শ্রীনগর বাজারে ভয়াবহ আগুন, ৭৯টি দোকানে ক্ষয়ক্ষতি
Published: 16th, May 2025 GMT
মুন্সিগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শ্রীনগর বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে বাজারের কাপড়পট্টি, বানিয়াপট্টি ও মুরগিপট্টি নামে পরিচিত তিনটি গলিতে। আগুনে বাজারের ৭৯টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। শ্রীনগর, সদর, লৌহজং, সিরাজদিখান ও টঙ্গিবাড়ী ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি ইউনিট এলাকাবাসীর সহযোগিতায় প্রায় তিন ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আজ শুক্রবার ভোর পাঁচটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। সকাল আটটার দিকে আগুন পুরোপুরি নেভানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত দুইটার দিকে শ্রীনগর বাজারের একটি গলিতে আগুন দেখতে পান স্থানীয় লোকজন। মুহূর্তেই আগুন লাগার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এরপর স্থানীয় লোকজন আগুন নেভানোর চেষ্টার করার পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। কিন্তু ওই আগুন অন্য গলিতে ছড়িয়ে যায়। খবর পেয়ে শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভাতে হিমশিম খান। পরে অন্য উপজেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের আরও কয়েকটি ইউনিট যোগ দেয়। ভোর পাঁচটার দিকে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় বাজারের মুদি, মাছ-মুরগি, কাপড়, চায়ের দোকানসহ ৭৯টির মতো দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মকর্তা দেওয়ান আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, রাত দুইটার দিকে আগুন লাগার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা ঘটনাস্থলে যান। আগুনের তীব্রতা বেশি থাকায় পরে মুন্সিগঞ্জ সদর, লৌহজং, সিরাজদিখান ও টঙ্গিবাড়ী থেকে আরও ছয়টি ইউনিট আসে। ভোর সাড়ে চারটায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। সকাল আটটার দিকে আগুন পুরোপুরি নেভানো হয়। আগুনে বাজারের ৭৯টি দোকান পুড়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে ক্ষতির পরিমাণ এখনো হিসাব করা হয়নি।
শ্রীনগর বাজার কমিটির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগুনে বাজারে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমরা সেগুলোর হিসাব-নিকাশ করছি।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ র নগর ব জ র আগ ন ন
এছাড়াও পড়ুন:
সরকার জনগণের ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে টালবাহানা করছে: ফরহাদ মজহার
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে টালবাহানা করছে বলে অভিযোগ করেছেন কবি ও কলামিস্ট ফরহাদ মজহার।
তিনি বলেছেন, “অন্তর্বর্তী সরকারকে বলতে চাই, আপনারা গণঅভ্যুত্থানের সরকার। আপনাদের প্রথম কাজ—জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া। কিন্তু, আপনারা এই ক্ষমতা জনগণকে ফিরিয়ে দিতে এখনো কোনো প্রক্রিয়া শুরু করেননি, টালবাহানা করছেন। বিভিন্ন এলিট কমিশন গঠন করে আমাদের মন ভোলানোর চেষ্টা করছেন। বাংলাদেশের জনগণের এটা বোঝার মতো বুদ্ধি রয়েছে।”
শুক্রবার (১৬ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) স্বৈরাচারমুক্ত করার দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করে ফ্যাসিস্টবিরোধী জুলাই নেটওয়ার্ক।
সমাবেশে ফরহাদ মজহার বলেন, “বিভিন্ন দাবিতে যখন আন্দোলন তৈরি হচ্ছে, তখন আপনারা ছাত্রদের বিরুদ্ধে, তরুণদের বিরুদ্ধে নানা রকম প্রচারণা চালাচ্ছেন। আমরা তা পর্যবেক্ষণ করছি। আপনাদের এজেন্সি ছাত্রদের মধ্যে বিভক্তি তৈরির প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আপনার ভাববেন না, এটা বোঝার মতো কাণ্ডজ্ঞান জনগণের নেই। ছাত্রদের সহিংসতার দিকে ঠেলে দিতে যেসব এজেন্সি কাজ করছে, আমরা তাদের চিনি। তাদের বলব জনতার কাতারে দাঁড়াতে। ছাত্রদের বলব, তথাকথিত মতাদর্শিক তর্ক করে নিজেদের মধ্যে বিরোধ বাড়াবেন না। এটা ফ্যাসিস্টদের কৌশল।”
তিনি বলেন, “আমাদের কাজ হলো—জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আন্দোলন জারি রাখা। এজন্য অবিলম্বে জুলাই ঘোষণার ওপর সবার জোর দিতে হবে। মনে রাখবেন, ফ্যাসিস্ট শক্তি রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিসরে ও ক্ষমতার অন্দরমহলে যেসব প্রাসাদ তৈরি করেছে, তা যদি ৩২ নম্বরের মতো গুঁড়িয়ে দিতে না পারি, তাহলে আগামী দিনে বাংলাদেশের জনগণের কপালে অনেক দুঃখ আছে।”
“অন্তর্বর্তী সরকারের শিথিলতা আমাদের অত্যন্ত উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতায় তাদের শিথিলতা বাংলাদেশকে বিপজ্জনক জায়গায় ঠেলে দিচ্ছে। আমরা ফ্যাসিস্ট শক্তিকে উৎখাত করেছি, কিন্তু তার আরোপিত সংবিধান এখনো বাতিল করতে পারিনি। ঠিক তেমনই টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি খাতকে এখনো ফ্যাসিস্ট শক্তির কাছ থেকে মুক্ত করতে পারিনি।”
ফরহাদ মজহার আরো বলেন, “তথ্য প্রযুক্তি খাতকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে, ইন্টারনেট বন্ধ করে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নজরদারি করে যারা শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রেখেছিল, তারা এখনো বহাল আছে এবং অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ-সংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ করেছে, এটাকে আমরা সমর্থন করি। এখন আপনাদের (সরকার) কাজ হলো ফ্যাসিস্ট শক্তির সহযোগী ইন্টারনেট ও টেলিকম প্রতিষ্ঠানকে নিষিদ্ধ করা, তাদের লাইসেন্স বাতিল করা। এক সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করলে আমরা বিটিআরসির সামনে অবস্থান নেব।”
সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন— লেখক জাহিদ জগৎ, কবি মোহাম্মদ রোমেল, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নাফিউল ইসলাম প্রমুখ।
ঢাকা/এম/রফিক