ঘুমন্ত ব্যবসায়ীকে আটকে দোকানে অগ্নিসংযোগ
Published: 7th, May 2025 GMT
ঝালকাঠির রাজাপুরে ঘুমন্ত এক ব্যবসায়ীকে ভেতরে আটকে দোকানে আগুন দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার রাতে উপজেলার পূর্ব বদনীকাঠি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আগুনের বিষয়টি টের পেয়ে অন্য দরজা ভেঙে বের হন ভুক্তভোগী মুর্তুজ আলী খলিফা। তাঁর ভাষ্য, অগ্নিসংযোগের কারণে অন্তত আড়াই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। পূর্বশত্রুতার জেরে তাকে হত্যার উদ্দেশে প্রতিপক্ষ এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে তার ছেলে কবির খলিফা অভিযোগ করেছেন।
মুর্তুজ আলী খলিফার ভাষ্য, প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার রাতেও নিজ মুদি দোকানে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত দুইটার দিকে দুর্বৃত্তরা দোকানের দরজা বাইরে বেঁধে আগুন ধরিয়ে দেয়। মশারি পুড়ে তার লুঙ্গিতে আগুন ধরে গেলে তিনি বিষয়টি টের পান। প্রাণ বাঁচাতে লুঙ্গি খুলে পূর্ব পাশের ঝাঁপ (দরজা) ভেঙে বের হন। তার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। তবে ততক্ষণে দোকানে থাকা টাকা, ফ্রিজসহ সব মালপত্র পুড়ে যায়। এতে তার আড়াই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এই ব্যবসায়ীর ছেলে কবির খলিফা বলেন, ‘রাত দুইটার দিকে হঠাৎ বাবার চিৎকার শুনে দৌড়ে এসে আগুন নেভাতে চেষ্টা করি। সৌভাগ্যবশত তিনি (বাবা) বেঁচে গেছেন। তাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই পরিকল্পিতভাবে আগুন দিয়েছে প্রতিপক্ষ।’
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আজ বুধবার সকালে রাজাপুর থানার একটি দলও সেখানে পরিদর্শনে যায়।
রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত করবেন। দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঝ লক ঠ
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ শিক্ষক ও ১৯ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত আরও ২০ জনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন শিক্ষক এবং ১৯ জন কর্মকর্তা। কর্মকর্তাদের মধ্যে উপ-রেজিস্ট্রার, সহকারী রেজিস্ট্রার, উপপরিচালক, সহকারী পরিচালকসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক পর্যায়ের কর্মকর্তা রয়েছেন।
শনিবার রাতে রাজধানীর ধানমন্ডিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী তাদের সিন্ডিকেটের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র বলছে, যেসব কর্মকর্তা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রশাসনিক পদে থেকে রাজনৈতিক আনুগত্য দেখিয়েছেন কিংবা সরাসরি দলীয় কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
রাজনৈতিক প্রভাবে নানা সুবিধাভোগী এসব কর্মকর্তার চাকরির বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ায় তাদের বাধ্যতামূলক অবসরে আইনগত কোনো বাধা নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় যেন আর কোনো রাজনৈতিক প্রভাবের জায়গা না হয়, সে জন্য কঠোর সিদ্ধান্তের পথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সিন্ডিকেট যাদের অবসর প্রদান করেছে, তারা হলেন অধ্যাপক (ইতিহাস) ড. আবু মো. ইকবাল রুমী শাহ্; উপ-রেজিস্ট্রার মো. হারুন অর রশিদ, সরকার মোহাম্মদ এরশাদ, মাহাবুবা খানম, নাদিরা বেগম, মো. মামুনুর রশিদ, সুব্রত সাহা, মনজু সরকার, মো. শাহাজামাল, মো. ওয়াজিয়ার রহমান ও মো. রাফিজ আলী খান; উপপরিচালক মো. আব্দুর রাকিব, মো. সুলতান উদ্দিন, মো. আসাদুজ্জামান খান ও সাকিল আহম্মেদ; সহকারী রেজিস্ট্রার মো. আব্দুর রাকিব, আফরোজ আহমেদ বর্ণা ও মাহফুজা খাতুন; সহকারী পরিচালক এ কে এম সেলিম রেজা এবং সেকশন অফিসার মানিক চক্রবর্তী।
সিন্ডিকেট সভায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক, অধ্যাপক ড. এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান, ড. মো. নূরুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ ড. এ টি এম জাফরুল আযম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. আমিনুল ইসলাম তালুকদার, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন, রেজিস্ট্রারসহ সিন্ডিকেটের অন্যান্য সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট দুই দফায় ২৯ জন কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায়। সর্বশেষ ২২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় ৯ জন কর্মকর্তাকে ২৫ বছর চাকরির মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় অবসরে পাঠানো হয়। তারও আগে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর ২৬৫তম সিন্ডিকেট সভায় ২০ জন শিক্ষক-কর্মকর্তাকে একই বিধি অনুযায়ী বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়।