তবে বাংলাদেশকে তাকিয়ে থাকতে হবে এক অসম্ভব সমীকরণের দিকে। সেটা হলো- লঙ্কানদের অন্তত ৭০ রানের ব্যবধানে হারতে হবে এবং তা করতে হবে ৫০ বল হাতে রেখে। অন্যথায় রান রেটের খেলায় পিছিয়েই থাকতে হবে টাইগারদের। তবে বৃষ্টি যদি হানা দেয় কিংবা ম্যাচ কোনো কারণে পরিত্যক্ত হয়, তাহলে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা দু’দলই নিশ্চিতভাবেই চলে যাবে সুপার ফোরে।

ম্যাচকে ঘিরে দুই শিবিরেই চাপ-উত্তেজনার আবহ। আফগানিস্তানের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার গুলবাদিন নাইব মনে করেন, চাপটা আসলে শ্রীলঙ্কার ওপরই বেশি, “আমরা এসব টুর্নামেন্ট খেলতে অভ্যস্ত, আমাদের কোনো চাপ নেই। শ্রীলঙ্কা ভালো দল ঠিকই, তবে তারাও চাপে থাকবে। আমার মনে হয় দারুণ একটা ম্যাচ হবে।”

অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার অলরাউন্ডার দাসুন শানাকা বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “প্রতিটি ম্যাচই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। হ্যাঁ, বাংলাদেশের সমর্থকরা আমাদের জয়ের জন্য অপেক্ষা করছে। আমরাও জয়ের লক্ষ্যেই মাঠে নামব।”

হংকংয়ের বিপক্ষে জিতলেও শ্রীলঙ্কাকে ঘাম ঝরাতে হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা বলছে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়টা সহজ হবে না তাদের জন্যও। শেষ পর্যন্ত কারা হাসবে জয়ের হাসিতে, আর কোন সমীকরণে দাঁড়াবে বাংলাদেশের ভাগ্য; এই প্রশ্নের উত্তরই দেবে আজকের আবুধাবির রাত।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ