ছোট পর্দার অভিনেতা শামীম হাসান সরকার। গতকাল তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের হুমকি, গায়ে হাত তোলা ও মাদক সেবনের অভিযোগ করেছেন অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা। তার বিরুদ্ধে অভিযোগসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিনি কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে।

অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা আপনার বিরুদ্ধে ধর্ষণের হুমকিসহ আরও কয়েকটি অভিযোগ তুলেছেন?
দেখুন, বিষয়টি নিয়ে আমি গতকালই কিছু কথা বলেছে। তিনি যে বিষয়টি নিয়ে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন তার সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। তার বক্তব্য শুনেই সবাই বুঝতে পাবে।

ঘটনার সূত্রপাতটা আসলে কোথায়?
এখানে সূত্রপাত বলতে কিছু নেই। আমার তিনি আগেও অভিনয় করেছেন। নতুন একটি নাটকে তিনি আমার সঙ্গে কাজ করছেন। এই নাটকে শুটিংয়ের দুদিন আগেও ছিল। তিনি সেটে এসে শুধু রিলস ও টিকটক নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। শেষ দিন হয়ত তিনি সেটা নিতে পারেন নি।

ধর্ষণের হুমকি, গায়ে হাত তোলা ও মাদক সেবনের বিষয়টা পরিষ্কার করবেন.

..
আমি তাকে কখনোই ধর্ষণের হুমকি দেইনি। তবে বকাবকি করেছি। কারণ, শুটিংয়ের সময় তিনি রিলস ও টিকটক নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। এতে করে আমাদের সবার অসুবিধা হচ্ছিল। তাই অনেকটা রাগ করেই কিছু ভাষা ব্যবহার করেছি বলেছি, যদি রিলস বানাতেই হয় তাহলে বাইরে গিয়ে কারো, শুটিং সেটে এসব চলবে না।এছাড়া মাদক সেবনের অভিযোগ আরও গুরুতর। আমাদের শুটিং হাউজের সব জায়গায় সিসি ক্যামেরা আছে। সেটা দেখলেই সবাই বুঝতে পারবে। আর আমার অভিনয় জীবনের ১০ বছর চলছে। প্রিয়াঙ্কা তো দূরের কথা এ জীবনে আমি কারও ওপর হাত তুলিনি। যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে আমি মিডিয়া ছেড়ে দেব।

এই ধরনের অভিযোগ উঠলে সাধারণত পরিবার থেকে একটা চাপ আসে...
প্রশ্নই আসে না। কারণ, আমার পরিবার তো জানে আমি কেমন। আমার পরিবার শিক্ষিত। তারা বোঝে। আমি অন্য বিষয়ে দুষ্টুমি করতে পারি কিন্তু মেয়েলি বিষয় আমার কোনো রিপোর্ট নেই। এছাড়া মাস দেড়েক আগে আমি বিয়ে করেছি। আমার স্ত্রী জেনেশুনেই আমাকে বিয়ে করেছে। পরিবার থেকে কোনো চাপ নেই। তারা আমার সঙ্গেই আছেন।

অভিযোগটা গুরুতর। এ বিষয়ে শিল্পী-সংগঠনগুলোর সঙ্গে আপনার কথা হয়েছে?
ব্যক্তিগতভাবে কয়েক জনের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। কিন্তু সাংগঠনিকভাবে হয়নি। এখনে যদি ভুল বোঝাবোঝির বিষয় থাকতে তাহলে সংগঠনের সঙ্গে আলোচনার বিষয় থাকতো। কিন্তু মেয়েটা তো সেটা চায়নি। সরাসরি টিভিতে গিয়ে অভিযোগ করেছে।

 অভিযোগ যদি মিথ্যা হয় তাহলে কি কোনো ব্যবস্থা নেবেন?
আমি জানি না তার মটিভটা কি। তবে ভিডিও দেখে বেশিরভাগ মানুষ বলছে তিনি কারও প্ররোচিত হয়ে এগুলো করেছে। যেহেতু তিনি আমার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। আমারও তো পরিবার আছে। মানসম্মান আছে। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে আমি অবশ্যই আইনি ব্যাবস্থা নেবো।

এবার কাজে আসি। ঈদের কাজে কেমন সাড়া পেলেন?
সত্যি কথা বলতে, দুই-চারটা বাদে ঈদের নাটকে সবাই সাড়া কম পেয়েছে। কারণ, অনেকদিন পর ঈদে ভালো সিনেমা এসেছে। তার মধ্যেও যেকয়টা নাটক গেয়ে সবগুলোই মোটামোটি ভালো গেছে।

ইদানীং পারিবারিক গল্পে আপনাকে কম দেখা যায়...
এটা সবচেয়ে ভালো বলতে পারবে পরিচালক-প্রযোজকরা। কারণ, তারাই তো শিল্পী বাছাই করে, আর অর্থ লগ্নি করে। এখানে আমার কিছু করার নেই। তবে আমার আগ্রহ আছে সব ধরণের গল্পে অভিনয় করার। ব্যাটে বলে মিলে গেলে অবশ্যই করবো।

ঈদুল আজহার প্ল্যান?
সামনে ঈদের জন্য প্রায় ৬/৭টি নাটকে কাজ করবো। এরই মধ্যে কাজ তিনটির কাজ শেষ করেছি। আর কয়েকটা কাজ হাতে আছে সেগুলো টানা করে ফেলবো।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ ম ম হ স ন সরক র অভ য গ পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

‘তুমি কি আমাকে ভালোবাসো’—সিডনির মঞ্চে হিমু-রূপার নস্টালজিয়া

রোববারের সিডনির ম্যাকুয়ারি লিংকস গলফ ক্লাব হলজুড়ে ছিল হুমায়ূন আহমেদের গল্প-উপন্যাসের পরিচিত নস্টালজিয়ার আবহ। ‘পড়ুয়ার আসর’ আয়োজিত স্মরণানুষ্ঠান ‘প্রিয় পদরেখা’ ছিল কেবল আলোচনা নয়, এ ছিল হুমায়ূনের সৃষ্টিকে অনুভব করার, তাঁর চরিত্রদের সঙ্গে আবার দেখা হওয়ার এক আবেগঘন আয়োজন। গদ্য, পদ্য, গান ও নাট্য-আলাপ মিলেমিশে মনে রাখার মতো এক আসর।

অপূর্ব এক দৃশ্যের দেখা মিলল। তরুণ শিল্পী রূপন্তি আকিদ—সিডনির বাঙালি কমিউনিটির তরুণ অভিনেত্রী। নানা সাংস্কৃতিক আয়োজনে নিয়মিত অংশগ্রহণ তাঁকে তরুণ প্রবাসী শিল্পীদের মধ্যে বিশেষভাবে পরিচিত করেছে। সেদিন তাঁর পরনে ছিল হিমুর স্বাক্ষররং নীল শাড়ি, হাতে হুমায়ূন আহমেদের ‘হিমুর আছে জল’ উপন্যাস।

রূপন্তির পাশে ছিলেন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা মাজনুন মিজান—গায়ে উজ্জ্বল হলুদ পাঞ্জাবি, হাতে ফুল। বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গন ও টেলিভিশনে দুই যুগের বেশি সময় ধরে অভিনয় করা মিজান বিশেষ করে হুমায়ূন আহমেদের নাটক, টেলিফিল্ম ও সিনেমায় কাজ করে দর্শকের মনে আলাদা জায়গা করে নিয়েছেন। বর্তমানে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় থাকলেও প্রবাসে নিয়মিত সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত আছেন এবং সিডনির শিল্পমহলে তিনি পরিচিত ও সম্মানিত মুখ।

এই নাট্য-আলাপে হিমু ও রূপার ভূমিকায় অভিনয় করেন রূপন্তি ও মিজান। তাঁদের সংলাপ, দৃষ্টিভঙ্গি আর অভিনয়ের কোমল আবেগ যেন মঞ্চে সত্যিই ফিরিয়ে আনল হিমুর হাঁটাচলার সেই নরম আলো, রূপার শান্ত উপস্থিতি আর দুজনের অদ্ভুত অনুভবের জটিল সুন্দর সম্পর্ক।

নাট্য-আলাপ শুরু হতেই মঞ্চ যেন গল্পের পাতায় পরিণত হলো। যখন তাঁদের কণ্ঠে উচ্চারিত হলো—

‘তুমি কি আমাকে ভালোবাসো?’

‘না, ভালোবাসি না...কারণ, ভালোবাসলে তো প্রাপ্তির বাসনা থাকে। আমি তোমাকে অনুভব করি।’

তখন হলজুড়ে ছড়িয়ে পড়ল নিস্তব্ধতার গভীর ঢেউ। দর্শকের চোখে ভেসে উঠল হিমু-রূপার নরম, শীতল, হৃদয়ছোঁয়া মুহূর্তগুলো।

পরিবেশ আরও আবেগময় হয়ে ওঠে পরিচিত সুরে—‘নেশা লাগিল রে, বাঁকা দুই নয়নে নেশা লাগিল রে...’

গানের সুর মিশে গিয়েছিল সিডনির প্রবাসী আবেগে—হিমুর হলুদ, নীল আর স্নিগ্ধ প্রেমের গন্ধে। ‘পড়ুয়ার আসর’-এর অন্যতম সদস্য রোকেয়া আহমেদ বলেন, ‘তাঁর হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন উপলক্ষে সিডনিতে এই আয়োজন। আমরা চাই তাঁর সৃষ্টির আলো নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে যাক। প্রবাসে থেকেও তাঁকে নতুন করে উপলব্ধি করার একটি জায়গা তৈরি করাই আমাদের লক্ষ্য।’

আরও পড়ুনগানের সুরে, মেজবানের ঘ্রাণে—সিডনি যেন এক দিনের চট্টগ্রাম১০ নভেম্বর ২০২৫

একজন মুগ্ধ দর্শক অনুষ্ঠান শেষে মন্তব্য করেন, ‘মনে হচ্ছিল যেন গল্পের চরিত্ররা সত্যি সত্যি সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছে। আলোচনার প্রতিটি কথাই হৃদয় ছুঁয়ে গেল।’

রোববারের সিডনির ম্যাকুয়ারি লিংকস গলফ ক্লাব হলজুড়ে ছিল হুমায়ূন আহমেদের গল্প-উপন্যাসের পরিচিত নস্টালজিয়ার আবহ

সম্পর্কিত নিবন্ধ