‘আমরা এ দেশ থেকে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি তুলে দিতে চাই’
Published: 2nd, September 2025 GMT
এ দেশ থেকে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি তুলে দিতে চান বলে জানিযেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব রাশেদ মন্ডল।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বেরোবিতে নারী নিপীড়ন ও হুমকির প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।
আরো পড়ুন:
আবেদনের যোগ্যতা ছাড়াই ১২ বছর ধরে শিক্ষকতা, তদন্তে কমিটি গঠন
বেরোবির হলের খাবারে মিলল বড় পোকা
এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে আবু সাঈদ চত্বর ঘুরে পুনরায় সেখানে গিয়ে সমাবেশ করেন শাখা ছাত্রদলে নেতাকর্মীরা। কেন্দ্রীয় ঘোষণা অনুযায়ি হিসেবে তারা এ প্রতিবাদী কর্মসূচির আয়োজন করে।
সমাবেশে শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব রাশেদ মন্ডল বলেন, “ছাত্রশিবির নানা বট আইডির মাধ্যমে নারীদের নানারকম হেনস্থা করে। তাদের এই হেনস্থা আর অনলাইনে নেই। এখন তারা ধর্ষণের হুমকি দেয়। তারা পাকিস্তানে আদর্শ লালন করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় এরাই আমাদের মা-বোনদের পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছিল। তারা আসলে রাজাকারদের দোসর এবং তারা রাজাকারদের সমর্থন করে। তাই আমরা এই ছাত্রশিবির এবং জামায়াতে ইসলামের রাজনীতি বাংলাদেশ থেকে তুলে দিতে চাই।”
তিনি বলেন, “আমরা মনে করি, একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধে জামায়াত ও শিবির প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেছিল। তারা তাদের কর্মী আলী হোসেনকে অস্বীকার করছে। এটা তাদের গুপ্ত রাজনীতির ধারা। আমরা চাই, তারাই গুপ্ত রাজনীতির ধারা ভেঙে ফেলুক।”
ছাত্রদলের আহ্বায়ক আল আমিন ইসলাম বলেন, “ছাত্রশিবিরের এক কর্মী একাত্তরের ধর্ষকের চেতনাকে লালন করে এক বোনকে হুমকি দিয়েছে। এই জামায়াত-শিবির ৭১ এ আমাদের মা বোনদের পাকিস্তানির হাতে তুলে দিয়েছে ধর্ষণ করেছে। আমরা মনে করেছিলাম ২৪ পরবর্তী সময় তারা ক্ষমা চেয়ে তাদের রাজনীতি শুরু করবে। কিন্তু তাদের মধ্যে সেই স্বাধীনতাবিরোধী চরিত্র, ধর্ষকদের চরিত্র এখনো যায়নি।”
ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল র র জন ত ছ ত রদল
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন এম এন লারমা
মানবেন্দ্র নারায়ণ (এম এন) লারমাই দেশে প্রথম আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে বৈজ্ঞানিকভাবে চিহ্নিত করেছিলেন। তিনি প্রথম দেশে কাঠামোগতভাবে আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে স্পষ্ট করেন। একটি বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন তিনি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য এম এন লারমার ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
‘বিপ্লবী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮৬ম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন কমিটি’ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।
আলোচনা সভায় লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, ১৯৫৫-৬৫ সালের মধ্যে তৈরি হওয়া ‘বাইনারি বিভাজন’ পরবর্তীকালে প্রতিষ্ঠা করেছে বাংলাদেশে সরকার। ‘বাইনারি’ মনস্তত্ত্বকে এখনো এই দেশে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। এম এন লারমা ‘বাঙালি হেজিমনি’র বিরুদ্ধে আত্মপরিচয়ের বয়ান বাঁচিয়ে রাখতে তৎকালে জোরালো প্রতিবাদ করেছিলেন।
জেএসএসের কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খীসা বলেন, কাপ্তাই বাঁধ না করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়েই ছাত্র এম এন লারমার প্রতিবাদী জীবন শুরু হয়। চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের পর যে বৈষম্যহীন, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের কথা বলা হচ্ছে, এম এন লারমা ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নকালেই এসব বিষয় নিয়ে জোরালো বক্তব্য দিয়েছিলেন।
দীপায়ন খীসা বলেন, ‘সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন বা জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কখনো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের সঙ্গে সংলাপ করেনি। আমরাও এই দেশের অংশ। তাহলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের কেন কোনো সংলাপে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানানো হলো না?’ তিনি বলেন, চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদেরও অংশীদারত্ব আছে। কিন্তু অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে তাদেরই ভুলে গেল এই সরকার।
সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন বলেন, ‘বাঙালি হয়ে যাও’ কথাটার পেছনে বাঙালি মুসলিমদের জাত্যভিমানের ব্যাপারটি রয়েছে। এম এন লারমা বাংলাদেশের মধ্যে থেকে নিজেদের অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পরবর্তীকালে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’ নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শান্তিময় চাকমার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের অর্থ সম্পাদক মেইনথিন প্রমীলা, সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অং শোয়ে সিং মারমা।
অনুষ্ঠানটি শুরু হয় এম এন লারমাকে সম্মান জানিয়ে কবিতা পাঠের মাধ্যমে। কবিতা পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রেই চাকমা ও লাল নিকিম বম। কবিতা আবৃত্তির পর এম এন লারমার জীবনবৃত্তান্ত পাঠ করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিয়া চাকমা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক হিরণ মিত্র চাকমা, জেএসএসের কেন্দ্রীয় স্টাফ সদস্য অনন্ত বিকাশ ধামাই, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শান্তিদেবী তঞ্চঙ্গ্যা, পিসিপি ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি জগদীশ চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা।