গুগল তাদের অ্যাসিস্ট্যান্ট ফিচারে বেশ কিছু সুবিধা বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছিল। জানা গেছে, ভয়েস কমান্ড ছাড়াও গুগল অ্যাসিস্ট্যান্টের কয়েকটি ফিচার আগে বন্ধ করা হয়েছিল।
বিশেষ করে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্টের ভয়েস কমান্ড সবচেয়ে বেশি পরিষেবা। অতীতে কারিগরি কিছু ত্রুটির কারণে জনপ্রিয় কয়েকটি ফিচার বন্ধ করা হয়।
ভয়েস কমান্ডে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্টের বহুমাত্রিক ফিচারে বাড়তি কিছু সুবিধা দিয়েছে গুগল কর্তৃপক্ষ। যদি অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করেন আর সঙ্গে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্টে নির্ভরশীল
হয়ে থাকেন, সে ক্ষেত্রে কিছুটা বাড়তি সুবিধা পাওয়া যাবে।
উদ্ভাবনী গুগল বলছে, তারা এখন গ্রাহক প্রত্যাশা ও অভিজ্ঞতাকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্ব দিয়েছে। সময়োপযোগী চাহিদা পূরণে নিয়মিত কাজ চলছে। ভক্তরা যেসব প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন, তাতে উদ্দেশ্য নিয়ে বাড়তি বিনিয়োগ করছে গুগল। বিপরীতে সময়ের প্রয়োজনে অনেক উন্নয়নকে আপাতত বিদায় বলতে হয়েছে।
স্মার্টফোন থেকে অডিওবুক কাস্ট করা গেলেও প্লে বা নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে প্রত্যাশা বেড়েছে।
গুগল অ্যাসিস্ট্যান্টের মাধ্যমে মিডিয়া অ্যালার্ম, রেডিও অ্যালার্ম, মিউজিক অ্যালার্ম সেট করার সুবিধার উন্নয়ন করা হয়েছে। অ্যাসিস্ট্যান্ট দিয়ে কুকবুকের রেসিপি ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইসে স্থানান্তরে এখন শর্ত জুড়েছে।
ইউটিউবে রেসিপিবিষয়ক সার্চে এখন চটজলদি পরিষেবা পাওয়া যায়। স্মার্ট স্পিকার ও স্মার্ট ডিভাইসে স্টপওয়াচ পরিচালনায় নতুন সুবিধার সমন্বয় করা হয়েছে।
ভয়েস কমান্ড দিয়ে ইমেইল, অডিও-ভিডিও মেসেজ প্রেরণে পরিবর্তন আনা হয়েছে। ফোনকল বা টেক্সট মেসেজের সুবিধা এখনও আগের মতো রয়েছে। গুগল ক্যালেন্ডার ভয়েস কমান্ডের মাধ্যমে ইভেন্ট রি-শিডিউলে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে।
গুগল ম্যাপে অ্যাসিস্ট্যান্ট ড্রাইভিং মোডের ব্যবহারে রয়েছে শর্ত। অর্থাৎ ড্রাইভিং মোডে অ্যাসিস্ট্যান্টের মাধ্যমে মিডিয়া কন্ট্রোল আর কলিং ও মেসেজিং শর্তসাপেক্ষে পরিষেবা রয়েছে।
স্মার্ট ডিসপ্লে ও স্পিকারের মাধ্যমে কলিং করার মানোন্নয়ন করা হয়েছে। কিন্তু কলার আইডিকে
করা হয়েছে অদৃশ্য।
অন্যদিকে, সবচেয়ে আলোচিত পরিষেবা হচ্ছে ঘুমের সারসংক্ষেপ বিষয়ক তথ্য, যা শুধু গুগল স্মার্ট ডিসপ্লের জন্য প্রযোজ্য।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ গল অ য স স ট য ন ট র স কম ন ড পর ষ ব
এছাড়াও পড়ুন:
‘তুমি কি আমাকে ভালোবাসো’—সিডনির মঞ্চে হিমু-রূপার নস্টালজিয়া
রোববারের সিডনির ম্যাকুয়ারি লিংকস গলফ ক্লাব হলজুড়ে ছিল হুমায়ূন আহমেদের গল্প-উপন্যাসের পরিচিত নস্টালজিয়ার আবহ। ‘পড়ুয়ার আসর’ আয়োজিত স্মরণানুষ্ঠান ‘প্রিয় পদরেখা’ ছিল কেবল আলোচনা নয়, এ ছিল হুমায়ূনের সৃষ্টিকে অনুভব করার, তাঁর চরিত্রদের সঙ্গে আবার দেখা হওয়ার এক আবেগঘন আয়োজন। গদ্য, পদ্য, গান ও নাট্য-আলাপ মিলেমিশে মনে রাখার মতো এক আসর।
অপূর্ব এক দৃশ্যের দেখা মিলল। তরুণ শিল্পী রূপন্তি আকিদ—সিডনির বাঙালি কমিউনিটির তরুণ অভিনেত্রী। নানা সাংস্কৃতিক আয়োজনে নিয়মিত অংশগ্রহণ তাঁকে তরুণ প্রবাসী শিল্পীদের মধ্যে বিশেষভাবে পরিচিত করেছে। সেদিন তাঁর পরনে ছিল হিমুর স্বাক্ষররং নীল শাড়ি, হাতে হুমায়ূন আহমেদের ‘হিমুর আছে জল’ উপন্যাস।
রূপন্তির পাশে ছিলেন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা মাজনুন মিজান—গায়ে উজ্জ্বল হলুদ পাঞ্জাবি, হাতে ফুল। বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গন ও টেলিভিশনে দুই যুগের বেশি সময় ধরে অভিনয় করা মিজান বিশেষ করে হুমায়ূন আহমেদের নাটক, টেলিফিল্ম ও সিনেমায় কাজ করে দর্শকের মনে আলাদা জায়গা করে নিয়েছেন। বর্তমানে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় থাকলেও প্রবাসে নিয়মিত সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত আছেন এবং সিডনির শিল্পমহলে তিনি পরিচিত ও সম্মানিত মুখ।
এই নাট্য-আলাপে হিমু ও রূপার ভূমিকায় অভিনয় করেন রূপন্তি ও মিজান। তাঁদের সংলাপ, দৃষ্টিভঙ্গি আর অভিনয়ের কোমল আবেগ যেন মঞ্চে সত্যিই ফিরিয়ে আনল হিমুর হাঁটাচলার সেই নরম আলো, রূপার শান্ত উপস্থিতি আর দুজনের অদ্ভুত অনুভবের জটিল সুন্দর সম্পর্ক।
নাট্য-আলাপ শুরু হতেই মঞ্চ যেন গল্পের পাতায় পরিণত হলো। যখন তাঁদের কণ্ঠে উচ্চারিত হলো—
‘তুমি কি আমাকে ভালোবাসো?’
‘না, ভালোবাসি না...কারণ, ভালোবাসলে তো প্রাপ্তির বাসনা থাকে। আমি তোমাকে অনুভব করি।’
তখন হলজুড়ে ছড়িয়ে পড়ল নিস্তব্ধতার গভীর ঢেউ। দর্শকের চোখে ভেসে উঠল হিমু-রূপার নরম, শীতল, হৃদয়ছোঁয়া মুহূর্তগুলো।
পরিবেশ আরও আবেগময় হয়ে ওঠে পরিচিত সুরে—‘নেশা লাগিল রে, বাঁকা দুই নয়নে নেশা লাগিল রে...’
গানের সুর মিশে গিয়েছিল সিডনির প্রবাসী আবেগে—হিমুর হলুদ, নীল আর স্নিগ্ধ প্রেমের গন্ধে। ‘পড়ুয়ার আসর’-এর অন্যতম সদস্য রোকেয়া আহমেদ বলেন, ‘তাঁর হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন উপলক্ষে সিডনিতে এই আয়োজন। আমরা চাই তাঁর সৃষ্টির আলো নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে যাক। প্রবাসে থেকেও তাঁকে নতুন করে উপলব্ধি করার একটি জায়গা তৈরি করাই আমাদের লক্ষ্য।’
আরও পড়ুনগানের সুরে, মেজবানের ঘ্রাণে—সিডনি যেন এক দিনের চট্টগ্রাম১০ নভেম্বর ২০২৫একজন মুগ্ধ দর্শক অনুষ্ঠান শেষে মন্তব্য করেন, ‘মনে হচ্ছিল যেন গল্পের চরিত্ররা সত্যি সত্যি সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছে। আলোচনার প্রতিটি কথাই হৃদয় ছুঁয়ে গেল।’
রোববারের সিডনির ম্যাকুয়ারি লিংকস গলফ ক্লাব হলজুড়ে ছিল হুমায়ূন আহমেদের গল্প-উপন্যাসের পরিচিত নস্টালজিয়ার আবহ