বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) একটি মিশন শাখা হতে যাচ্ছে।

আজ রোববার রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এ তথ্য জানান।

উপদেষ্টা বলেন, ‘জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক যে অফিস ওএইচসিএইচআর, সে অফিসের একটা মিশন শাখা বাংলাদেশে ওনারা খুলতে চাইছিলেন। এ লক্ষ্যে ওনারা আলোচনা করছিলেন। এ আলোচনার একটা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এর সমোঝতা স্মারক, সেটা উপদেষ্টা পরিষদের সভায় নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়েছে।’

ওএইচসিএইচআর বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার সুরক্ষা ও উন্নয়নে কাজ করছে। সংস্থাটির প্রধান কার্যালয় সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এবং বর্তমানে হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ফলকার টুর্ক।

জাতিসংঘের এই মানবাধিকারবিষয়ক অফিসের বিষয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘ওএইচসিএইচআর জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ওপর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল। ওনাদের সঙ্গে আমাদের সরকারের অনেক দিন ধরে আলোচনা চলছিল। আলোচনার একটা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সমঝোতা স্মারক উপদেষ্টা পরিষদের সভায় নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়েছে। এটা কয়েকজন উপদেষ্টা মিলে আরেকটু পরীক্ষা করা হবে। এরপর চূড়ান্ত করে তা ফলকার টুর্কের কাছে পাঠানো হবে। ওনারা অনুমোদন করলে আশা করা যায় দ্রুতই বিষয়টি সই করা যাবে। এর ভিত্তিতে বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক একটা অফিস হবে।’

মানবাধিকার অফিসের বিষয়ে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, অফিসটা হবে প্রাথমিকভাবে তিন বছরের জন্য। তিন বছরের মধ্যে দ্বিতীয় বছর যদি দুই পক্ষ মনে করে নবায়ন হওয়া দরকার, তা হলে সেটা বিবেচনা করে দেখতে পারবে। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি আগামী দিনে এবং আমাদের সরকারের আমলেও গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে, তাহলে আমাদের যে মানবাধিকারবিষয়ক রাষ্ট্রীয় এজেন্সিগুলো আছে, পাশাপাশি ওএইচসিএইচআর যে লোকাল অফিসটাও হবে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ একটা ভূমিকা পালন করতে পারবে।’

ওএইচসিএইচআর মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে কাজ করে। সংস্থাটি বাংলাদেশে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ নিয়ে ১১৪ পৃষ্ঠার একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে গত বছরের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে সংঘটিত বিভিন্ন ঘটনার তদন্তের ভিত্তিতে, হত্যার মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করে। বিশেষ করে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্বিচার গ্রেপ্তার, আটক ও নির্যাতন এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর দমন-পীড়নের অভিযোগ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ওই সময়ে প্রায় ১ হাজার ৪০০ মানুষের মৃত্যু হতে পারে এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।

আরও পড়ুনক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে আওয়ামী লীগ সরকার নৃশংস পদক্ষেপ নিয়েছিল: ফলকার টুর্ক১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ওএইচস এইচআর ন উপদ ষ ট উল ল খ র একট

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশে হতে যাচ্ছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক মিশন শাখা: আসিফ নজরুল

বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) একটি মিশন শাখা হতে যাচ্ছে।

আজ রোববার রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এ তথ্য জানান।

উপদেষ্টা বলেন, ‘জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক যে অফিস ওএইচসিএইচআর, সে অফিসের একটা মিশন শাখা বাংলাদেশে ওনারা খুলতে চাইছিলেন। এ লক্ষ্যে ওনারা আলোচনা করছিলেন। এ আলোচনার একটা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এর সমোঝতা স্মারক, সেটা উপদেষ্টা পরিষদের সভায় নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়েছে।’

ওএইচসিএইচআর বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার সুরক্ষা ও উন্নয়নে কাজ করছে। সংস্থাটির প্রধান কার্যালয় সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এবং বর্তমানে হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ফলকার টুর্ক।

জাতিসংঘের এই মানবাধিকারবিষয়ক অফিসের বিষয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘ওএইচসিএইচআর জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ওপর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল। ওনাদের সঙ্গে আমাদের সরকারের অনেক দিন ধরে আলোচনা চলছিল। আলোচনার একটা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সমঝোতা স্মারক উপদেষ্টা পরিষদের সভায় নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়েছে। এটা কয়েকজন উপদেষ্টা মিলে আরেকটু পরীক্ষা করা হবে। এরপর চূড়ান্ত করে তা ফলকার টুর্কের কাছে পাঠানো হবে। ওনারা অনুমোদন করলে আশা করা যায় দ্রুতই বিষয়টি সই করা যাবে। এর ভিত্তিতে বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক একটা অফিস হবে।’

মানবাধিকার অফিসের বিষয়ে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, অফিসটা হবে প্রাথমিকভাবে তিন বছরের জন্য। তিন বছরের মধ্যে দ্বিতীয় বছর যদি দুই পক্ষ মনে করে নবায়ন হওয়া দরকার, তা হলে সেটা বিবেচনা করে দেখতে পারবে। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি আগামী দিনে এবং আমাদের সরকারের আমলেও গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে, তাহলে আমাদের যে মানবাধিকারবিষয়ক রাষ্ট্রীয় এজেন্সিগুলো আছে, পাশাপাশি ওএইচসিএইচআর যে লোকাল অফিসটাও হবে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ একটা ভূমিকা পালন করতে পারবে।’

ওএইচসিএইচআর মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে কাজ করে। সংস্থাটি বাংলাদেশে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ নিয়ে ১১৪ পৃষ্ঠার একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে গত বছরের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে সংঘটিত বিভিন্ন ঘটনার তদন্তের ভিত্তিতে, হত্যার মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করে। বিশেষ করে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্বিচার গ্রেপ্তার, আটক ও নির্যাতন এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর দমন-পীড়নের অভিযোগ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ওই সময়ে প্রায় ১ হাজার ৪০০ মানুষের মৃত্যু হতে পারে এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।

আরও পড়ুনক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে আওয়ামী লীগ সরকার নৃশংস পদক্ষেপ নিয়েছিল: ফলকার টুর্ক১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ