জমিয়ত নেতা মুশতাকের মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার ১
Published: 8th, September 2025 GMT
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কার্যনির্বাহী সদস্য ও সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সহ-সভাপতি মাওলানা মুশতাক আহমদ গাজীনগরীর (৫২) রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় দলটির অপর পক্ষের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) ভোরে সিলেট থেকে এম আব্দুল হাফিজ (৪০) নামে ওই নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে বিকেলে দিরাই আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক সাফায়েত সালাম তাকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।
আরো পড়ুন:
সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান গ্রেপ্তার
খুলনায় মহিলা লীগ নেত্রী গ্রেপ্তার
এর আগে, গ্রেপ্তার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত বুধবার ( ১০ সেপ্টেম্বর) রিমান্ড শুনানীর তারিখ নির্ধারণ করেছেন।
জমিয়ত দলীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ২ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে মাওলানা মুশতাক ফোন করে তার স্ত্রী রুবি বেগমকে জানিয়েছিলেন, ১ ঘণ্টার মধ্যে বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু ১ ঘণ্টা পর বাড়িতে না ফিরলে তার স্ত্রী রুবি বেগম কল দিলে মোবাইলটি বন্ধ পান। কিছু সময় অপেক্ষা করে মোবাইল নম্বর বন্ধ ও বাড়িতে না ফেরায় স্বজনের কাছে স্বামীর খোঁজ নেন রুবি বেগম।
কিন্তু মুশতাক গাজীনগরীর কোনো খোঁজ না পেয়ে পরেরদিন বুধবার শান্তিগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন রুবি বেগম। নিখোঁজের তিনদিন পর শুক্রবার সকালে দিরাই উপজেলার শরিফপুর ইট ভাটা এলাকার নদীতে মাওলানা মুশতাকের ভাসমান মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
এদিকে, মাওলানা মুশতাক আহমদ গাজীনগরীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে খুনের অভিযোগ তুলে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে জেলাব্যাপী নানা বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ খুনীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে সুনামগঞ্জের সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ করে সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কের দিরাই সড়ক মোড়ে ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেন বিক্ষুব্ধরা।
এ ঘটনায় মুশতাকের স্ত্রী রুবি বেগম বাদী হয়ে রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে দিরাই থানায় হত্যা মামলা দায়ের করলে পুলিশ সিলেট শহর থেকে আব্দুল হাফিজকে গ্রেপ্তার করে।
আব্দুল হাফিজ গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়লে সুনামগঞ্জ আদালত প্রাঙ্গণে জড়ো হন জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষক ও ছাত্ররা। বিকালে গ্রেপ্তার আব্দুল হাফিজকে সুনামগঞ্জ আদালতে নিয়ে আসার সময় উত্তেজনা দেখা দেয়।
এ সময় তারা মুশতাক গাজীনগরীর হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ করেন ও আসামিকে উদ্দেশ্য করে ডিম ছুড়েন।
গ্রেপ্তারকৃত আব্দুল হাফিজ দরগাপুর গ্রামের আলিফ পাঠানের ছেলে। তিনি জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলা জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক এবং সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর-শান্তিগঞ্জ) আসনে জমিয়তের একাংশের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী সৈয়দ তালহা আলমের রাজনৈতিক উপদেষ্টা।
বিষয়টি রাইজিংবিডিকে নিশ্চিত করে সুনামগঞ্জ আদালত পুলিশ পরিদর্শক মো.
ঢাকা/মনোয়ার/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স প ট ম বর গ জ নগর র স ন মগঞ জ ম শত ক ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’
তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’
আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’
ঢাকা/আসাদ/রাজীব