‘নতুন কৌশলে’ তেল আবিব ও হাইফায় ইরানের হামলা, নিহত ৫
Published: 16th, June 2025 GMT
ইসরায়েলের তেল আবিব ও বন্দরনগরী হাইফায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় চালিয়েছে ইরান। সোমবার ভোররাতে তেল আবিবের আকাশে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্রের দৃশ্য দেখা যায় এবং জেরুজালেমেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। হামলায় ৫ ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। খবর রয়টার্সের।
ইসরায়েলের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি লক্ষ্য করে চালানো আগাম হামলার পাল্টা জবাব হিসেবেই তেহরান এই আঘাত হানে।
জাতীয় জরুরি সেবা বিভাগ জানিয়েছে, সর্বশেষ ইরানি হামলায় অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছে। শুক্রবার থেকে এ পর্যন্ত ইরানি হামলায় অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছে। হামলায় আরও অন্তত ১০০ জন আহত হয়েছে।
হাইফায় ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার অভিযান চলছে। জরুরি বিভাগ জানিয়েছে, সেখানে প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছে। বন্দরের কাছে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম।
তেল আবিবের একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় কয়েকটি আবাসিক ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। এই এলাকার মাত্র কয়েকশ মিটার দূরেই মার্কিন দূতাবাসের একটি শাখা অবস্থিত। দূতাবাস ভবনে কিছু ক্ষতি হলেও কেউ আহত হয়নি বলে জানান মার্কিন রাষ্ট্রদূত।
এদিকে ইরানের বিপ্লবী গার্ড (আইআরজিসি) জানিয়েছে, সর্বশেষ হামলায় তারা এমন একটি ‘নতুন কৌশল’ ব্যবহার করেছে। এর ফলে ইসরায়েলের বহুস্তরবিশিষ্ট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়েছে।
আইআরজিসির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই অভিযানে ব্যবহৃত উদ্যোগ ও সক্ষমতাগুলো যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা শক্তির সর্বোচ্চ সমর্থন এবং আধুনিকতম প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি সত্ত্বেও, ইসরায়েলের অধিকৃত ভূখণ্ডের লক্ষ্যবস্তুতে সফলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এই হামলা সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি । তবে তারা বারবার বলে আসছে, তাদের ‘আয়রন ডোম’ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শতভাগ সুরক্ষিত নয় এবং সামনে আরও কঠিন সময় আসছে।
ইরানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে অন্তত ২২৪ জন। নিহতদের ৯০ শতাংশই বেসামরিক নাগরিক বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
সোমবার সকালে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা আবারও ইরানের বিপ্লবী গার্ড ও সামরিক বাহিনীর কমান্ড সেন্টারগুলোতে হামলা চালিয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’
নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন, মানবিকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের চিত্র নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে ‘কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পঞ্চম আসরে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের এই আলোচিত চলচ্চিত্রটি।
৭ দিনব্যাপী এ উৎসবে মিসর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ভারতের নির্বাচিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে উৎসবে।
আরো পড়ুন:
দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে
সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন ভাবনা
২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ায়। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের লেখা ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেন মাসুম রেজা।
চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী।
উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, “আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন এত কিছু ভাবিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা সত্যিই অকল্পনীয়। ‘নয়া মানুষ’ ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের প্রকৃত দর্শন তুলে ধরছে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।”
চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিচ্ছে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। কাশ্মীর ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ‘নয়া মানুষ’ অংশ নিচ্ছে, যা দেশের চলচ্চিত্রের জন্যও একটি বড় সাফল্য।”
চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে চলচ্চিত্রটির। চিত্রগ্রহণ পরিচালনা করেছেন কমল চন্দ্র দাস। সিনেমাটির সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়।
মানবতার বার্তা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জীবনবোধের অনন্য মেলবন্ধন নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ এবার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিচ্ছে শান্তি ও সহমর্মিতার বার্তা।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত