এই বাজেট ব্যবসা সম্প্রসারণে আস্থা বাড়াবে না: ফরেন চেম্বার
Published: 4th, June 2025 GMT
আগামী অর্থবছরের জন্য ঘোষিত প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যবসা সম্প্রসারণে আস্থা বৃদ্ধি করবে না বলে মন্তব্য করেছেন ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফআইসিসিআই) সভাপতি জাভেদ আখতার। তিনি বলেন, বাজেটে করজাল বৃদ্ধির নির্দেশনা নেই। সরকারে পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটা প্রবৃদ্ধির বাজেট না। এই পরিবেশে কে বিনিয়োগ করতে আসবে বলে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
আজ বুধবার ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফআইসিসিআই) গুলশানের কার্যালয়ে বাজেট পর্যালোচনায় এসব কথা বলেন জাভেদ আখতার। এ সময় সংগঠনের সাবেক সভাপতি নাসের এজাজ বিজয় ও রূপালী হক চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
জাভেদ আখতার বলেন, ‘গত তিন বাজেটে আমাদের ওপর করের চাপ বাড়ছে। এবারও কর ব্যয় বাড়বে। বেশি কর দিতে হবে। এবার বেভারেজ, সিগারেট ও শিশুখাদ্যের দাম বাড়বে। তালিকাভুক্ত কোম্পানির সঙ্গে ব্যবধান বাড়াতে কর বাড়ানো হয়েছে আড়াই শতাংশ।
বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে জাভেদ আখতার বলেন, ‘দুঃখজনকভাবে আমাদের চেয়ে পাকিস্তানের বিদেশি বিনিয়োগ বেশি। দীর্ঘদিন ধরেই এখানে বিদেশি বিনিয়োগ কম। যদিও বিষয়টি বাজেটের ওপর নির্ভর করে না, নির্ভর করে বিশ্বাসযোগ্য পরিবেশ, নীতির ধারাবাহিকতা ও ব্যবসার সহজীকরণের ওপর। এ ছাড়া কাগজপত্র অনুমোদনের সহজীকরণের বিষয় আছে।
ছোট ছোট পরিবর্তনের মাধ্যমে শিল্পকে ঝাঁকুনি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন রূপালী হক চৌধুরী। অথচ যেসব প্রতিষ্ঠান কর না দিয়ে চলছে, তাদের করজালে আনা এনবিআরের প্রধান কাজ হওয়া উচিত ছিল।
নাসের এজাজ বিজয় বলেন, রাজস্ব প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ শতাংশ। এটা করতে গেলে প্রায় ৩৯ শতাংশ রাজস্ব আহরণ বাড়াতে হবে। কিন্তু সেটা কীভাবে হবে, তা বলা হয়নি। করহার বাড়ালে বেশি কর আদায় হয় না, বরং করহার কমলে রাজস্ব আদায় বাড়ে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ভ দ আখত র
এছাড়াও পড়ুন:
বিনিয়োগ পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা ফিকির
২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে কিছু ইতিবাচক দিক থাকলেও কয়েকটি বিষয়ে উদ্বেগ আছে বলে জানিয়েছে ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই)। যে কারণে ব্যবসায়িক সম্প্রসারণে প্রতিকূলতা সৃষ্টি হতে পারে এবং সৎ করদাতাদের ওপর বাড়তি চাপ পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।
গতকাল বাজেট পর্যালোচনা–পরবর্তী পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব আশঙ্কার কথা জানায় এফআইসিসিআই।
এফআইসিসিআই জানায়, প্রস্তাবিত বাজেটে বেশ কিছু বিতর্কিত বিষয় আছে। কিছু পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানির জন্য অতিরিক্ত ৭ দশমিক ৫ শতাংশ কর আরোপের প্রস্তাব উদ্বেগজনক। বর্ধিত হারে এই কর বৈষম্যমূলক হবে। এ ছাড়া ব্যাংকিং মাধ্যমে লেনদেন নিশ্চিত করার জন্য কর হ্রাসের যে সুবিধা ছিল, তা–ও বাদ দেওয়া হয়েছে।
বাণিজ্য সংগঠনটি মনে করছে, করের হার সাড়ে ২৭ শতাংশে উন্নীত করার প্রস্তাব আনুষ্ঠানিক অর্থনীতি গড়ে তোলার জাতীয় প্রচেষ্টার বিপরীত পদক্ষেপ এবং ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ার মতো অর্থনীতির তুলনায় বাংলাদেশকে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে দেবে। তাদের মতে, আরেকটি হতাশাজনক দিক হলো বেতনভোগী করদাতাদের চাপ বৃদ্ধি। প্রাথমিক স্তরে করমুক্ত আয়ের সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে, কিন্তু সামগ্রিক পরিবর্তনের বিবেচনায় প্রবর্তিত পরিবর্তন মধ্যম আয়ের করদাতাদের ওপর অতিরিক্ত করের বোঝা সৃষ্টি করবে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অনলাইন বিক্রয়ের ওপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে; এটি দেশের অনলাইন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগগুলোকে হুমকির মুখে ফেলবে এবং ব্যবসা সম্প্রসারণে বাধা সৃষ্টি করবে।
এ ছাড়া বাজেটের ইতিবাচক দিক হিসেবে এফআইসিসিআই জানায়, নির্দিষ্ট খাতের ওপর চাপ কমানো এবং আরও নির্ভরযোগ্য কর ব্যবস্থা তৈরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া। নির্মাণ কোম্পানি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্যে উৎস কর হ্রাস করা বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ। এ ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ শিল্পগুলো স্বস্তি পাবে। এ ছাড়া যৌথ উদ্যোগ থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশে উৎস কর আরোপ না করা আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ কোম্পানিগুলোর জন্য সুসংবাদ।