পার্বত্য চট্টগ্রামের বনে দেখা মিলেছে চিতা বাঘের
Published: 25th, June 2025 GMT
পার্বত্য চট্টগ্রামের বনে চিতা বাঘের দেখা মিলেছে বলে জানিয়েছে ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্স (সিসিএ) নামের বন্য প্রাণী বিষয়ক একটি সংস্থা। এই সংস্থার বসানো ক্যামেরা ফাঁদে এই ল্যাপার্ড বা চিতা বাঘের ছবি ধরা পড়ে। পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি দুর্গম সংরক্ষিত বনে এই মাসে চিতা বাঘটি দেখা গেছে বলে নিশ্চিত করেছেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা।
এত দিন পার্বত্য চট্টগ্রামের বনে চিতা বাঘ আছে, সেটা বিভিন্নভাবে গবেষকেরা বলে আসছিলেন। সিসিএর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার সিজার আজ বুধবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি বনে (নাম প্রকাশ করা হয়নি সংরক্ষণের স্বার্থে) এক চিতার দেখা মিলেছে। সেটা এই জুন মাসের ক্যামেরায় ধরা পড়ে। এক মাস আগে থেকে এই ক্যামেরা সেখানে ট্র্যাপ করা হয়। এখন বিষয়টা নিশ্চিত যে পার্বত্য চট্টগ্রামে চিতা বাঘ এখনো আছে।
আজ রাতে ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্সের ফেসবুক পেজে চিতা বাঘের দুটি ছবি দেওয়া হয়। বনের মধ্যে চিতা বাঘটি নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। আশপাশে কিছু গাছপালাও দেখা যায়।
বন্য প্রাণীর সঠিক ঠিকানা যাতে না পায় শিকারিরা, সে কারণে এলাকার নাম প্রকাশ করেন না গবেষকেরা। পাহাড়ের বনে এখনো চিতা বাঘের অস্তিত্ব বিদ্যমান বলে নিশ্চিত করেন শাহরিয়ার সিজার। তাঁরা বিভিন্ন সময় স্বল্প সময়ের জন্য বনের ভেতর ক্যামেরা বসিয়ে বন্য প্রাণীর চলাচল পর্যবেক্ষণ করে থাকেন।
শাহরিয়ার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ২০১৫ সালে ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ে আরেকটি চিতা বাঘ দেখেছিলাম। এখনো একটা চিতা বাঘ দেখলাম। তবে নিঃসন্দেহে বলা চলে, আগের মতো চিতা ভাগ এখন নেই।’
পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি বনে স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে চিতাবাঘ। সম্প্রতি ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন এলায়েন্স(সিএএ) নামের বন্যপ্রাণী বিষয়ক একটি সংস্থার ক্যামেরা ফাঁদে বাঘের ছবি ধারণ করা হয়েছে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম র বন
এছাড়াও পড়ুন:
নির্যাতন প্রতিরোধে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে রাষ্ট্রকে
আন্তর্জাতিক নির্যাতনবিরোধী দিবস আজ বৃহস্পতিবার। বিশ্বব্যাপী নানাভাবে নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষ জাতিসংঘ ঘোষিত এই দিনটি পালন করে। দিবসটি উপলক্ষে এক বিবৃতিতে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) সব নির্যাতনের শিকার মানুষের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেছে। বিচার, মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে নির্যাতন প্রতিরোধে রাষ্ট্র যেন কার্যকর উদ্যোগ নেয়– এই আহ্বান জানায় আসক।
সংস্থাটি বলছে, বিগত বছরগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, বেআইনি আটক ও হেফাজতে নির্যাতনের ঘটনা উদ্বেগজনকহারে ঘটেছে। এমনকি, আটক বা গ্রেপ্তার হওয়ার পর ব্যক্তি নিখোঁজ হয়ে গেছে। আবার ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। যেগুলোর অধিকাংশের কোনো বিচারিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি।
আসক আরও বলছে, ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী কমপক্ষে ১৫টি বিচারবহির্ভূত মৃত্যুর অভিযোগ এসেছে, যার বেশির ভাগ স্বাধীন তদন্তের আলো দেখেনি। বিগত সময়ে হেফাজতে নির্যাতন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, সহিংসতাসহ যেসব অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে, সেগুলো আমলে নিয়ে দ্রুত নিরপেক্ষ, স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্ত পরিচালনা করতে হবে। দায়ীদের আইন অনুযায়ী বিচারের আওতায় আনা ও ভুক্তভোগী পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণে আইনি সহায়তা দিতে হবে। নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন, ২০১৩-এর কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রমে জবাবদিহি বাড়াতে একটি স্বাধীন পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা জানিয়েছে আসক।
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চলতি বছরের মে মাসে দেশে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় মামলা হয়েছে দুই হাজার ৮৭টি, এপ্রিলে দুই হাজার ৮৯, মার্চে দুই হাজার ৫৪, ফেব্রুয়ারিতে এক হাজার ৪৩০ ও জানুয়ারিতে এক হাজার ৪৪০টি। এ ছাড়া ২০২৪ সালে গড়ে প্রতি মাসে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় মামলা এক হাজার ৪৬৪ ও ২০২৩ সালে এক হাজার ৫৭৮টি।
১৯৯৭ সালের ১২ ডিসেম্বর জাতিসংঘ প্রতিবছরের ২৬ জুন নির্যাতনবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে এর প্রেক্ষাপট রচনা হয় আরও আগে, ১৯৮৭ সালে। সে বছরের ২৬ জুন বিশ্বের ১৩৭টি দেশ রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ কনভেনশনে সই করে। অন্যান্য দেশের মতো এতে সই করে বাংলাদেশও।
গুম হওয়ার পর সাড়ে চার মাস পর ফেরত আসা বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির নেতা সৈয়দ সাদাত আহমেদ সমকালকে বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদ সরকারের আমলে তাঁর মতো করে অনেককেই গুমের শিকার হতে হয়েছে। যাদের ভাগ্য ভালো তারাই হয়তো ফিরে আসতে পেরেছে। সেখানকার সেই ভয়ংকর দিনগুলো যেন আর কারও জীবনে না আসে।