বন্দরে অগ্নিকান্ডে হোসিয়ারী মার্কেট পুড়ে ছাই
Published: 26th, September 2025 GMT
বন্দর মাদরাসার পাশে অগ্নিকাণ্ডে হোসিয়ারী মার্কটের তিনটি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে অন্তত ১২ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্তদের। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর ) দুপুর ১২টার দিকে বন্দর রেললাইন লাইন শাহজালালমাদরাসার পাশে কয়েকটি দোকানে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
ক্ষতিগ্রস্তদের বরাত দিয়ে স্থানীয় জামায়াত নেতা কালাম জানান, দুপুরে জুম্মার নামাযের পূর্বে হঠাৎ করে বন্দর রেললাইন সড়কের পাশে হোসিয়ারী দোকানের নিচ থেকে একটি দোকানে আগুন জ্বলতে দেখে স্থানীয় লোকজন দৌড়াদৌড়ি করতে থাকে।
মুহুর্তের মধ্যে আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে রুবেল,শাহজাহান,জুলহাসসহ ৩ মালিকের ৩ টি হোসিয়ারীর দোকানে থাকা মেশিন,থানকাপড়ের মালামালসহ ও একটি রিক্সার গ্যারেজ এবং বাধন বিরিয়ানী হাউজ নামে আরো একটি দোকান পুড়ে যায়। স্থানীয়দের সংবাদে বন্দর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে এসে ১০ মিনিটের প্রচেষ্ঠায় আগুন নিবারন করতে সক্ষম হন।
বন্দর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের সাব ইন্সপেক্টর ফারুক মিয়া বলেন, ‘আমরা ১৫ মিনিটের মধ্যে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে দুটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাই এবং ১০ মিনিটের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। এতে আনুমানিক কত টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা তদন্তের পর ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ ও আগুন লাগার কারণ জানা যাবে।’
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
‘তুমি কি আমাকে ভালোবাসো’—সিডনির মঞ্চে হিমু-রূপার নস্টালজিয়া
রোববারের সিডনির ম্যাকুয়ারি লিংকস গলফ ক্লাব হলজুড়ে ছিল হুমায়ূন আহমেদের গল্প-উপন্যাসের পরিচিত নস্টালজিয়ার আবহ। ‘পড়ুয়ার আসর’ আয়োজিত স্মরণানুষ্ঠান ‘প্রিয় পদরেখা’ ছিল কেবল আলোচনা নয়, এ ছিল হুমায়ূনের সৃষ্টিকে অনুভব করার, তাঁর চরিত্রদের সঙ্গে আবার দেখা হওয়ার এক আবেগঘন আয়োজন। গদ্য, পদ্য, গান ও নাট্য-আলাপ মিলেমিশে মনে রাখার মতো এক আসর।
অপূর্ব এক দৃশ্যের দেখা মিলল। তরুণ শিল্পী রূপন্তি আকিদ—সিডনির বাঙালি কমিউনিটির তরুণ অভিনেত্রী। নানা সাংস্কৃতিক আয়োজনে নিয়মিত অংশগ্রহণ তাঁকে তরুণ প্রবাসী শিল্পীদের মধ্যে বিশেষভাবে পরিচিত করেছে। সেদিন তাঁর পরনে ছিল হিমুর স্বাক্ষররং নীল শাড়ি, হাতে হুমায়ূন আহমেদের ‘হিমুর আছে জল’ উপন্যাস।
রূপন্তির পাশে ছিলেন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা মাজনুন মিজান—গায়ে উজ্জ্বল হলুদ পাঞ্জাবি, হাতে ফুল। বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গন ও টেলিভিশনে দুই যুগের বেশি সময় ধরে অভিনয় করা মিজান বিশেষ করে হুমায়ূন আহমেদের নাটক, টেলিফিল্ম ও সিনেমায় কাজ করে দর্শকের মনে আলাদা জায়গা করে নিয়েছেন। বর্তমানে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় থাকলেও প্রবাসে নিয়মিত সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত আছেন এবং সিডনির শিল্পমহলে তিনি পরিচিত ও সম্মানিত মুখ।
এই নাট্য-আলাপে হিমু ও রূপার ভূমিকায় অভিনয় করেন রূপন্তি ও মিজান। তাঁদের সংলাপ, দৃষ্টিভঙ্গি আর অভিনয়ের কোমল আবেগ যেন মঞ্চে সত্যিই ফিরিয়ে আনল হিমুর হাঁটাচলার সেই নরম আলো, রূপার শান্ত উপস্থিতি আর দুজনের অদ্ভুত অনুভবের জটিল সুন্দর সম্পর্ক।
নাট্য-আলাপ শুরু হতেই মঞ্চ যেন গল্পের পাতায় পরিণত হলো। যখন তাঁদের কণ্ঠে উচ্চারিত হলো—
‘তুমি কি আমাকে ভালোবাসো?’
‘না, ভালোবাসি না...কারণ, ভালোবাসলে তো প্রাপ্তির বাসনা থাকে। আমি তোমাকে অনুভব করি।’
তখন হলজুড়ে ছড়িয়ে পড়ল নিস্তব্ধতার গভীর ঢেউ। দর্শকের চোখে ভেসে উঠল হিমু-রূপার নরম, শীতল, হৃদয়ছোঁয়া মুহূর্তগুলো।
পরিবেশ আরও আবেগময় হয়ে ওঠে পরিচিত সুরে—‘নেশা লাগিল রে, বাঁকা দুই নয়নে নেশা লাগিল রে...’
গানের সুর মিশে গিয়েছিল সিডনির প্রবাসী আবেগে—হিমুর হলুদ, নীল আর স্নিগ্ধ প্রেমের গন্ধে। ‘পড়ুয়ার আসর’-এর অন্যতম সদস্য রোকেয়া আহমেদ বলেন, ‘তাঁর হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন উপলক্ষে সিডনিতে এই আয়োজন। আমরা চাই তাঁর সৃষ্টির আলো নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে যাক। প্রবাসে থেকেও তাঁকে নতুন করে উপলব্ধি করার একটি জায়গা তৈরি করাই আমাদের লক্ষ্য।’
আরও পড়ুনগানের সুরে, মেজবানের ঘ্রাণে—সিডনি যেন এক দিনের চট্টগ্রাম১০ নভেম্বর ২০২৫একজন মুগ্ধ দর্শক অনুষ্ঠান শেষে মন্তব্য করেন, ‘মনে হচ্ছিল যেন গল্পের চরিত্ররা সত্যি সত্যি সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছে। আলোচনার প্রতিটি কথাই হৃদয় ছুঁয়ে গেল।’
রোববারের সিডনির ম্যাকুয়ারি লিংকস গলফ ক্লাব হলজুড়ে ছিল হুমায়ূন আহমেদের গল্প-উপন্যাসের পরিচিত নস্টালজিয়ার আবহ