নেত্রকোনায় অ্যাম্বুলেন্স থামিয়ে এক গৃহবধূকে শ্লীলতাহানির অভিযোগের পর পূর্বধলা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সালমান রহমানকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এনে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে নেত্রকোনা জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক অনিক মাহবুব চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, সালমান রহমানের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলাপরিপন্থী কাজের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকায় কেন্দ্রীয় কমিটি তাঁকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করেছে। একই সঙ্গে দলের নেতা-কর্মীদের তাঁর সঙ্গে কোনো রকম সম্পর্ক না রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই গৃহবধূর (২১) বাবার বাড়ি পূর্বধলার জারিয়া ইউনিয়নে। তিনি স্বামীসহ রাজধানী ঢাকায় থাকেন। কয়েক দিন আগে তিনি বাবার বাড়ি গিয়েছিলেন। তাঁর চাচা রাজধানীতে অ্যাম্বুলেন্স চালান। গত মঙ্গলবার বিকেলে তাঁর চাচা সেখান থেকে রোগী নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে নেত্রকোনায় আসেন। পরে রোগীকে নির্দিষ্ট স্থানে রেখে তিনি গ্রামের বাড়ি থেকে রাতে ওই নারীকে অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে রাজধানীতে ফিরছিলেন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সটি উপজেলার বিরিশিরি-শ্যামগঞ্জ সড়কের কুমুদগঞ্জ মোড় এলাকায় পৌঁছালে সালমান রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন যুবক তাঁদের থামান। এ সময় তাঁর নির্দেশে অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামিয়ে ওই নারীকে নামিয়ে শ্লীলতাহানি করেন অন্য যুবকেরা। এ সময় বাধা দিলে ওই নারী ও তাঁর চাচাকে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ওই নারীকে উদ্ধার করা হয়।

ওই নারীর চাচা বলেন, ‘ছাত্রদলের আহ্বায়ক সালমান রহমানসহ অন্য যুবকেরা আমার ভাতিজিকে গাড়ি থেকে নামিয়ে শ্লীলতাহানি করেন। পরে আমি ফোন করে বিষয়টি পুলিশকে জানাই। প্রায় দুই ঘণ্টা পর পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবার উপযুক্ত বিচার দাবি করছি।’

এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুরুল আলম।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র ওই ন র

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেট সীমান্তে জরিপ নিয়ে উত্তেজনা

সিলেটের গোয়াইনঘাটে সীমান্ত পিলার সংলগ্ন খেলার মাঠ জরিপ করতে এসে বাংলাদেশিদের বাধার মুখে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছেন ভারতীয় জরিপকারী দল ও বিএসএফ সদস্যরা।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) দুপুরে উপজেলার নলজুরি খাসি হাওর ১২৭৮-৭৯ পিলার এলাকায় ছিটমহল বিনিময় চুক্তির আওতাধীন খেলার মাঠে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিজিবির হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

বিজিবি সূত্র জানায়, ২০১৫ সালে ছিটমহল বিনিময় চুক্তির অংশ হিসেবে সীমান্তের বিরোধপূর্ণ এলাকা ও ছিটমহল বিনিময় হয়। তবে, কিছু ভূখণ্ডে এখনো পিলার স্থাপন করে দখল বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। জৈন্তাপুরের নলজুরি এলাকার ওই অংশ এ রকমই একটি ভূখণ্ড। যে খেলার মাঠে আজ জরিপকারী দল জায়গা পরিমাপ করতে গিয়েছিল, এটি বাংলাদেশের দখলে রয়েছে।

চুক্তি অনুযায়ী, এ স্থানের কিছু অংশ ভারতের অভ্যন্তরে যাওয়ার কথা। মূলত জরিপের অংশ হিসেবেই বাংলাদেশ ও ভারতের জরিপকারী একটি দল জায়গা পরিমাপ করতে সেখানে যায়। বিজিবি ও বিএসএফের সদস্যরা নিরাপত্তা দিতে গিয়েছিলেন।

বিজিবি ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশের দখলে থাকা জায়গা ভারত নিয়ে নিচ্ছে—এমন আশঙ্কায় গ্রামবাসী লাঠিসোঁটা দিয়ে জরিপ দলের সদস্যদের বাধা দেন। গ্রামবাসী এ সময় বিএসএফ সদস্যদের নিজেদের সীমানায় চলে যাওয়ার দাবি জানাতে থাকেন। এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায়। তবে, বিজিবি জরিপের বিষয়টি বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছে। আপাতত জরিপকাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।

৪৮ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. নাজমুল হক বলেন, ‘‘জরিপকাজের বিষয়টি গ্রামবাসী জানতেন না। তাই ভুল–বোঝাবুঝি থেকে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে।’’

এ বিষয়ে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রতন কুমার অধিকারী বলেন, ‘‘যতটা জেনেছি, সীমান্তে যৌথ সমীক্ষা চলছিল। তবে, কে বা কারা সমীক্ষা চালিয়েছেন তা জানি না। এই বিষয়ে আমাদের কেউ কিছু জানায়নি।’’

ঢাকা/নূর/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ