নেত্রকোনায় গৃহবধূকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে ছাত্রদল নেতাকে বহিষ্কার
Published: 8th, May 2025 GMT
নেত্রকোনায় অ্যাম্বুলেন্স থামিয়ে এক গৃহবধূকে শ্লীলতাহানির অভিযোগের পর পূর্বধলা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সালমান রহমানকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এনে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে নেত্রকোনা জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক অনিক মাহবুব চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, সালমান রহমানের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলাপরিপন্থী কাজের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকায় কেন্দ্রীয় কমিটি তাঁকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করেছে। একই সঙ্গে দলের নেতা-কর্মীদের তাঁর সঙ্গে কোনো রকম সম্পর্ক না রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই গৃহবধূর (২১) বাবার বাড়ি পূর্বধলার জারিয়া ইউনিয়নে। তিনি স্বামীসহ রাজধানী ঢাকায় থাকেন। কয়েক দিন আগে তিনি বাবার বাড়ি গিয়েছিলেন। তাঁর চাচা রাজধানীতে অ্যাম্বুলেন্স চালান। গত মঙ্গলবার বিকেলে তাঁর চাচা সেখান থেকে রোগী নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে নেত্রকোনায় আসেন। পরে রোগীকে নির্দিষ্ট স্থানে রেখে তিনি গ্রামের বাড়ি থেকে রাতে ওই নারীকে অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে রাজধানীতে ফিরছিলেন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সটি উপজেলার বিরিশিরি-শ্যামগঞ্জ সড়কের কুমুদগঞ্জ মোড় এলাকায় পৌঁছালে সালমান রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন যুবক তাঁদের থামান। এ সময় তাঁর নির্দেশে অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামিয়ে ওই নারীকে নামিয়ে শ্লীলতাহানি করেন অন্য যুবকেরা। এ সময় বাধা দিলে ওই নারী ও তাঁর চাচাকে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ওই নারীকে উদ্ধার করা হয়।
ওই নারীর চাচা বলেন, ‘ছাত্রদলের আহ্বায়ক সালমান রহমানসহ অন্য যুবকেরা আমার ভাতিজিকে গাড়ি থেকে নামিয়ে শ্লীলতাহানি করেন। পরে আমি ফোন করে বিষয়টি পুলিশকে জানাই। প্রায় দুই ঘণ্টা পর পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবার উপযুক্ত বিচার দাবি করছি।’
এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুরুল আলম।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে পাওনা টাকা নিয়ে তরুণকে অপহরণের পর হত্যা, আরও একজন গ্রেপ্তার
সিলেটের কানাইঘাটে পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে সাইফুল ইসলামকে (২০) অপহরণের পর খুনের ঘটনায় প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানার ঝাউচর মেঘনাঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে গত ৩০ নভেম্বর বিকেলে সাইফুল ইসলামকে অপহরণের পর কানাইঘাটের লক্ষ্মীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের রাতাছড়া গ্রামে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা ছলু মিয়া ২ ডিসেম্বর কানাইঘাট থানায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা দু-একজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। গ্রেপ্তার তরুণের নাম শাকিল আহমদ (২২)। তাঁর বাড়িও রাতাছড়া গ্রামে। ওই ঘটনায় এর আগে শাকিলের বাবাসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, নিহত সাইফুল ও শাকিলের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি দুজনের মধ্যে দুই লাখ টাকা দেনা-পাওনা নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়। ঘটনার দিন শাকিল সাইফুলের বাড়িতে গিয়ে তাঁকে নিয়ে দনা বাজারে যান। সন্ধ্যায় সাইফুলের ভাই সুফিয়ান আহমদ দনা বাজার থেকে বাবাকে ফোন দিয়ে জানান, শাকিল মোটরসাইকেলে করে সাইফুলকে তাঁদের বাড়ির দিকে নিয়ে গেছে। পরে বাড়িতে সাইফুলকে বেঁধে মারধর করা হয় এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে বুকে আঘাত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে বাড়ির পূর্ব পাশের জঙ্গলে হাত-পা বেঁধে ফেলে রেখে যায় হামলাকারীরা।
আরও পড়ুনসিলেটে পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে অপহরণ, পরে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ০১ ডিসেম্বর ২০২৫পরে সাইফুলকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর অভিযুক্ত শাকিলের বাবা এবং আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এবার প্রধান অভিযুক্ত শাকিলকে গ্রেপ্তার করা হলো।
র্যাব-৯-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) কে এম শহিদুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া শাকিলকে সিলেটের কানাইঘাট থানায় হস্তান্তরের পর আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।