খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা ও পানছড়ির কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে ৬৬ ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছেন। বুধবার (৭ মে) ভোরে তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ কাঁটাতারের বেড়া পার করে দেয় তাদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার ভোরে মাটিরাঙ্গা উপজেলার গুমতি ইউনিয়নের দক্ষিণ শান্তিপুর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন তিনটি পরিবারের আনুমানিক ২৭ জন ভারতীয় নাগরিক। তাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। সীমান্ত অতিক্রম করার পর তারা জনৈক আবু তাহেরের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন।
আবু তাহের ভারতীয়দের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, “তাদের ভারতের গুজরাট থেকে ত্রিপুরায় নিয়ে আসে বিএসএফ সদস্যরা। পরে সেখান থেকে গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে কাঁটাতারের বেড়া পার করে ছেড়ে দিয়ে যায় বিএসএফ। ভোরে আজানের শব্দ শুনে ভারতীয় নাগরিকরা আমার বাড়িতে আশ্রয় নেন। সকালে তারা সাবেক ইউপি সদস্যের বাড়িতে যান।”
আরো পড়ুন:
আমি যুদ্ধের সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে: কবীর সুমন
ভারত আগুন জ্বালানোর চেষ্টা করেছে: পাকিস্তান
আবু তাহের বলেন, “বর্তমানে ভারতীয় নাগরিকরা গুমতি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আবুল হোসেনের বাড়িতে আছেন।”
এর আগে, মঙ্গলবার রাতে মাটিরাঙ্গা উপজেলার তাইন্দং সীমান্ত দিয়ে আরো ১৫ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেন। তারা বিজিবির জিম্মায় আছেন। পানছড়িতে ২৪ জন অনুপ্রবেশ করেন।
খাগড়াছড়ির দায়িত্ব প্রাপ্ত জেলা প্রশাসক নাজমুন আরা সুলতানা বলেন, মাটিরাঙ্গা, পানছড়ি ও তাইন্দং সীমান্ত দিয়ে ৬৬ জন অনুপ্রবেশ করেছেন। তারা বিজিবির দায়িত্বে আছেন। সমস্যরা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তাদের দেখভাল করবে প্রশাসন।”
ঢাকা/রূপায়ন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নওগাঁর দুই সীমান্ত দিয়ে আরও ১৮ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
নওগাঁর ধামইরহাট ও সাপাহার সীমান্ত দিয়ে নারী, শিশুসহ ১৮ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। পরে তাঁদের আটক করে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে বিজিবি।
বিজিবি, পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, ধামইরহাট উপজেলার কালুপাড়া সীমান্ত এলাকা দিয়ে গতকাল রাতের কোনো এক সময় ১৪ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ। পরে রাত ৩টার দিকে ২৭১/১ এস সীমান্ত পিলারের কাছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কালুপাড়া এলাকা থেকে তাঁদের আটক করে বিজিবি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁদের ধামইরহাট থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আটক ১৪ জনের মধ্যে ৯ জন নারী ও পাঁচজন পুরুষ। তাঁদের বাড়ি খুলনা, নড়াইল ও যশোরের বিভিন্ন এলাকায় বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে।
নওগাঁর পত্নীতলা ১৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে ধামইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাম জাফর জানান, বিজিবির হস্তান্তর করা ওই ১৪ জনকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা নিজেদের বাংলাদেশি বলে দাবি করেছেন। তাঁদের দাবি করা পরিচয় যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে তাঁদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এদিকে গতকাল রাতের কোনো এক সময় সাপাহার উপজেলার বামনপাড়া এলাকা দিয়ে চারজনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ। রাত সাড়ে ৩টার দিকে সীমান্তের ২৪৬/২ এস পিলারের কাছে বাংলাদেশের অভ্যন্তর থেকে ওই চারজনকে আটক করে বিজিবি। পরে তাঁদের সাপাহার থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
সাপাহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আজিজ বলেন, বিজিবির হস্তান্তর করা ওই চারজনের মধ্যে দুজন পুরুষ ও দুজন নারী। তাঁরা একই পরিবারের সদস্য। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁদের বাড়ি নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলায়। তাঁদের দাবি করা পরিচয় যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
এর আগে গত ৩১ জুলাই নওগাঁর ধামইরহাট সীমান্তের আগ্রাদ্বিগুণ এলাকা দিয়ে ১০ জনকে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ।