সৌরভ শুরু করেছিলেন দুই হাজার টাকায়, এখন মাসে লাখ টাকার পণ্য বেচেন
Published: 24th, November 2025 GMT
সৌরভ মণ্ডল (২৭) যখন দশম শ্রেণির ছাত্র, তখন ধরা পড়ে, জন্মগতভাবে তাঁর খাদ্যনালিতে ত্রুটি আছে। দেশে ও ভারতে চিকিৎসা করিয়ে বেঁচে থাকলেও পড়ালেখা ছাড়তে হয়। ব্যাংক কর্মকর্তা বড় ভাই তাঁকে দুই হাজার টাকা দেন। সেই টাকা দিয়েই নিজের ভাগ্য বদলে দিয়েছেন সৌরভ। এখন তাঁর তৈরি কারুপণ্য অনলাইনের মাধ্যমে দেশে–বিদেশে বিক্রি হয়।
সৌরভ মণ্ডল নেত্রকোনা সদর উপজেলার নাগড়া বাড়ইপাড়া গ্রামের মনোরঞ্জন মণ্ডল ও রিতা রানী মণ্ডলের সন্তান। দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছোট। বড় ভাই তন্ময় মণ্ডল একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন। বর্তমানে তিনি ময়মনসিংহ নগরের আর কে মিশন রোডের একটি বাসায় থাকেন।
আফ্রিকান পুতুল বানিয়ে পরিচিতিপরিবার সূত্রে জানা যায়, অসুস্থতার কারণে ২০১২ সালে দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায় সৌরভের। দেখা দেয় মেরুদণ্ডের সমস্যাও। পরের বছর থেকে তিনি ময়মনসিংহ শহরে তাঁর এক আত্মীয়ের দোকানে বসতেন। সেখানে কাজের ফাঁকে কাগজ ও ক্লে দিয়ে নিজের ঘরের জন্য তৈরি করতেন পুতুল। ২০১৯ সালে ভারত থেকে চিকিৎসা করিয়ে দেশে ফেরার পর চিকিৎসক বিশ্রামের পরাদর্শ দেন সৌরভকে। বাসায় বসে সময় কাটানো সৌরভকে তাঁর বড় ভাই কারুপণ্য বানাতে দুই হাজার টাকা দেন। শুরুতে ১২টি আফ্রিকান পুতুল বানান। একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে দেওয়ার পর ক্রেতারা বেশ আগ্রহ দেখান। একের পর এক পুতুলের জন্য অর্ডার আসতে থাকে।
আরও পড়ুন রাকিবের রঙিন মাছের খামার, মাসে আয় ৪৫ হাজার টাকা১৬ অক্টোবর ২০২৫সৌরভ কারুপণ্য তৈরির কারখানা দিয়েছেন ময়মনসিংহ সদর উপজেলার দাপুনিয়া চান্দেরবাজার সড়কে। সেখানে পাঁচ হাজার টাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে পাট দিয়ে নানা কারুপণ্য তৈরি শুরু করেন। সম্প্রতি তাঁর কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, পাট, কাগজের কার্টন, গ্লু স্টিক ও ফেভিকল ব্যবহার করে নানা কারুপণ্য তৈরি করছেন পাঁচ নারী শ্রমিক। সেখানে তৈরি হচ্ছে পুতুল, ফুলদানি, কলমদানি, টিস্যু বক্স, ওয়ালমেট, পাটের সিকা ও দেয়াল সাজানোর নানা উপকরণ।
সৌরভের কারখানায় কাজ করেন নয়জন নারী.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ডাকসু সদস্য রাফিয়ার বাড়িতে রাতে ককটেল নিক্ষেপের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪
ময়মনসিংহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সদস্য উম্মা উসওয়াতুন রাফিয়ার বাড়িতে ককটেল নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে পৃথক অভিযানে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গত বুধবার রাত তিনটার দিকে ডাকসু সদস্য উম্মা উসওয়াতুন রাফিয়ার ময়মনসিংহ নগরের ঢোলাদিয়া এলাকার বাসায় ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুনডাকসু সদস্য রাফিয়ার ময়মনসিংহের বাড়িতে গভীর রাতে ককটেল নিক্ষেপ২০ নভেম্বর ২০২৫গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন নগরের কেওয়াটখালী এলাকার মো. মাসুদ রানা (৪৫), আকুয়া বোর্ডঘর এলাকার মো. আরিফ (৩০), মো. বিপুল (২১), আকুয়া ওয়্যারলেস গেট এলাকার মো. রাজন (১৯)। চারজনই কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও কোতোয়ালি মডেল থানার সমন্বয়ে পরিচালিত যৌথ অভিযানে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতে নগরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ককটেল ছোড়ার ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেলে রাফিয়ার ভাই খন্দকার জুলকারনাইন কোতোয়ালি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। পরে সেটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, বুধবার রাত ২টা ৫০ থেকে তিনটার মধ্যে বিকট শব্দে তাঁদের বাসার সবার ঘুম ভেঙে যায়। পরে সকালে ঘুম থেকে উঠে বাসার নিচে এসে দেখা যায়, বাসার গেটের একাংশ পুড়ে কালো হয়ে আছে এবং গেটের সামনে কিছু পোড়া ছাই পাওয়া যায়। বাসার গেটের আশপাশে কেরোসিন ও পেট্রলের গন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ডাকসু নেত্রী রাফিয়ার বাসভবনের গেটে দুষ্কৃতকারীদের অগ্নিসংযোগের ঘটনাটির পরপর পুলিশ তৎপরতা শুরু করে। ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চারজনকে গ্রেপ্তার করে আজ শুক্রবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের বিষয়ে গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে এবং গ্রেপ্তারের অভিযান চলমান আছে।