কুয়েতে বর্তমানে তিন লাখের বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মরত, যাঁরা দেশের অর্থনীতির মূল ভিত্তি রেমিট্যান্স যোদ্ধা হিসেবে পরিচিত। দিন-রাত কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তাঁরা বাংলাদেশকে বিশ্ব মঞ্চে টিকিয়ে রেখেছেন। এই রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের সেবা নিশ্চিত করার দায়িত্ব আমাদের সবার।

সেবার ক্ষেত্রে বিরাজমান সমস্যা ও চ্যালেঞ্জসমূহ:

কুয়েতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে প্রবাসীরা প্রধানত পাসপোর্ট নবায়ন (ই-পাসপোর্ট সেবা), জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি), জন্মনিবন্ধন, ভিসা সত্যায়ন এবং আউট পাস (ট্রাভেল পারমিট), এ ছাড়া আরও অনেক অত্যাবশ্যকীয় সেবা পেয়ে থাকেন। তবে বর্তমানে সেবার ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত চ্যালেঞ্জগুলো লক্ষ করা যাচ্ছে:

১.

অতিরিক্ত ভিড় ও দীর্ঘ অপেক্ষা: ই-পাসপোর্ট সেবা চালু হওয়ার পর থেকে দূতাবাসের কর্মীরা যে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন, তা প্রশংসনীয়। তবু প্রবাসীদের দূতাবাসে গিয়ে প্রচুর ভিড় এবং দীর্ঘ লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। আর ই-পাসপোর্ট আবেদনপ্রক্রিয়া আরও বেশি কঠিন, যা বেশির ভাগ সময় অনলাইনে অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাওয়া যায় না, অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেলেও চার-পাঁচ মাস পরে পাওয়া যাচ্ছে।

২. ছুটির কারণে কার্যদিবস সীমিত হওয়া: কুয়েতপ্রবাসীদের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, দূতাবাসের ছুটির তালিকা।

যেসব কারণে বাংলাদেশ দূতাবাস, কুয়েত বন্ধ থাকে

★ কুয়েতের সাপ্তাহিক ছুটি: প্রতি শুক্র ও শনিবার।

★ বাংলাদেশের সব সরকারি ছুটি।

★ কুয়েতের সব সরকারি ছুটি।

এই অতিরিক্ত ছুটির কারণে কার্যকর সেবার দিনগুলো অত্যন্ত সীমিত হয়ে যায়, যার ফলে সেবাপ্রাপ্তিতে ব্যাপক বিলম্ব ঘটছে। একজন প্রবাসী কর্মজীবীর পক্ষে কাজের দিনে ছুটি নিয়ে দূতাবাসে যাওয়া প্রায়ই কঠিন।

কর্তৃপক্ষের কাছে বিনীত আবেদন, আমরা স্বীকার করি যে একটি দেশের দূতাবাসকে উভয় দেশের সরকারি ছুটি মেনে চলতে হয়। তবে প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের বিশেষ এবং জরুরি প্রয়োজন বিবেচনা করে, আমরা বাংলাদেশ সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে বিনীতভাবে আবেদন জানাচ্ছি যেন এই নিয়মে একটি বিশেষ পরিবর্তন আনা যায় কি না?

প্রবাসীদের সুবিধার্থে আমাদের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা

১. সাপ্তাহিক ছুটির দিনে (বিশেষ করে শুক্রবার) আংশিক সেবা চালু রাখা: কর্মজীবীদের কথা মাথায় রেখে, প্রতি শুক্রবার দিনটিতে দূতাবাসের রুটিন কাজের চাপ কিছুটা কমিয়ে শুধু পাসপোর্ট সেবা অথবা নির্দিষ্ট কিছু জরুরি সেবা সীমিত সময়ের জন্য চালু রাখা যেতে পারে। এর জন্য কর্মীদের বিশেষ ভাতার মাধ্যমে অতিরিক্ত কাজের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

২. কর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধি এবং সেবার ডিজিটাল রূপায়ন: ই-পাসপোর্টের চাহিদা বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে দূতাবাসে প্রয়োজনে অতিরিক্ত কর্মী (Staff) নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে এবং সেবার প্রক্রিয়াকে আরও ডিজিটাল ও দ্রুততর করার উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে।

৩. মোবাইল কনস্যুলার সেবা বৃদ্ধি: কুয়েতের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘন ঘন মোবাইল কনস্যুলার সেবা বা ক্যাম্প আয়োজন করলে দূতাবাস ভবনের ওপর চাপ কমবে এবং প্রবাসীরা সহজেই কাছাকাছি সেবা নিতে পারবেন। যদিও এই সেবাটি আগে কিছুদিন ছিল, তবে এখন সেবা বন্ধ অনেক দিন ধরে।

আমরা বিশ্বাস করি, যেখানে সরকার প্রবাসীদের ‘রেমিট্যান্স যোদ্ধা’ হিসেবে সর্বোচ্চ সম্মান দিচ্ছে, সেখানে তাদের অত্যাবশ্যকীয় সেবাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে এই বিলম্ব ও ভোগান্তি কাম্য নয়।

প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আরও আন্তরিক ও কার্যকর সেবা নিশ্চিত করার জন্য এই নিয়মগুলো পুনর্বিবেচনা করার জন্য আপনার সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আপনাদের দ্রুত ও ইতিবাচক সাড়া কামনা করি।

মো. সাইফুল ইসলাম সামাজিক কর্মী, কুয়েতপ্রবাসী বাংলাদেশি

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রব স দ র র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

আবারও জামায়াতে ইসলামীর সমালোচনায় হেফাজত আমির

আবারও জামায়াতে ইসলামীর সমালোচনা করেছেন হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের হাটহাজারী পার্বতী মডেল সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে শানে রেসালত সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই সমালোচনা করেন।

হেফাজত আমির আগামী সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীকে ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানান। হেফাজতে ইসলাম হাটহাজারী উপজেলা শাখা এই সম্মেলনের আয়োজন করে।

হেফাজতে ইসলামের আমির বলেন, কুফরি যাতে প্রতিষ্ঠা করতে না পারে, সামনের নির্বাচনে ভোট দেওয়া যাবে না। যারা পূজা আর রোজা একই বলে, এগুলো কি ইসলাম।

আল্লামা শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, নবী ও রাসুলদের দেখানো সোজা রাস্তায় চলতে হবে। তাহলে দুনিয়া ও আখিরাত ঠিক থাকবে। সাহাবা কেরাম সত্যের মাপকাঠি। তাঁদের দেখানো রাস্তা সোজা রাস্তা।

জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে হেফাজত আমিরের এই বক্তব্যের বিষয়ে চট্টগ্রাম নগর জামায়াতে ইসলামীর তিনজন দায়িত্বশীল নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে তাঁরা কেউ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ