শাপলার জায়গায় দৃঢ় রয়েছি, অবশ্যই অর্জন করব: হাসনাত আবদুল্লাহ
Published: 19th, October 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রতীক হিসেবে শাপলার বিকল্প কোনো কিছু ভাবছেন না বলে জানিয়েছেন দলটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেছেন, শাপলা মার্কার জন্য তাঁরা তাঁদের জায়গায় দৃঢ় রয়েছেন। তাঁদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে শাপলাকে অবশ্যই তাঁরা অর্জন করবেন।
আজ রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন হাসনাত আবদুল্লাহ।
বেলা ১১টার দিকে ইসি সচিবালয়ের সচিবের সঙ্গে হাসনাত আবদুল্লাহ, এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ ও যুগ্ম সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম বৈঠক করেন। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বৈঠক চলে।
বৈঠক শেষে হাসনাত আবদুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘শাপলা ছাড়া বিকল্প কোনো অপশন নেই। আমরা বিকল্প কেন নেব? এটার আইনগত তো ব্যাখ্যা লাগবে। আমরা দেখেছি, এখন পর্যন্ত কোনো আইনগত ব্যাখ্যা, কোনো কিছুই নির্বাচন কমিশন আমাদের দিতে পারেনি। .
নির্বাচন কমিশনের আচরণের সমালোচনা করেন হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রমে মনে হয়, একটি ইনস্টিটিউশনাল অটোক্রেসি (প্রাতিষ্ঠানিক স্বৈরতন্ত্র) তৈরি হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের তালিকায় (শিডিউল) যে মার্কাগুলো রয়েছে, সেসব অন্তর্ভুক্তির কোনো নীতিমালা নেই। শাপলাকে কেন এই তালিকায় অন্তর্ভুক্তি করা হবে না, সেটারও স্পষ্ট নীতিমালা নেই। বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক দলগুলো আছে, তাদের যে মার্কাগুলো দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন সময়, কোন নীতিমালার ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছে, সেটারও স্পষ্ট নীতিমালা নেই। মধ্যযুগীয় রাজা-বাদশাহদের আচরণের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের আচার-আচরণের সাদৃশ্য রয়েছে।
শাপলা প্রতীক পাওয়ার ব্যাপারে এখনো আশাবাদী বলে উল্লেখ করেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, তাঁরা এখনো আশা রাখেন, এনসিপি শাপলা প্রতীক পাবে। নির্বাচন কমিশন বলেছে, তারা বিজ্ঞপ্তিটা দেবে। তারা (এনসিপি) বলেছে, তাদের শাপলা—সাদা শাপলা বা লাল শাপলা প্রতীক দিতে হবে। তারা (ইসি) এই কথা এ পর্যন্ত বলেনি যে শাপলা দেবে না। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কয়েক দিন আগে বলেছিলেন, তাঁরা প্রতীক বাড়াতেও পারেন অথবা কমাতেও পারেন। এনসিপি আজ ইসিকে বলে এসেছে শাপলাকে দ্রুত এনলিস্ট (তালিকাভুক্ত) করে জনগণকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ পল ক ব কল প র জন য এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইসরাইলের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ’
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেছেন, “আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কেবল গাজা ইস্যুতে সমালোচনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তারা সন্ত্রাসী এবং বিখ্যাত আইন লঙ্ঘনকারী ইসরাইল রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এখনো কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারেনি। গাজা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক আইন প্রশ্নবিদ্ধ। কেননা গাজায় ইসরায়েলের ব্যাপক ও অবিশ্বাস্যভাবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন (আইএইচএল) লঙ্ঘন, পরবর্তী দিনগুলোতে এর প্রয়োগ ও অস্তিত্ব নিয়েও প্রশ্ন তোলে।”
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) তুরস্কের চাংকিরি কারাতেকিন বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফারেন্স হলের রেক্টরেট ভবনে ‘গাজা কনফ্লিক্ট: এ ডাইং ডিক্লারেশন অফ ইন্টারন্যাশনাল ল’ (গাজা সংঘাত: আন্তর্জাতিক আইনের মৃত্যুকালীন জবানবন্দী) শীর্ষক শিরোনামে আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
‘সাজিদ হত্যার ৯০তম দিন, এরপর কি আমি?’
ইবি শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ, রেহায় পায়নি রোগীরা
তিনি অক্টোবরে গাজার সীমান্ত এলাকায় হামাসের আক্রমণের বৈধতা, গাজার উপর ইসরায়েলের আক্রমণ এবং এর বৈশিষ্ট্য, ইসরায়েলের আক্রমণ এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের লঙ্ঘন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে ইসরায়েলের আচরণ নিয়ে আলোচনা করেন।
উপাচার্য বলেন, “১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের একটি চক্রান্তের ফলে ইসরায়েল অবৈধভাবে জন্মগ্রহণকারী একটি রাষ্ট্র। গাজা সংঘাতে ইসরায়েলের আচরণ আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের অভূতপূর্ব লঙ্ঘন। ২০২৩ সাল থেকে গাজা সংঘাতে ইসরায়েলের আচরণ আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের ভিত্তি ধ্বংস করে দিয়েছে।”
আন্তর্জাতিক মানবিক আইন ও ফৌজদারি আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণকে বৈধ দাবি করে তিনি বলেন, “গাজা উপত্যকা একটি দখলকৃত অঞ্চল এবং এর জনগণ আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের অধিকারী (বিখ্যাত ফিলিস্তিনের প্রাচীর মামলায় আইসিজে-র উপদেষ্টা মতামত)। হামাসের আক্রমণ দখলদার ইসরাইলের কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে ছিল এবং তাই জাতিসংঘ সনদের ৫১ অনুচ্ছেদের অধীনে ‘আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগে’ বলা যেতে পারে। স্থায়ী দখলদারিত্ব আত্মরক্ষার অধিকারের চিরস্থায়ী চরিত্রের জন্ম দেয়।”
এ ক্ষেত্রে ইসরাইলের আচরণ মূল্যায়নে তিনি বলেন, “গাজার উপর ইসরাইলের আক্রমণ আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগে পাল্টা আক্রমণ বা আক্রমণ হিসেবে বিবেচিত হয় না। কারণ ইসরাইল দখলদার শক্তি। আইসিজের মতামত হল- আন্তর্জাতিক আইনে ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার ৫১ অনুচ্ছেদের অধিকার নেই। এটি জাতিসংঘ সনদের অনুচ্ছেদ ২(৪) লঙ্ঘন করে একটি নতুন আক্রমণ।”
উপাচার্য বলেন, “আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন (আইএইচএল) অনুসারে ইসরায়েলের আক্রমণ নিষিদ্ধ শ্রেণীর কর্মকাণ্ডের আওতায় পড়ে। এতে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে আক্রমণ, নির্বিচারে আক্রমণ, বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুর (বাসস্থান, বাজার, দোকান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য) বিরুদ্ধে আক্রমণ, মানবিক সাহায্যের উপর স্বেচ্ছাচারী বিধিনিষেধের মাধ্যমে অনাহারকে যুদ্ধের উপায় হিসেবে ব্যবহার করা, মানুষের বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য জিনিসপত্র ধ্বংস করা, মানবাধিকার কর্মীদের উপর আক্রমণ, সুরক্ষিত ব্যক্তিদের, সাংবাদিকদের হত্যা, নির্যাতন, নারীদের বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতা, বিশ্বাসঘাতক যুদ্ধ, সম্মিলিত শাস্তি, যুদ্ধবন্দীদের হত্যা, ঘোড়া-বিধ্বংসী যুদ্ধ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি ও যুদ্ধে সন্ত্রাস ইত্যাদি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন (আইএইচএল) লঙ্ঘনের শামিল।”
অনুষ্ঠান শেষে সফরের বিষয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমি খুবই অবাক হয়েছি যে বিশ্ববিদ্যালয়টি ২০০৭ সালে শুরু হয়েছিল। এত অল্প সময়ের মধ্যেই এটি আশ্চর্যজনকভাবে এগিয়েছে। বিশাল ও অটল প্রচেষ্টার মাধ্যমে একটি বিশ্ববিদ্যালয় কতদূর এগিয়ে যেতে পারে। এটিই তার বাস্তব উদাহরণ। এটি বেশ আশ্চর্যজনক যে, এই সময়ের মধ্যে আপনি আপনার শিক্ষা কার্যক্রমকে ব্যাপকভাবে প্রসারিত করেছেন এবং আপনার দেশের বাইরে থেকে অনেক শিক্ষার্থীকে আকৃষ্ট করেছেন।”
ইবি উপাচার্য তুরস্কের চাংকিরি কারাতেকিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইরাসমাস+ কেএ১৭১ আন্তর্জাতিক ক্রেডিট মবিলিটি প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণভিত্তিক ভ্রমণে অংশ নেন। ইরাসমাস সমন্বয় অফিস থেকে পাঠানো আমন্ত্রণপত্রে উপাচার্যকে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত ভ্রমণে অংশগ্রহণের কথা বলা হয়েছে।
ঢাকা/তানিম/মেহেদী