ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডের পবিত্র ঈদুল আজহার কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা রাসেল রহমান।

তিনি জানান, শনিবার দুপুর পৌনে ২টায় স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া কর্তৃক ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ  কার্যক্রম আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার পর আজ রাত সাড়ে ৯টার মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডের সবকয়টির বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক ঘোষিত ১২ ঘণ্টা সময়ের মধ্যেই মাত্র ৮ ঘণ্টায় কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করা সম্ভব হয়েছে।

এ বারের ঈদুল আজহায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডে  ১ লাখ ৩৩ হাজার ৩১৭টি পশু কোরবানি করা হয়। কোরবানি শেষ করার পর নাগরিক পর্যায় থেকে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করে প্রতিটি ওয়ার্ডের সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশনে স্থানান্তর করা হয়। পরবর্তীতে ডাম ট্রাকের মাধ্যমে মাতুয়াইল স্যানেটারি ল্যান্ডফিলে চূড়ান্তভাবে ডাম্প করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৩০ হাজার টন লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে প্রায় ১২ হাজার টন বর্জ্য মাতুয়াইল স্যানেটারি ল্যান্ডফিলে ডাম্পিং করা হয়েছে।

কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় এবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রায় ১০ হাজারের অধিক জনবল মাঠ পর্যায়ে কাজ করেছে। ২০৭টি ডাম্প ট্রাক, ৪৪টি কম্পেক্টর, ৩৯টি কন্টেইনার ক্যারিয়ার, ১৬টি পে-লোডারসহ বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রমে ৭৫টি ওয়ার্ডে মোট ২ হাজার ৭৯টি যানবাহন নিয়োজিত রয়েছে। এছাড়া নগরবাসীর মধ্যে প্রায় ৪৫ টন ব্লিচিং পাউডার, ৫ লিটার ধারণক্ষমতার ২০৭টি স্যাভলনের গ্যালন এবং ১ লাখ ৪০ হাজার বায়োডিগ্রেডেবল ব্যাগ বিতরণ করা হয়েছে।

বৃষ্টি উপেক্ষা করে নির্ধারিত সময়ের আগেই কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করায় মাঠ পর্যায়ের পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক শাহজাহান মিয়া। এছাড়া, কোরবানির বর্জ্য অপসারণে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনকে সহযোগিতা করায় নগরবাসীর প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

ঈদুল আজহার দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনে কোরবানি করা হলেও সেটির বর্জ্য অপসারণে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড এসস স

এছাড়াও পড়ুন:

মশা নিধনে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে

চট্টগ্রামে এডিস মশার প্রজনন ও লার্ভার ঘনত্ব গত এক বছরে দ্বিগুণ হয়েছে, আর এর সরাসরি ফল ভোগ করছেন নগরবাসী। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, এবার ডেঙ্গুর চেয়েও চিকুনগুনিয়া ঘরে ঘরে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে, যা এক নতুন উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। মশা নিধনে কার্যকর ও সমন্বিত উদ্যোগের অভাবই এ রোগের দ্রুত বিস্তারের প্রধান কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। চট্টগ্রামে এভাবে জনস্বাস্থ্য ভেঙে পড়ার বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক।

রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, চট্টগ্রাম নগর এডিস মশাবাহিত রোগের জন্য এখন অতি ঝুঁকিপূর্ণ। গত বছর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগ একই ধরনের জরিপ চালিয়েছিল। এই দুই জরিপের তুলনামূলক চিত্র আমাদের সামনে এক ভয়াবহ বাস্তবতা তুলে ধরে—এডিস মশার প্রজনন ও লার্ভার ঘনত্ব দুটিই আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে।

২০২৪ সালে চট্টগ্রামে এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব (ব্রুটো ইনডেক্স) ছিল ৩৬ শতাংশ, যা এবার আইইডিসিআরের গবেষণায় পৌঁছেছে ৭৫ দশমিক ২৯ শতাংশে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মান যেখানে ২০ শতাংশ, সেখানে চট্টগ্রামের এ চিত্র রীতিমতো ভয়াবহ। বাসাবাড়িতেও লার্ভার উপস্থিতি বেড়েছে। গত বছর ৩৭ শতাংশ বাড়িতে লার্ভা পাওয়া গেলেও এবার তা প্রায় ৪৮ শতাংশে পৌঁছেছে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবার ডেঙ্গুর চেয়ে চিকুনগুনিয়ার রোগী বেশি পাওয়া যাচ্ছে। আবার অনেকের ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া দুটিই হচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে জিকা ভাইরাসের উপস্থিতি, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। চলতি বছরেই ৭৬৪ জনের চিকুনগুনিয়া ও ৭৯৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে এবং ডেঙ্গুতে আটজন প্রাণ হারিয়েছেন, যার মধ্যে ছয়জনই মারা গেছেন এই জুলাই মাসে।

সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, আইইডিসিআরের সুপারিশগুলো সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং সে অনুযায়ী কাজ চলছে। সিটি করপোরেশনের মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শরফুল ইসলাম দাবি করছেন যে মশকনিধনে ক্রাশ কর্মসূচি চলছে এবং নতুন জরিপ অনুযায়ী হটস্পট ধরে কাজ করা হচ্ছে। তবে প্রশ্ন হলো এ উদ্যোগগুলো কি যথেষ্ট? লার্ভার ঘনত্ব যেখানে তিন-চার গুণ বেশি, সেখানে গতানুগতিক কর্মসূচির ওপর নির্ভর করলে চলবে না।

মশাবাহিত রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করার কোনো বিকল্প নেই। এ কাজে সিটি করপোরেশনকে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে। বাসাবাড়িতে নানা জায়গায় জমে থাকা স্বচ্ছ পানিও এডিস মশার প্রজননের জন্য যথেষ্ট। ফলে নাগরিকদের সচেতনতা এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চট্টগ্রাম শহরকে মশাবাহিত রোগের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করতে হলে স্থানীয় প্রশাসন, নগর কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে; নগরবাসীকে দ্রুত তৎপর হতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মশা নিধনে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে
  • স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে দ্বিতীয় দিনেও মহাসড়কে প্রতীকী ক্লাস করলেন শিক্ষার্থীরা
  • প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা খরচের পরও ডুবছে চট্টগ্রাম