দুই বছর পর ২৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রিজার্ভ
Published: 26th, June 2025 GMT
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দুই বছর পর ২৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। সপ্তাহের শেষ দিন গতকাল বৃহস্পতিবার বিপিএম৬ অনুযায়ী রিজার্ভ উঠেছে ২৪ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলারে। ২০২৩ সালের জুনের পর যা সর্বোচ্চ। রেমিট্যান্সে উচ্চ প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে বড় অঙ্কের ঋণের কারণে রিজার্ভ এত বেড়েছে।
সূত্র জানায়, গতকাল আইএমএফ ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির ১৩৪ কোটি ডলার রিজার্ভে যোগ হয়েছে। আবার বিশ্বব্যাংকের বাজেট সহায়তার ৫০ কোটি ডলারের মধ্যে বাকি ১৫ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। আগের দিন জমা হয় ৩৫ কোটি ডলার। এতে করে আগের দিনের ২২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার থেকে রিজার্ভ বেড়ে ২৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের গ্রস হিসাবে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, আগামী সপ্তাহে জাইকা ও এআইআইবির ঋণের অর্থ যোগ হবে। এতে
রিজার্ভ আরও বাড়বে। গ্রস হিসাবে জুনে রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। বিপিএম৬ অনুযায়ী ২৫ বিলিয়নের ওপরে উঠবে। দেশের অর্থনীতির জন্য যা স্বস্তির বার্তা। জানা গেছে, জাইকার অনুমোদিত প্রায় ৪২ কোটি ডলার আগামীকাল শুক্রবার পাবে বাংলাদেশ। রিজার্ভে যা দেখানো হবে আগামী রোববার। এছাড়া এআইআইবির অনুমোদিত ৪৪ কোটি ডলার পাওয়া যাবে আগামী সোমবার। পাশাপাশি ৩০ জুনের মধ্যে আরও কিছু ঋণ আসবে।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের সময় রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার। সেখান থেকে বাড়তে বাড়তে এ পর্যায়ে এসেছে। দেশের ইতিহাসে রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলার হয় ২০২২ সালের আগস্টে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
‘তুমি কি আমাকে ভালোবাসো’—সিডনির মঞ্চে হিমু-রূপার নস্টালজিয়া
রোববারের সিডনির ম্যাকুয়ারি লিংকস গলফ ক্লাব হলজুড়ে ছিল হুমায়ূন আহমেদের গল্প-উপন্যাসের পরিচিত নস্টালজিয়ার আবহ। ‘পড়ুয়ার আসর’ আয়োজিত স্মরণানুষ্ঠান ‘প্রিয় পদরেখা’ ছিল কেবল আলোচনা নয়, এ ছিল হুমায়ূনের সৃষ্টিকে অনুভব করার, তাঁর চরিত্রদের সঙ্গে আবার দেখা হওয়ার এক আবেগঘন আয়োজন। গদ্য, পদ্য, গান ও নাট্য-আলাপ মিলেমিশে মনে রাখার মতো এক আসর।
অপূর্ব এক দৃশ্যের দেখা মিলল। তরুণ শিল্পী রূপন্তি আকিদ—সিডনির বাঙালি কমিউনিটির তরুণ অভিনেত্রী। নানা সাংস্কৃতিক আয়োজনে নিয়মিত অংশগ্রহণ তাঁকে তরুণ প্রবাসী শিল্পীদের মধ্যে বিশেষভাবে পরিচিত করেছে। সেদিন তাঁর পরনে ছিল হিমুর স্বাক্ষররং নীল শাড়ি, হাতে হুমায়ূন আহমেদের ‘হিমুর আছে জল’ উপন্যাস।
রূপন্তির পাশে ছিলেন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা মাজনুন মিজান—গায়ে উজ্জ্বল হলুদ পাঞ্জাবি, হাতে ফুল। বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গন ও টেলিভিশনে দুই যুগের বেশি সময় ধরে অভিনয় করা মিজান বিশেষ করে হুমায়ূন আহমেদের নাটক, টেলিফিল্ম ও সিনেমায় কাজ করে দর্শকের মনে আলাদা জায়গা করে নিয়েছেন। বর্তমানে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় থাকলেও প্রবাসে নিয়মিত সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত আছেন এবং সিডনির শিল্পমহলে তিনি পরিচিত ও সম্মানিত মুখ।
এই নাট্য-আলাপে হিমু ও রূপার ভূমিকায় অভিনয় করেন রূপন্তি ও মিজান। তাঁদের সংলাপ, দৃষ্টিভঙ্গি আর অভিনয়ের কোমল আবেগ যেন মঞ্চে সত্যিই ফিরিয়ে আনল হিমুর হাঁটাচলার সেই নরম আলো, রূপার শান্ত উপস্থিতি আর দুজনের অদ্ভুত অনুভবের জটিল সুন্দর সম্পর্ক।
নাট্য-আলাপ শুরু হতেই মঞ্চ যেন গল্পের পাতায় পরিণত হলো। যখন তাঁদের কণ্ঠে উচ্চারিত হলো—
‘তুমি কি আমাকে ভালোবাসো?’
‘না, ভালোবাসি না...কারণ, ভালোবাসলে তো প্রাপ্তির বাসনা থাকে। আমি তোমাকে অনুভব করি।’
তখন হলজুড়ে ছড়িয়ে পড়ল নিস্তব্ধতার গভীর ঢেউ। দর্শকের চোখে ভেসে উঠল হিমু-রূপার নরম, শীতল, হৃদয়ছোঁয়া মুহূর্তগুলো।
পরিবেশ আরও আবেগময় হয়ে ওঠে পরিচিত সুরে—‘নেশা লাগিল রে, বাঁকা দুই নয়নে নেশা লাগিল রে...’
গানের সুর মিশে গিয়েছিল সিডনির প্রবাসী আবেগে—হিমুর হলুদ, নীল আর স্নিগ্ধ প্রেমের গন্ধে। ‘পড়ুয়ার আসর’-এর অন্যতম সদস্য রোকেয়া আহমেদ বলেন, ‘তাঁর হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন উপলক্ষে সিডনিতে এই আয়োজন। আমরা চাই তাঁর সৃষ্টির আলো নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে যাক। প্রবাসে থেকেও তাঁকে নতুন করে উপলব্ধি করার একটি জায়গা তৈরি করাই আমাদের লক্ষ্য।’
আরও পড়ুনগানের সুরে, মেজবানের ঘ্রাণে—সিডনি যেন এক দিনের চট্টগ্রাম১০ নভেম্বর ২০২৫একজন মুগ্ধ দর্শক অনুষ্ঠান শেষে মন্তব্য করেন, ‘মনে হচ্ছিল যেন গল্পের চরিত্ররা সত্যি সত্যি সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছে। আলোচনার প্রতিটি কথাই হৃদয় ছুঁয়ে গেল।’
রোববারের সিডনির ম্যাকুয়ারি লিংকস গলফ ক্লাব হলজুড়ে ছিল হুমায়ূন আহমেদের গল্প-উপন্যাসের পরিচিত নস্টালজিয়ার আবহ