Prothomalo:
2025-11-03@13:09:25 GMT

ঊর্ধ্বতনদের কি কোনো দায় নেই

Published: 16th, June 2025 GMT

নিরাপদ গণপরিবহনব্যবস্থা হিসেবে পরিচিত হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ট্রেন দুর্ঘটনা উদ্বেগের বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অব্যবস্থাপনা, সিগন্যাল না মানা, দায়িত্বপ্রাপ্তদের অবহেলা—এগুলোই ট্রেন দুর্ঘটনার মূল কারণ। সেটা সবার জানা থাকলেও এ থেকে উত্তরণে রেলওয়ের উদ্যোগ নেই বললেই চলে। প্রতিবারই দুর্ঘটনার পর ট্রেন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত নিম্নস্তরের কর্মীরা শাস্তির আওতায় আসেন। কিন্তু ঊর্ধ্বতনেরা জবাবদিহির বাইরে থাকায় প্রকৃতপক্ষে একই ভুলের পুনরাবৃত্তি ঘটে। ফলে কিছুদিন পরপরই একেকটা ট্রেন দুর্ঘটনা একেকটা অন্তহীন ট্র্যাজেডির জন্ম দেয়।

এবার ঈদুল আজহার আগে চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুর পূর্ব প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা সাতটি গাড়িতে ধাক্কা দেয় কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা পর্যটক এক্সপ্রেস। এতে দুই বছরের শিশুসহ দুজন নিহত হন, আহত হন ১৬ জন। সেই দুর্ঘটনায় নিহত শিশুটিকে কোলে নিয়ে বাবার আর্তনাদের ভিডিও আমাদের সবাইকে অশ্রুসিক্ত করেছে। রেলওয়ের প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, ট্রেনটি সেতুতে ওঠার নিয়ম না মেনে সংকেত অমান্য করে দ্রুতগতিতে ঢুকে পড়ে। প্রাথমিক তদন্তের ওপর ভিত্তি করে ট্রেনটির লোকোমাস্টারসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে ও দায় নিরূপণ করতে রেলওয়ে তাদের কর্মকর্তাদের দিয়ে একটি তদন্ত কমিটি করেছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, তদন্ত কমিটি কি ভবিষ্যতে যাতে আর এ ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটে, সেটা মাথায় রেখে পক্ষপাতমুক্তভাবে তদন্ত করতে পারবে? রেলওয়ের ঐতিহ্য কিন্তু সেটা বলছে না।

প্রথম আলোর খবর জানাচ্ছে, ছয় বছরে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে ছয়টি বড় ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে অন্তত ৫৩ জনের। আহত হয়েছেন শতাধিক যাত্রী। এসব ঘটনায় রেলওয়ের তদন্ত কমিটি প্রতিবারই দায় চাপিয়েছে ট্রেনচালক, সহকারী চালক, গার্ড ও গেটম্যানদের ওপর। 

দেখা যাচ্ছে যে ট্রেন দুর্ঘটনা তদন্তে গঠিত তদন্ত দল দুর্ঘটনার পেছনে উচ্চপর্যায়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের অবহেলার বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয়। এ রকম পূর্বনির্ধারিত ও পক্ষপাতদুষ্ট তদন্ত কি পরবর্তী দুর্ঘটনা রোধে আদৌ কোনো ভূমিকা রাখতে পারে? এ কারণে পরিবহনবিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরেই রেলওয়ের তদন্ত কমিটিতে নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়ে আসছেন। আমরা মনে করি, পরিবহনবিশেষজ্ঞ মো.

সামছুল হক সরকারি-বেসরকারি সংস্থার বিশেষজ্ঞদের দিয়ে তদন্ত কমিটি করে ট্রেন দুর্ঘটনার মূল কারণ খুঁজে বের করার যে দাবি করেছেন, সেটা যথার্থ।

ট্রেন দুর্ঘটনায় যাঁদের অবহেলা ও গাফিলতি থাকবে, তাঁদেরকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতে হবে। কিন্তু শুধু নিম্নস্তরের কর্মীদের শাস্তি দিয়ে ট্রেন দুর্ঘটনা বন্ধ করা সম্ভব নয়। নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমেই বের করা প্রয়োজন ঊর্ধ্বতন ও অধস্তন, কার দায় কতটা।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ট র ন দ র ঘটন দ র ঘটন র তদন ত ক র লওয় র ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন না হলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা হবে: আপ বাংলাদেশ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচন ২৭ নভেম্বরেই অনুষ্ঠিত না হলে তা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রশাসনের প্রতারণা বলে মন্তব্য করেছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। এ সময় পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরে সংগঠনটি।

সোমবার (৩ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

২৭ নভেম্বরই জকসু নির্বাচন চায় ছাত্রশিবির

জকসু নির্বাচন নিয়ে একে অপরকে দোষারোপ ছাত্র সংগঠনগুলোর

দাবিগুলো হলো— আসন্ন জকসু নির্বাচন ২৭ নভেম্বরেই অনুষ্ঠিত করতে হবে; নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে; নির্বাচন কমিশনের পূর্ণ নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতা রক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে; সব সংগঠনকে সমান সুযোগ দিয়ে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে; অরাজনৈতিক, নিরাপদ ও শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে প্রশাসনকে উদ্যোগ নিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য ও জবির প্রধান সংগঠক মাসুদ রানা বলেন, “আমরা যখন জকসুর দাবিতে অনশন করছিলাম, তখন প্রশাসন ২৭ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমাদের অনশন ভাঙিয়েছিল। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, একটি মহল নির্বাচন পেছানোর পাঁয়তারা করছে।”

তিনি বলেন, “ডিসেম্বর মাসে ভর্তি পরীক্ষা ও বিভিন্ন বিভাগের ফাইনাল পরীক্ষা থাকায় ওই মাসে নির্বাচন অসম্ভব। তাই ২৭ নভেম্বরই জকসু নির্বাচনের উপযুক্ত সময়।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা জানতে চাই, নির্বাচন পেছানোর মধ্য দিয়ে জকসু নির্বাচন ভণ্ডুল করার কোনো প্রক্রিয়া চলছে কিনা। পুরান ঢাকাকে অস্থিতিশীল করে একটি মহল নির্বাচন পণ্ড করতে চায়। শিক্ষার্থীদের জীবনের প্রথম ভোট হবে জকসু নির্বাচন—তা থেকে কাউকে বঞ্চিত করা যাবে না।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ