মাদক বিক্রির টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে মোবারক হোসেন (১৮) নামের এক তরুণ ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন। আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে শিশুপার্কের পাশে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতের খালাতো ভাই রবিউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা শাহবাগে মেট্রোরেল স্টেশনের নিচে ভাসমানভাবে থাকেন। মোবারকের কাছে মাদক বিক্রির পাঁচ হাজার টাকা পেতেন নবী নামের এক যুবক। ওই টাকা না পেয়ে নবীর নির্দেশে রাতুল, রাজুসহ কয়েকজন মোবারককে ধরে শিশুপার্কের পাশে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে তাঁর দুই পায়ের ঊরুতে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।

গুরুতর আহত অবস্থায় মোবারককে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসক সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

রবিউল আরও জানান, ঘটনার সময় মোবারকের মুঠোফোনও নিয়ে যায় দুষ্কৃতকারীরা। মোবারক মুঠোফোনটি ফেরত দেওয়ার জন্য অনুরোধ করলেও তারা না শুনেই হামলা চালায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মোবারকের পূর্বপরিচিত একজন বলেন, দুই পক্ষই শাহবাগ এলাকায় গাঁজাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক বিক্রি করত। ওই মাদক বিক্রির লেনদেন নিয়ে বিরোধ থেকে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।

পুলিশ জানায়, নিহত মোবারক সিলেটের বাসিন্দা। কিছুদিন আগে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। বর্তমানে তাঁর স্ত্রীর বাসা রামপুরার আফতাবনগরে হলেও মোবারক অধিকাংশ সময় শাহবাগে মেট্রোরেল স্টেশনের নিচে থাকতেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো.

ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। ঘটনার বিষয়টি শাহবাগ থানাকে অবহিত করা হয়েছে। তারা বিষয়টি তদন্ত করছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ব রক শ হব গ

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ