দেশজুড়ে জমকালো আয়োজনের জন্য পরিচিত বাগেরহাট সদর উপজেলার হাকিমপুর গ্রামের আলোচিত সিকদারবাড়ি দুর্গামন্দিরে এবারও হচ্ছে না দুর্গোৎসব। গত বছরের মতো এবছরও পূজার কোনো আয়োজন থাকছে না বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।

২০১১ সালে ২৫১টি প্রতিমা স্থাপনের মধ্য দিয়ে সিকদারবাড়িতে দুর্গোৎসবের যাত্রা শুরু হয়। এরপর প্রতিবছরই মহাধুমধামে পূজা পালিত হয়ে আসছিল। ২০১৯ সালে সর্বোচ্চ ৮০১টি প্রতিমা স্থাপন করা হয়েছিল।

করোনার জন্য ২০২০ সালে সীমিত আকারে পূজা হলেও সর্বশেষ ২০২৩ সালে ফের ৫০১টি প্রতিমা স্থাপন করে জমকালো পূজা উদযাপন করা হয়। প্রতিমার নান্দনিক কারুকাজ, ঢাক-ঢোল, ধুনুচি নাচ আর আলোকসজ্জা দেখতে দেশ-বিদেশ থেকে হাজারো দর্শনার্থী ভিড় জমাতেন সিকদার বাড়িতে। পূজাকে ঘিরে বসত মেলা, আর ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের মিলনমেলা বসত সেখানে।

আয়োজক লিটন সিকদার বলেন, ‘‘২৪ সালের জুলাই আন্দোলনে অনেক মানুষের প্রাণহানি হয়েছিল। তখন কারো মন ভালো ছিল না, তাই গত বছর পূজা হয়নি। পারিবারিক কারণে এবছরও পূজার আয়োজন থাকছে না।’’

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের বাগেরহাট জেলা শাখার আহবায়ক মোহনলাল হালদার বলেন, ‘‘লিটন সিকদারের বাড়িতে পূজার আয়োজন হচ্ছে না। তবে এ বছর জেলায় ৬০৫টি মণ্ডপে অত্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। মা দুর্গা গজে চড়ে আগমন করবেন এবং দোলায় চড়ে বিদায় নেবেন। পূজায় বিশ্ববাসীর শান্তি কামনা করছি।’’

ঢাকা/শহিদুল/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ম্যানহোল থেকে ভেসে আসছিল চিৎকার, ঢাকনা খুলে ‘নিখোঁজ’ নারীকে উদ্ধার

হাঁটতে যাচ্ছেন বলে গত বুধবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ময়মনসিংহ নগরীর জেল রোড এলাকার বাড়ি থেকে বের হন নিলুফার ইয়াসমিন (৩৮)। এরপর তিন দিন ধরে বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ওই নারীকে পাওয়া যাচ্ছিল না। এ ঘটনায় তাঁর বাবা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এর মধ্যে ম্যানহোলের ভেতর থেকে তাঁকে জীবিত উদ্ধার করে শনিবার মধ্যরাতে বাড়িতে দিয়ে যান কয়েক ব্যক্তি। এ ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও নারীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নিলুফার ইয়াসমিন নগরের জেল রোড এলাকায় পরিবারের সঙ্গে বসবাস করেন। তিনি নগরের আনন্দ মোহন কলেজ থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর শেষে ২০১৩ সালের দিকে জেলার ঈশ্বরগঞ্জ আইডিয়াল কলেজে প্রভাষক হিসেবে চাকরিও নেন। কিন্তু স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ ও নবজাতক সন্তানের মৃত্যুর পর মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন তিনি। এর পর থেকে মা–বাবার সঙ্গে বসবাস করছিলেন। তাঁর বাবা লিয়াকত আলী বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে হিসাবরক্ষক পদে চাকরি শেষে অবসর জীবন যাপন করছেন।

আজ সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় নীরবতা। এ সময় নিলুফার ইয়াসমিনকে ওষুধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়। তাঁর বাবা লিয়াকত আলী বলেন, বুধবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে তাঁর মেয়ে হাঁটতে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হন। এরপর আর তাঁর খোঁজ না মেলায় বৃহস্পতিবার থানায় একটি জিডি করেন। আশপাশ ও সম্ভাব্য স্থানে খোঁজাখুঁজি করে কোথাও মেয়েকে পাওয়া যাচ্ছিল না। ওই অবস্থায় শনিবার রাত একটার দিকে কয়েকজন লোক তাঁর মেয়েকে বাসায় দিয়ে যান।

লিয়াকত আলী আরও বলেন, ‘লোকজন জানিয়েছেন, আমার মেয়ে ম্যানহোলের ভেতরে আটকা ছিল। কীভাবে আমার মেয়ে সেখানে পড়েছে তা বলতে পারছি না। আমার মেয়ের মানসিক সমস্যা থাকায় প্রায়ই এভাবে বাসা থেকে বের হয়ে যেত। কিন্তু তিন-চার মাস ধরে ওষুধে কিছুটা সুস্থ থাকায় বাসা থেকে বের হতো না। ওই দিনই বের হয়ে যায়। আমার মেয়ে ম্যানহোলে তিন দিন ধরে না তিন ঘণ্টা ধরে পড়ে ছিল, তা বলতে পারছি না।’

ময়মনসিংহ নগরের জেল রোড এলাকায় ম্যানহোলের ঢাকনাটি খোলে উদ্ধার করা হয় নিলুফার ইয়াসমিনকে

সম্পর্কিত নিবন্ধ