গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানিতে ডুবে দুই নারীর মৃত্যু হয়েছে। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় এ ঘটনা ঘটে।

ওই দুই নারীর নাম বিলকিস আক্তার (৩৫) ও লিপি আক্তার (৪০)। তাঁরা কাপাসিয়া উপজেলার খিরাটি দক্ষিণপাড়া গ্রামের নায়েবের বাড়ি এলাকার বাসিন্দা ও প্রতিবেশী। এ ঘটনায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরেক প্রতিবেশী সুলতানা আক্তার (৩৫)।

স্থানীয় লোকজন বলেন, ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা দুজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিলকিস আক্তারের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে নিখোঁজ লিপি আক্তারকে উদ্ধারে তৎপরতা চালায়। বিকেল পৌনে চারটায় ঘটনাস্থলের পাশেই নদের পানি থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা মো.

নাহিদ প্রথম আলোকে বলেন, আজ ভোরে বাড়ির পাশের একটি সড়ক ধসে নদের পানিতে পড়ে যায়। ধসে পড়া অংশে কিছু ছোট গাছ ছিল। নদের পানিতে গাছগুলোর সঙ্গে কচুরিপানা জমা হতে থাকে। নদের পাড়ের গ্রামের চারজন নারী কচুরিপানা সরিয়ে গাছগুলো তুলে আনতে পানিতে নামেন। এ সময় তাঁরা তলিয়ে যেতে থাকেন। একজন সাঁতরে পাড়ে উঠতে পারলেও বাকি তিনজন তলিয়ে যান। স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় দুজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে বিকেলে নিখোঁজ অপর নারীর লাশ পাওয়া যায়।

কাপাসিয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মী রবিউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার পর নিখোঁজ নারীর সন্ধানে টঙ্গী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ডুবুরি দলকে খবর দেওয়া হয়। তাঁরা উদ্ধার অভিযানে আসেন। বিকেলে নিখোঁজ ওই নারীর লাশ নদ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রব প্রথম আলোকে বলেন, দুই নারীর লাশ তাঁদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: নদ র প ন

এছাড়াও পড়ুন:

প্রস্তাবিত বাবরি মসজিদের জন্য নগদ অর্থের পাহাড়!

পশ্চিমবঙ্গে প্রস্তাবিত বাবরি মসজিদ মসজিদ নির্মাণকে ঘিরে বিপুল অনুদানের ফলে তৈরি হয়েছে কার্যত নগদ অর্থের পাহাড়। ট্রাঙ্ক ভর্তি টাকা (রুপি) এনে ঘরের মাঝে ঢালা হচ্ছে, আর চারিদিকে বসা মানুষ সেই টাকা গুনছেন।একটানা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে চলছে টাকা গোনা।

টাকা গোনার জন্য আনা হয়েছে টাকা গোনার মেশিন। টাকা ভর্তি ১১টি ট্রাঙ্ক রয়েছে। আর সেই ট্রাঙ্কে থাকা টাকা গুনতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ৩০ জনকে। টাকা গোনার এই বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে মুর্শিদাবাদের রেজিনগরে হুমায়ুন কবিরের বাড়িতে।

আরো পড়ুন:

বিজয় দিবসে কলকাতায় যাচ্ছেন সেনা-মুক্তিযোদ্ধাসহ ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দল

ভারতে নাইটক্লাবে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ২৩

অনুদানের এই টাকা জমা পড়েছে ‘পশ্চিমবঙ্গ ইসলামিক ফাউন্ডেশন অব ইন্ডিয়ার’ অধীনে। রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত যত নগদ অর্থ দান হিসাবে জমা পড়েছে, তা আলেম-ওলামাদের উপস্থিতিতে গোনা শুরু হয়। রাত ১২টার পরও চলে টাকা গোনা। তখনও পর্যন্ত ৭টি ট্রাঙ্ক খোলা হয়, যা থেকে মেলে ৩৭ লাখ টাকা। পুরো টাকা গোনার কাজ চলছে সিসিটিভির কড়া নজরদারিতে।

হুমায়ুন কবিরের দাবি, বাবরি মসজিদ নির্মাণের আগেই কতটা জনপ্রিয় তা শুধু এই অনুদানের টাকা দেখেই বোঝা যায়। তিনি আরো দাবি করেন, কেবল ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিনই কিআর কোড স্ক্যান করেই জমা পড়েছে ৯৩ লাখ টাকা। মসজিদ নির্মাণের জন্য ২ দিনেই দান হিসাবে পাওয়া গেছে অন্তত ১৫ লাখ ইট। 

গত শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিন মুর্শিদাবাদে আবারো বাবরি মসজিদের নির্মাণের জন্য শিলান্যাস করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাসপেন্ডেড বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। রবিবার নিজে হাতে ইট নিয়ে সেখানে হাজির হয়েছিলেন। সেইদিনই তিনি জানিয়েছিলেন যে, বাবরি মসজিদ তৈরি করতে খরচ হবে আনুমানিক ৩০০ কোটি টাকা। তবে টাকা নিয়ে চিন্তা করছেন না হুমায়ুন, কারণ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তিই নাকি ৮০ কোটি টাকা অনুদান দেবেন বাবরি মসজিদ তৈরির জন্য। আরো বহু মানুষ অনুদান দিচ্ছেন।

হুমায়ুন দাবি করেছেন, মুর্শিদাবাদের সঙ্গে বীরভূম, মালদাতেও ‘বাবরি’ মসজিদ তৈরির প্রস্তাব এসেছে। রামপুরহাট, সিউড়ি থেকে কিছু লোক এসে অনুরোধ করেছেন। মালদা থেকেও অনেকে যোগাযোগ করেছেন, দাবি হুমায়ুনের। বীরভূম, মালদায় ‘বাবরি’ মসজিদের প্রস্তাব বিবেচনার আশ্বাস হুমায়ুন কবীরের।

বাবরি মসজিদ নির্মাণের জন্য যে আপাতত নগদ অর্থের অভাব হবে না, তা এই বিপুল জমা অর্থ দেখেই আন্দাজ করা যাচ্ছে। তবে টাকা গোনার এমন ঘটনা সামনে আসতেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোর গুঞ্জন। সাধারণ মানুষের একাংশ হুমায়ুনের স্বচ্ছতা প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানালেও, বিরোধীরা নতুন প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে দানের উৎস, হিসাব ও আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে।

ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ