ফুটবলের মরা গাঙে কি তাহলে জোয়ার এসেছে! তা তো কিছুটা এসেছেই। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে যে তুলকালাম কাণ্ড হলো, এমন কিছু বাংলাদেশের ফুটবল অনেক দিন দেখেনি। অনেক দিন বলতে অনেক অনেক বছর।

মনে করতে পারেন, সর্বশেষ কবে কোন ফুটবল ম্যাচের জন্য বাংলাদেশের এমন অধীর অপেক্ষায় দিন কেটেছে! সর্বশেষ কবে দেখেছেন টিকিট নিয়ে এমন কাড়াকাড়ি, গ্যালারি উপচে পড়া দর্শক, সারা দেশের মানুষের ওই ৯০ মিনিটে বুঁদ হয়ে থাকা.

..। আমাদের মতো মাঝবয়সী কারও জন্য যা নস্টালজিয়ায় ডুবে যাওয়ার উপলক্ষ, তরুণ প্রজন্মের জন্য বিস্ময়।

সেই ম্যাচে যে বাংলাদেশ হেরে গেছে, এটিকে আপনি অ্যান্টি ক্লাইমেক্স বলতে পারেন। তবে ম্যাচ শেষ হয়ে যাওয়ার চার/পাঁচ দিন পরও সেটির রেশ থেকে যাওয়াটাও তো বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য ব্যতিক্রমী ঘটনা। এর আগে বাংলাদেশ দলের কোনো ফুটবল ম্যাচের এমন আলোড়ন তোলার স্মৃতিতে প্রায় ২২ বছরের ধুলো জমেছে। সেই ধুলো ঝেড়েমুছে পেছনে তাকালে আপনি দেখতে পাবেন ২০০৩ সালের সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ। ঢাকার এই জাতীয় স্টেডিয়ামেই যেটির ফাইনালে মালদ্বীপকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। এর আগে সেমিফাইনালে হারিয়েছিল ভারতকে। বাংলাদেশের ফুটবল নিয়ে গণমানুষের উন্মাদনার সর্বশেষ উদাহরণের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে ফুটবলে বাংলাদেশের সর্বশেষ বড় কোনো সাফল্যও।

এত বছর পর আবারও এ দেশের মানুষের মুখে মুখে ফুটবল ফেরার একটি কারণ বলতে হলে তা অবশ্যই হামজা চৌধুরী নামের পরশপাথর। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলেছেন, খেলেছেন ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব-২১ দলেও। ইংল্যান্ড জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন পূরণ হওয়ার নয় জেনে বাংলাদেশের জার্সি গায়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকেই হামজাকে বরণ করে নিতে অপেক্ষায় ছিল বাংলাদেশ। সেই বরণ করে নেওয়াটাও রীতিমতো ঢেউ তুলেছে এ দেশের ক্রীড়াঙ্গনে। গত মার্চে ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান বাছাইপর্বের ম্যাচ খেলতে হামজার বাংলাদেশে আগমন নিয়ে যা হয়েছিল, সেটিও বাংলাদেশের ফুটবলে অভূতপূর্বই। হয়তো বাংলাদেশের ক্রীড়া ইতিহাসেও। সেই ম্যাচ হয়েছে ভারতে, যাতে হামজাই ছিলেন মূল আকর্ষণ।

সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচেও তা-ই। তবে পার্শ্বনায়ক ছিলেন বেশ কজন। কানাডা প্রবাসী আরেক বাংলাদেশি ফুটবলার শমিত সোমের এই ম্যাচেই বাংলাদেশের পক্ষে অভিষেক হয়েছে, যোগ হয়েছেন ইতালির চতুর্থ বিভাগে খেলা ফাহামিদুল ইসলামও। ডেনমার্ক আর ফিনল্যান্ডে বেড়ে ওঠা জামাল ভুঁইয়া আর তারিক কাজী অনেক আগে থেকেই ছিলেন এত দিনে বলে অনেকটা ‘ঘরের ছেলে’ হয়ে গেছেন। মাঝখানে কানাডা থেকে এসেছেন কাজেম শাহও। এই প্রবাসী ফুটবলারদের নিয়ে বাংলাদেশ দলের নতুন রূপে দেখা দেওয়াই এ দেশের মানুষের মনে লুকিয়ে থাকা ফুটবলপ্রেমে নতুন করে আন্দোলন তুলেছে। যা আসলে সব সময়ই সুপ্ত হয়ে ছিল। মাঝখানে বাংলাদেশের ফুটবল থেকে এ দেশের মানুষ মুখ ফিরিয়ে থাকতে পারেন, কিন্তু তাদের ফুটবলপ্রেম নিয়ে সংশয় জাগেনি কখনোই। ইউরোপিয়ান ফুটবল নিয়ে মাতামাতিই তা মনে করিয়ে দিত। বিশ্বকাপ তো আরও বেশি।

বিশ্বকাপের সময়কার বাংলাদেশ তো এখন ফুটবল বিশ্বেই বিস্ময় জাগায়। কৌতূহলও। ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ের তলানিতে পড়ে থাকা একটা দেশে ফুটবল নিয়ে এমন মাতামাতি যে অনেকের বিশ্বাসই হতে চায় না। সেই অবিশ্বাসের মাত্রাটা এমনই যে, বিশ্বকাপ ফুটবল কাভার করতে গিয়ে ইউরোপ-লাতিন আমেরিকার সাংবাদিকদের কাছে তা ব্যাখ্যা করতে হয়। তাঁরা অবিশ্বাসে চোখ বড় করে তা শোনেন। ২০১৪ সালে ব্রাজিল বিশ্বকাপ কাভার করতে গিয়ে যেমন সত্যি সত্যিই মনে হলো, বাংলাদেশে এই মুহূর্তে ব্রাজিলের চেয়ে বেশি ব্রাজিলিয়ান পতাকা উড়ছে। ব্রাজিলিয়ান সাংবাদিকেরা প্রথমে ভেবেছিলেন, আমি রসিকতা করছি। ২০২২ বিশ্বকাপের স্মৃতি তো মোটামুটি টাটকাই। আর্জেন্টিনা দলের কোচ লিওনেল স্কালোনির সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ নিয়ে প্রশ্ন হচ্ছে। ধন্যবাদকেও যথেষ্ট মনে না করে তিনি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন বাংলাদেশের সমর্থকদের।

বিশ্বকাপে বাংলাদেশে যা হয়, তা হয়তো একটু বেশি বেশিই। তবে ফুটবল যে বিশ্বের জনপ্রিয়তম খেলা, এটা প্রমাণের দায়িত্ব কখনোই বাংলাদেশের ওপর পড়েনি। এই অবিসংবাদী সত্যি কখনো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লে তো!

হামজা-শমিতদের কল্যাণে বাংলাদেশের ফুটবল নিয়ে নতুন করে যে আগ্রহ জেগেছে, তা নিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর না তুলে বাফুফের কর্তাব্যক্তিদের বরং উচিত এটাকে কাজে লাগাতে ঝাঁপিয়ে পড়া। এমন সুযোগ বারবার আসে না, হয়তো আর কখনো আসবেই না।

হামজা-শমিতদের মতো প্রবাসী বাংলাদেশিদের খেলিয়ে বাংলাদেশের ফুটবলের সত্যিকার কোনো উন্নতি হবে কি না, এই আলোচনাও হচ্ছে। সাবেক খেলোয়াড়েরা দ্বিধাবিভক্ত। বিপক্ষের মতটাই বেশি জোরালো শোনাচ্ছে। যদিও বাফুফে যা করছে, তা মোটেই নতুন কিছু নয়। অন্য অনেক দেশ অনেক আগেই এই পথে হেঁটেছে।

গত বিশ্বকাপে এমন ১৩০ জন ফুটবলার ছিলেন, যাঁরা যে দেশে জন্ম হয়েছে, সেই দেশের বদলে অন্য দেশের হয়ে খেলেছেন। সেই বিশ্বকাপের আলোড়ন মরক্কো দলের খেলোয়াড়দের কার কোন দেশে জন্ম—তা দেখতে গিয়ে মনে হয়েছিল, এ তো রীতিমতো’ জাতিসংঘ’!

এমন উদাহরণ আরও আছে। তবে সম্প্রতি সবকিছুকে ছাড়িয়ে গেছে ইন্দোনেশিয়া। তিন শ বছরের বেশি ডাচ উপনিবেশ ছিল এই দেশ। নাম ছিল ডাচ ইস্ট ইন্ডিজ। এই পরিচয়ে খেলেছে ১৯৩৮ বিশ্বকাপেও। আবার বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন পূরণে এই ঔপনিবেশিক ইতিহাসকেই কাজে লাগাচ্ছে ইন্দোনেশিয়া। ফুটবলের প্রথম বিশ্বের দেশ নেদারল্যান্ডসে ইন্দোনেশিয়ান কানেকশন আছে, এমন ফুটবলার অসংখ্য। তাঁদেরকে ডেকে আনা হয়েছে জাতীয় দলে। ডাচ ঘরানার ফুটবল খেলে বেড়ে ওঠা খেলোয়াড়দের জন্য ডাচ কোচ হলেই ভালো—এই চিন্তা থেকে কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ডাচ কিংবদন্তি প্যাট্রিক ক্লাইভার্টকে। অবস্থাটা এমন হয়েছে যে, মাঠে নেমে প্রতিপক্ষ দলগুলো ধন্দে পড়ে যাচ্ছে, ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে খেলছি না কোনো ডাচ দলের সঙ্গে!

বাংলাদেশ দলেও হামজা-শমিতদের মতো আরও অনেকে আসবেন বলে শোনা যাচ্ছে। তা আসুন। তবে ইন্দোনেশিয়ার যে উদাহরণটা দিলাম, তাতে পুরোটা বলা হয়নি। জাতীয় দল প্রবাসী ফুটবলার দিয়ে ভরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি সেই দেশের ফেডারেশন আরও জরুরি কিছু কাজ করেছে। সে দেশের ফুটবল নিয়ে নেওয়া হয়েছে নানা পরিকল্পনা। তাতে ‘এখনই করতে হবে’ এমন স্বল্পমেয়াদি কাজ যেমন আছে, তেমনি আছে মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাও। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের কাছ থেকে এমন কিছু আমরা অতীতেও শুনিনি, এখনো শোনা যাচ্ছে না।

প্রবাসী ফুটবলারদের জাতীয় দলে এনে এ দেশের ফুটবল নিয়ে মানুষের আগ্রহটা হয়তো জাগিয়ে তোলা গেছে, যেটিকে ফুটবলের নবজাগরণও বলছেন অনেকে। কিন্তু সেই জাগরণকে কাজে লাগাতে সারা দেশের ফুটবলকেও জাগিয়ে তুলতে হবে। নইলে তা বুদ্‌বুদের মতো মিলিয়ে যেতে সময় লাগবে না। একাডেমি করতে হবে। নজর দিতে হবে তৃণমূলে। জেলায় জেলায় নিয়মিত লিগ আয়োজন নিশ্চিত করতে হবে। দেশের শীর্ষ লিগও তো জীর্ণ-শীর্ণ। নামেই যা পেশাদার লিগ, কাজে মোটেই নয়। বছর কয়েক আগে প্রথম আলোতে বাংলাদেশের পেশাদার লিগের ক্লাবগুলো নিয়ে একটা ধারাবাহিক প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিল। যাতে বেরিয়ে এসেছিল এই দেশের ফুটবলের কঙ্কালসার চেহারা। পেশাদার ফুটবল ক্লাবের জন্য অপরিহার্য বেশির ভাগ শর্তই পূরণ করতে ব্যর্থ ক্লাবগুলো। সেই শর্তগুলোও এমন বড় কিছু নয়, বরং বলতে পারেন পেশাদার ফুটবলের একেবারে প্রাথমিক সব ব্যাপার-স্যাপার। মাঠ নেই, জিম নেই, বয়সভিত্তিক দল নেই, . . শুধু নেই আর নেই।

আর এটা কে না জানে যে, ফুটবল ক্লাবনির্ভর খেলা। সেখানেই খেলোয়াড় তৈরি হয়, দর্শক-সমর্থকও। বাংলাদেশের ফুটবলের হারিয়ে যাওয়া যে স্বর্ণালি সময়ের কথা মনে করে আমরা দীর্ঘশ্বাস ফেলি, সেই সময়টা মনে করে দেখুন। জাতীয় দল কী এমন হাতিঘোড়া করেছে তখন! দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের স্মারক সাফ গেমসে ফুটবলের সোনাও তো জিততে পারেনি। সে জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত। স্বর্ণালি সময় বলুন বা স্বর্ণযুগ, তা তত দিনে অস্তমিত।

আশির দশক থেকে নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময়টাকে যদি সেই স্বর্ণযুগ ধরি, ফুটবল তখন এ দেশের মানুষের এমন জীবনাচরণের অংশ হয়ে ছিল মূলত ক্লাব ফুটবল নিয়ে উন্মাদনার কারণে। তা হারিয়ে যাওয়ার মূলে মাঝখানে অনিয়মিত লিগ, আবাহনী-মোহামেডান প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই হয়ে যাওয়ার মতো অনেক কারণ। সঙ্গে ক্রিকেটের উত্থানেরও অবশ্যই বড় ভূমিকা। যে কারণে নতুন প্রজন্ম বাংলাদেশের ফুটবল নিয়ে আগ্রহই বোধ করেনি, মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে একসময় নিয়মিত মাঠে যাওয়াটাকে অভ্যাস বানিয়ে ফেলা দর্শকও।

হামজা-শমিতদের কল্যাণে বাংলাদেশের ফুটবল নিয়ে নতুন করে যে আগ্রহ জেগেছে, তা নিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর না তুলে বাফুফের কর্তাব্যক্তিদের বরং উচিত এটাকে কাজে লাগাতে ঝাঁপিয়ে পড়া। এমন সুযোগ বারবার আসে না, হয়তো আর কখনো আসবেই না।

উৎপল শুভ্র প্রথম আলোর প্রধান ক্রীড়া সম্পাদক

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল দ শ র ফ টবল ন য় দ শ র ফ টবল র ইন দ ন শ য় ব শ বক প জ ত য় দল ন ফ টবল নত ন ক স বর ণ দ র মত হয় ছ ল প রব স র জন য প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী

আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।

রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।

মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।

অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’

আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’

বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ