শরীয়তপুরের নড়িয়ায় কীর্তিনাশা নদীতে যাত্রীবাহী একটি ট্রলারডুবে গেছে। যাত্রীদের সবাই সাঁতরে তীরে উঠে আসায় কেউ আহত হননি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী থাকায় ট্রলারটি পাশ দিয়ে যাওয়া বাল্কহেডের ঢেউয়ের ধাক্কায় যুবে যায়।

সোমবার (১৩ অক্টোবর) সকালে ভাষা সৈনিক গোলাম মাওলা সেতুর কাছে ঘটনাটি ঘটে।

আরো পড়ুন:

নৌকা বাইচ দেখতে আড়িয়াল বিলে হাজারো জনতার ঢল

দৌলতপুরে পদ্মায় নৌকাডুবি, শিশুসহ ১৫ যাত্রী উদ্ধার

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে কীর্তিনাশা নদীর ওপর ভাষা সৈনিক গোলাম মাওলা সেতুর নির্মাণ কাজ চলমান। নির্মাণকাজের সুবিধার্থে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে পুরোনো সেতুটি ভেঙে ফেলা হয়। এরপর থেকে দুই পাড়ের বাসিন্দাদের নদী পারাপারের জন্য ট্রলারের ব্যবস্থা করা হয়। আজ সকালে নদীটির উত্তর তীর থেকে দক্ষিণপাড়ে যাত্রী পারাপার করছিল ইঞ্জিন চালিত ছোট একটি ট্রলার। ১৬ জন যাত্রী নিয়ে ট্রলারটি পাড়ের কাছাকাছি আসলে বাল্কহেডের ঢেউয়ের ধাক্কায় সেটি ডুবে যায়। পরে যাত্রীরা সাঁতরে নিজেদের প্রাণ রক্ষা করেন। 

শিহান নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “ট্রলারের যাত্রীর ধারণক্ষমতা ১০ জন, উঠানো হয়েছিল ১৫ থেকে ২০ জনকে। ট্রলারটি পাড়ের একদম কাছাকাছি এসে ডুবে যায়। ট্রলারে থাকা যাত্রীদের সবাই সাঁতার জানায় কোনো অঘটন ঘটেনি। আমরা চাই এখানকার ব্রিজটি দ্রুত চালু করা হোক। তাহলে এলাকাবাসী আর ভোগান্তির শিকার হবেন না।”

নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল কাইয়ুম খান বলেন, “আমরা খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে যাই। ইজারাদারের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি, ট্রলারটিতে ধারণ ক্ষমতার চাইতে বেশি যাত্রী উঠানো হয়েছিল, ফলে সেটি বাল্কহেডের ঢেউয়ের ধাক্কায় ডুবে যায়। এ ঘটনায় কেউ হতাহত বা নিখোঁজ হননি। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।” 

ঢাকা/সাইফুল/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর নদ

এছাড়াও পড়ুন:

লালন সাঁইয়ের তত্ত্ব আলোচনা, গানে গানে মুখর সন্ধ্যা

লালন সাঁইয়ের গান নিয়ে আলোচনা আর গানে এক ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠান হয়ে গেল। আজ শনিবার বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ‘নদীয়ার ভাবুকতার ইতিহাসে ফকির লালন শাহ, সংগীত ও তাত্ত্বিক পর্যালোচনা অনুষ্ঠান’–এর আয়োজন করেছিল বাংলা একাডেমি ও নবপ্রাণ আন্দোলন।

অনুষ্ঠানের নির্ধারিত সময় ছিল বিকেল চারটা। প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তাঁর পৌঁছাতে দেরি হয়। পাঁচটায় অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রধান অতিথি তাঁর বক্তৃতায় বলেন, জাতীয় পর্যায়ে লালনকে ধারণ ও উপস্থাপন করা চ্যালেঞ্জিং কাজ। এটা তিনি উপলব্ধি করেছেন জাতীয় পর্যায়ে লালন সাঁইয়ের তিরোধান দিবসের অনুষ্ঠান করতে গিয়ে। এ ক্ষেত্রে বড় বাধাটা আসে বুদ্ধিবৃত্তিক মহল থেকে, ধর্মীয় গোষ্ঠী থেকে নয়। তবু শেষাবধি সেই অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, লালন সাঁইয়ের প্রাসঙ্গিকতা ক্রমেই বাড়ছে। তাঁকে নিয়ে অনেক কাজ করার আছে। লালন সাঁইসহ আরও অনেক বিষয়ে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কাজ করা প্রয়োজন। সেই উদ্যোগ শুরু হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

প্রধান আলোচক কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার বলেন, ‘লালন সাঁই নিজেকে কখনো বাউল বলে পরিচয় দেননি। বাউল সম্পর্কে আমাদের এখানে নেতিবাচক ধারণা প্রচার করা হয়েছে। এর কুফল আমরা ভোগ করছি। লালন সাঁইয়ের গান ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তাঁর গানের ভাবের প্রতি আমরা সুবিচার করতে পারিনি।’

সভাপতির বক্তব্যে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, লালন সাঁইকে দেখার জ্ঞানতাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গি এখন অনেকটা পাল্টেছে। আগে লালনের রচনা লোকসাহিত্য হিসেবে পড়ানো হতো। এখন অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে তাঁর রচনা কবিতা বা গীতিকবিতা হিসেবে পাড়ানো হচ্ছে। তাঁর দর্শন পশ্চিমা দার্শনিকদের মতোই জ্ঞানতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে উপস্থাপন করা সম্ভব।

স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির সচিব সেলিম রেজা। ধন্যবাদ জানান কবি ও চলচ্চিত্র নির্মাতা মোহাম্মদ রোমেল।

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার

সম্পর্কিত নিবন্ধ