ঈদ উৎসবে জমজমাট ওয়ালটন ফ্রিজের বিক্রি
Published: 5th, June 2025 GMT
দুয়ারে ঈদুল আযহা, কোরবানি ঈদ। প্রতিবছরের মতো এবারও ঈদে নতুন ফ্রিজ কিনতে ক্রেতারা ছুটছেন ইলেকট্রনিক্সের শোরুমে। ক্রেতা পছন্দের শীর্ষে রয়েছে দেশের নাম্বার ওয়ান ব্র্যান্ড ওয়ালটন ফ্রিজ। সেরা দামে, সেরা মানের পছন্দের ফ্রিজ কিনতে বেশিরভাগ ক্রেতাই ভিড় করছেন ওয়ালটনের শোরুমে। ব্যাপক ক্রেতা সমাগমে দেশব্যাপী ওয়ালটন শোরুমগুলোতে পড়েছে ফ্রিজ কেনার হিড়িক।
ঈদের আগে শোরুমগুলোতে ফ্রিজ বিক্রির উৎসব চলছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, বাগেরহাট, বগুড়া, সিলেট, ফেনী, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওয়ালটন প্লাজার ম্যানেজার, পরিবেশক ও অঞ্চল প্রধানরা।
এদিকে ঈদ উপলক্ষে ‘দেশজুড়ে তোলপাড়, ওয়ালটন পণ্য কিনে হতে পারেন আবারো মিলিয়নিয়ার’ স্লোগানে সারা দেশে চলছে ডিজিটাল ক্যাম্পেইনের সিজন-২২। এর আওতায় চলতি বছরের ঈদুল আজহা পর্যন্ত দেশের যেকোনো ওয়ালটন প্লাজা ও পরিবেশক শোরুম থেকে ফ্রিজ, এসি, ওয়াশিং মেশিন অথবা বিএলডিসি ফ্যান কিনে ক্রেতারা পাচ্ছেন ১০ লাখ টাকা পাওয়ার সুযোগ। আরো আছে লাখ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচারসহ নিশ্চিত উপহার। ইতোমধ্যে এই সিজনে ওয়ালটন ফ্রিজ কিনে মিলিয়নিয়ার হয়েছেন পাঁচজন ক্রেতা। অসংখ্য ক্রেতা পেয়েছেন লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার।
আরো পড়ুন:
ওয়ালটন ফ্রিজের চিফ বিজনেস অফিসার তাহসিনুল হক বলেছেন, প্রতিবছরের মতো এই ঈদেও ফ্রিজের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য ওয়ালটনের। দেশের বেশিরভাগ ক্রেতাই আস্থা রাখছেন দেশের নাম্বার ওয়ান রেফ্রিজারেটর ব্র্যান্ড ওয়ালটনে। এর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে, ওয়ালটন ফ্রিজে অ্যাডভান্সড আইওটি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই-সমৃদ্ধ বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও ফিচারের ব্যবহার। পাশাপাশি ওয়ালটন ফ্রিজের গ্রাহকরা পাচ্ছেন দেশজুড়ে বিস্তৃত সর্ববৃহৎ সার্ভিস নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দ্রুত বিক্রয়োত্তর সেবার নিশ্চয়তা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বরাবরের মতো এবারও ঈদ উৎসবে পছন্দের ওয়ালটন ফ্রিজ কিনতে শোরুমগুলোতে ক্রেতা ভিড় বেড়েছে ব্যাপক।
ঈদ বাজারে সব শ্রেণি-পেশা ও আয়ের ক্রেতার জন্য ওয়ালটনের রয়েছে বিভিন্ন ডিজাইনের তিন শতাধিক মডেলের রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার। এসব মডেলের সহস্রাধিক কালারের ফ্রিজ রয়েছে; দাম ১৫ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকার মধ্যে।
ওয়ালটন ফ্রিজে এক বছরের রিপ্লেসমেন্টসহ কম্প্রেসরে ১২ বছরের গ্যারান্টি এবং পাঁচ বছরের ফ্রি বিক্রয়োত্তর সেবার সুবিধা পাচ্ছেন ক্রেতারা। গ্রাহকদের দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা পৌঁছে দিতে ওয়ালটনের রয়েছে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ সার্ভিস এক্সপার্টস টিম ও আইএসও সনদপ্রাপ্ত কাস্টমার সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট। এর আওতায় দেশব্যাপী বিস্তৃত ৯০টিরও বেশি সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে গ্রাহকদের সবচেয়ে কম সময়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ের বিক্রয়োত্তর সেবা দেওয়া হচ্ছে। -বিজ্ঞপ্তি।
ঢাকা/সাহেল/রাসেল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬০ দিন পর শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা, উৎসবের আমেজ
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) দীর্ঘ ১৬০ দিন পর একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এসেছেন। সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে বইছে উৎসবের আমেজ।
সকালে কুয়েট ক্যাম্পাসে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস। ছাতা মাথায় দল বেঁধে ছুটছেন ক্লাসরুমের দিকে। কখনো এক ছাতার নিচে দু-তিনজন। কারও সঙ্গে অভিভাবকও এসেছেন। সকাল নয়টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি শিক্ষাবর্ষের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী ক্লাসে যোগ দেন। নতুন উপাচার্য অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে শ্রেণি কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করেন।
ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) বিভাগের ২২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী দীপ্ত বলেন, ‘আমাদের প্রায় এক সেমিস্টার নষ্ট হয়ে গেছে। এই সময়টা খুব অস্বস্তিতে কেটেছে। ক্ষতি যা হওয়ার হয়েছে, তবে এখন আবার ক্লাস শুরু হওয়াটা ইতিবাচক দিক। আমরা আশাবাদী।’ একই ব্যাচের শিক্ষার্থী আম্মান বলেন, ‘অনেক দিন জীবনটা থেমে ছিল। আজকের দিনটা বিশেষ মনে হচ্ছে। ঠিক যেন স্কুলজীবনের প্রথম দিনের মতো। সব হতাশা কাটিয়ে আমরা অনেকটা নতুন করে শুরু করছি।’
হুমায়ুন কবির নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘আমার ছেলে বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়ে। পাঁচ মাস ধরে ক্লাস বন্ধ থাকায় ও মানসিকভাবে খুব চাপের মধ্যে ছিল। একসময় অসুস্থও হয়ে পড়ে। কুয়েটে এমন পরিস্থিতি আগে দেখিনি। কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করলে হয়তো আগেই খুলে যেত। তারপরও এখন অন্তত খুলেছে, এটা বড় স্বস্তি।’
কুয়েটের ছাত্র পরিচালক আবদুল্লাহ ইলিয়াস আক্তার বলেন, আজ থেকে কুয়েটে ক্লাস শুরু হয়েছে। তবে এখনো সব শিক্ষার্থী আসেননি। যাঁদের কেবল ক্লাস রয়েছে, তাঁরা অংশ নিচ্ছেন। যাঁদের পরীক্ষা ছিল, তাঁরা প্রস্তুতির জন্য কিছুটা সময় চেয়েছে। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন হবে ১৪ আগস্ট, ক্লাস শুরু ১৭ আগস্ট।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। ওই রাতেই তৎকালীন উপাচার্য ও কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠে। এরপর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২৬ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ ও সহ-উপাচার্য অধ্যাপক শরিফুল আলমকে অব্যাহতি দেয়। ১ মে চুয়েটের অধ্যাপক হজরত আলীকে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনার বিচার দাবিতে ৪ মে থেকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দেয় শিক্ষক সমিতি। এরপর কোনো শিক্ষকই ক্লাসে ফেরেননি। শিক্ষক সমিতির বিরোধিতার মুখে হজরত আলী দায়িত্ব পালন করতে না পেরে ২২ মে পদত্যাগ করেন।
এরপর ১০ জুন নতুন উপাচার্য নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় সরকার। সেই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার কুয়েটের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী। পরদিন শুক্রবার তিনি খুলনায় এসে দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় আন্দোলন কর্মসূচি তিন সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে গতকাল সোমবার ক্লাস শুরুর নোটিশ জারি করা হয়।