মৌলভীবাজারের দুটি সীমান্ত দিয়ে ৭১ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
Published: 3rd, July 2025 GMT
মৌলভীবাজারের দুটি সীমান্ত দিয়ে নারী ও শিশুসহ ৭১ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে বড়লেখা উপজেলার পাল্লাথল ও শ্রীমঙ্গল উপজেলার জাম্বুরাছড়া সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে।
বিজিবি সদস্যরা ওই ৭১ জনকে আটক করেছেন। এ বিষয়ে বিজিবির ৫২ ব্যাটালিয়নের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে বড়লেখার পাল্লাথল বিওপির একটি টহল দল সীমান্ত এলাকায় পাহাড়ি অঞ্চলে কিছু লোকজনকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে। পরে তাঁদের আটক করা হয়। আটক হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ১৮ শিশু, ১৫ নারী ও ১৫ জন পুরুষ।
আটক ব্যক্তিরা জিজ্ঞাসাবাদে জাননিয়েছেন, তাঁদের বাড়ি যশোর, বাগেরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বরগুনা, বরিশাল ও কুড়িগ্রাম জেলার বিভিন্ন এলাকায়। জীবিকার তাগিদে এবং চিকিৎসার জন্য তাঁরা কুড়িগ্রাম ও যশোর সীমান্ত দিয়ে বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেন। পরে ভারতের হরিয়ানা, দিল্লি ও অন্যান্য এলাকায় বসবাস করছিলেন। সম্প্রতি ভারতীয় পুলিশ তাঁদের আটক করে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে। পরে বিএসএফ তাঁদের বাংলাদেশে ঠেলে দেয়।
এ ছাড়া মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার সিন্দুরখান ইউনিয়নের জাম্বুরাছড়া সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভোরে আরও ২৩ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ। বিজিবির একটি সূত্র জানায়, তাঁদের মধ্যে ৯ শিশু, ৯ নারী ও ৫ পুরুষ রয়েছেন। বিজিবি তাঁদের আটক করে শ্রীমঙ্গলের কাকমারা বিওপিতে নিয়ে যায়। তবে তাঁদের বিস্তারিত পরিচয় এখনো জানা যায়নি।
শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ভোরে বিজিবি থেকে বিষয়টি আমাকে জানানো হয়েছে। তবে আমাদের কাছে এখনো ওই ২৩ জনকে হস্তান্তর করা হয়নি। হস্তান্তরের পর তাঁদের নাম-ঠিকানা জানা যাবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এসএফ
এছাড়াও পড়ুন:
দর্শনা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে যুবকের মৃত্যুর খবর
চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে ইব্রাহিম বাবু (৩০) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে তাঁর পরিবার। বুধবার দুপুরে দর্শনা থানার বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ৭৯ নম্বর প্রধান খুঁটির কাছে ভারতের অভ্যন্তরে গুলির এ ঘটনা ঘটে।
ইব্রাহিম বাবুর বাবা মো. নূর ইসলাম বলেন, তাঁর ছেলে বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ঘাস কাটতে সীমান্ত এলাকার মাঠে যায়। সেখানে ঘাস কাটার সময় ভুল করে ভারত অভ্যন্তরে ঢুকে পড়লে বিএসএফ তাঁকে লক্ষ্য করে পরপর দুটি গুলি ছোড়ে। এতে ঘটনাস্থলে ইব্রাহিম বাবু মারা যান।
৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো . নাজমুল হাসান সীমান্তে বিএসএফের গুলিবর্ষণের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ঝাঁঝাডাঙ্গা সীমান্তে বিএসএসফের গুলিবর্ষণের খবর পাওয়ার পরপরই ৩২ বিএসএফের কমান্ড্যান্টের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, বেশ কয়েকজন স্বর্ণ চোরাকারবারি ভারতের ২০০ মিটার অভ্যন্তরে ঢুকে পড়লে বিএসএফ তাঁদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় একজন গুলিবিদ্ধ হন এবং অন্যরা পালিয়ে যান। গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে উদ্ধার করে সেখানকার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
স্থানীয় একাধিক সূত্রের ভাষ্য, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের ঝাঁঝাডাঙ্গা গ্রামের মো. নূর ইসলামের ছেলে ইব্রাহিম বাবুসহ ৪-৫ জন দুপুর ১২টার দিকে গরুর ঘাস কাটার জন্য ভারতের সীমান্তের কাছাকাছি গালার মাঠে যান। এর কিছুক্ষণ পর স্থানীয় বাসিন্দারা পরপর দুটি গুলির শব্দ শুনতে পান। ইব্রাহিমের সঙ্গে ঘাস কাটতে যাওয়া লোকজন ফিরে এসে ইব্রাহিম বাবুর বাবাকে জানান, বিএসএফের গুলিতে তাঁর ছেলে মারা গেছেন এবং তাঁর লাশ বিএসএফ নিয়ে গেছে।
দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শহীদ তিতুমীর প্রথম আলোকে বলেন, সীমান্তে গুলিবর্ষণের খবর অনেকেই শুনেছেন। যেহেতু গুলিবর্ষণের পর ইব্রাহিম বাবু বাড়িতে ফেরেননি, এ জন্য তাঁর মা–বাবার ধারণা যে তাঁদের ছেলে মারা গেছেন। তবে গুলিবিদ্ধ লাশ দেখেছেন, এমন প্রত্যক্ষদর্শী পাওয়া যায়নি।