ওভালের সবুজ পিচে, মেঘলা আকাশ আর বৃষ্টির ব্যাঘাতে টেস্টের প্রথম দিনটাই যেন এক রুদ্ধশ্বাস নাটক হয়ে দাঁড়াল। দিন শেষে স্কোরবোর্ডে ভারতের রান ৬ উইকেটে ২০৪। কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা, করুণ নায়ার আর ওয়াশিংটন সুন্দরের অপরাজিত লড়াই।
চার পরিবর্তনে ভারতীয় একাদশে ফিরলেন করুণ নায়ার, যার ব্যাট থেকে বহুদিন পর আবারও ধরা দিলো অর্ধশতকের ঝলক। আর সঙ্গী ওয়াশিংটন সুন্দর ব্যাটে বল ঠেকিয়ে, ছোট ছোট রান তুলে ধীরে ধীরে ভারতের পতন রোধের কাজ করছিলেন।
পরপর ১৫ বার টস হারার দুর্ভাগ্য নিয়েই এদিন মাঠে নামে ভারত। ইংল্যান্ডের অধিনায়ক অলি পোপ প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন এবং তা কার্যকর করে দেখান গাস অ্যাটকিনসন। দ্রুত ফেরান যশস্বী জয়সওয়ালকে। এরপর কিছুটা স্থিরতা আসে সুদর্শন ও লোকেশ রাহুলের ব্যাটে। তবে সেটাও বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। রাহুল ফেরেন ১৪ রানে, প্লেইড-অন হয়ে।
আরো পড়ুন:
ওভালে টস হেরে ব্যাট করছে ভারত, একাদশে চার পরিবর্তন
সিরিজের শেষ ম্যাচে নেই স্টোকস, দায়িত্বে পোপ
ভারত যখন ধুঁকছিল, তখন ভরসা হয়ে ওঠেন শুভমন গিল ও সাই সুদর্শন। প্রথম সেশনে বৃষ্টির আগেই ৭২ রান তুলে উইকেট না হারিয়ে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায় দল। কিন্তু দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউট হয়ে যান ফর্মে থাকা গিল।
তৃতীয় সেশনের শুরুতেই ফের আঘাত হানে ইংল্যান্ড। জস টাঙ দুর্দান্ত লাইন ও লেংথে ফিরিয়ে দেন সুদর্শন ও রবীন্দ্র জাডেজাকে। এরপর জুরেলও বেশ আশা জাগিয়েও ফিরলেন মাত্র ১৯ রানে। স্কোর দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ১৫৩। তখন ভারতের ব্যাটিং লাইন আপ কার্যত ভেঙে পড়ে।
এমন দুঃসময়ে দলের হাল ধরেন করুণ নায়ার ও ওয়াশিংটন সুন্দর। ধৈর্য ও বিচক্ষণতায় খেলে তারা রান বাড়াতে থাকেন। করুণের ব্যাটে আসে অনবদ্য কিছু স্ট্রোক। বিশেষ করে অফ-ড্রাইভগুলি ছিল চোখজুড়ানো। ওয়াশিংটন পরিস্থিতি বুঝে খেলার ছন্দে থাকেন।
নায়ার সেই ঐতিহাসিক ট্রিপল সেঞ্চুরির পর প্রথমবার আবারও অর্ধশতক পার করলেন। ৫২ রানে অপরাজিত তিনি, সঙ্গে রয়েছেন ১৯ রানে সুন্দর। ভারতের রান ২০০ পেরুনোয় প্রথম দিন শেষে কিছুটা স্বস্তির জায়গা খুঁজে পায় টিম ইন্ডিয়া।
ম্যাচের শেষদিকে নায়ারের একটি শট থামাতে গিয়ে কাঁধে চোট পান ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডার ক্রিস ওকস। এমনিতেই বেন স্টোকস নেই, তার ওপর ওকসের চোট দলকে আরও বিপদে ফেলতে পারে। অ্যাটকিনসনের মতে, চোট গুরুতরও হতে পারে।
প্রথম দিনের শেষে ভারতের স্কোর ২০৪/৬ হলেও, যে ভঙ্গিতে করুণ নায়ার ও ওয়াশিংটন সুন্দর ক্রিজ আঁকড়ে রয়েছেন, তাতে আশা জাগতেই পারে। দ্বিতীয় দিনে তারা যদি আরও এক সেশনের মতো লড়াই চালিয়ে যেতে পারেন, তবে ম্যাচে ভারসাম্য ফেরানো সম্ভব। সব কিছু এখন নির্ভর করছে এই দুই ব্যাটসম্যানের ধৈর্য ও আত্মবিশ্বাসের ওপর।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর ণ ন য় র প রথম দ ন ন স ন দর
এছাড়াও পড়ুন:
নিশ্ছিদ্র দাপটে উরুগুয়েকে উড়িয়ে ফাইনালে ও অলিম্পিকে ব্রাজিল
দক্ষিণ আমেরিকার নারী ফুটবলে ব্রাজিল নামটা মানেই আতঙ্ক। কোপা আমেরিকার ইতিহাসের সবচেয়ে সফল দলটি এবারও সেই পরিচয় বজায় রেখেছে। মেয়েদের কোপা আমেরিকার দশম আসরের সেমিফাইনালে উরুগুয়েকে ৫-১ গোলের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে আবারও ফাইনালে জায়গা নিশ্চিত করেছে সেলেসাও নারীরা। শুধু তাই নয়, এই জয় তাদের ২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিকের টিকিটও নিশ্চিত করেছে।
বাংলাদেশ সময় বুধবার অনুষ্ঠিত ম্যাচে মাঠের প্রতিটি বিভাগেই ছিল ব্রাজিলের মেয়েদের নিরঙ্কুশ আধিপত্য। কোচ রদ্রিগো পাস দেলগাদোর কৌশলে দলটি প্রথমার্ধেই তিন গোল করে উরুগুয়েকে প্রায় ধরাশায়ী করে দেয়। যদিও উরুগুয়ে একটি গোল শোধ দেয় দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে, কিন্তু খেলায় ফিরতে পারেনি তারা। বরং নিজেদের একজন খেলোয়াড় লাল কার্ড দেখায় দলটি আরও বিপাকে পড়ে। এর সুযোগ নিয়ে ব্রাজিল আরও দুই গোল করে ব্যবধান বাড়িয়ে নেয়।
ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণে ছিল ব্রাজিল। ১১তম মিনিটে মার্তার দুর্দান্ত ক্রস থেকে আমান্দা গুতিয়েরেসের হেডে আসে প্রথম গোল। দুই মিনিটের মাথায় গিও গারবেলিনির গোলের মাধ্যমে ব্যবধান হয় দ্বিগুণ। এরপর ২৬ মিনিটে মার্তা পেনাল্টি থেকে তৃতীয় গোল করেন। বিরতিতে যাওয়ার আগেই ম্যাচ কার্যত নিশ্চিত করে ফেলে ব্রাজিল।
আরো পড়ুন:
রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে ভারত-চীন-ব্রাজিলকে হুঁশিয়ারি ন্যাটোর
ব্রাজিলের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের
দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা মন্থর ব্রাজিলের ছন্দে সুযোগ নিয়ে উরুগুয়ে একটি গোল শোধ দেয়। কিন্তু ৬৫ মিনিটে আমান্দা ফ্রি-কিক থেকে নিজের দ্বিতীয় এবং দলের চতুর্থ গোল করেন। এরপর ৮৬ মিনিটে বদলি খেলোয়াড় দুদিনিয়ার অসাধারণ শটে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৫-১। উরুগুয়ের গোলরক্ষক সেই শট ঠেকানোর কোনো সুযোগই পাননি।
উল্লেখ্য, কোপার অন্য সেমিফাইনালে টাইব্রেকারে আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে কলম্বিয়া। ফলে আগামী শনিবার রাতে (২ আগস্ট) ফাইনালে মুখোমুখি হবে ব্রাজিল ও কলম্বিয়া। দুই দলই এখন পর্যন্ত অপরাজিত। গ্রুপ পর্বে তাদের মধ্যে হওয়া ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছিল, ফলে ফাইনাল হতে যাচ্ছে এক রোমাঞ্চকর লড়াই।
ব্রাজিল যেখানে পাঁচ ম্যাচে চারটি জয় ও একটি ড্র নিয়ে এগিয়ে, সেখানে কলম্বিয়া তিনটি ম্যাচ জিতেছে ও দুটি ড্র করেছে। দুই দলের আক্রমণভাগ, রক্ষণ, এবং মিডফিল্ড; সব বিভাগেই শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা আশা করা যাচ্ছে।
ঢাকা/আমিনুল