খাগড়াছড়িতে কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে দুজন গ্রেপ্তার
Published: 23rd, October 2025 GMT
খাগড়াছড়িতে এক পাহাড়ি কিশোরীকে (১৫) দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার মাটিরাঙ্গায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের স্থানীয় বাসিন্দারা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করার পর তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
গ্রেপ্তার দুজনের মধ্যে একজন কিশোর; অন্যজন হলেন রনি বিকাশ ত্রিপুরা (৩২)। এ ঘটনায় জড়িত সুমন বিকাশ ত্রিপুরা (১৮) ও রিমন ত্রিপুরা (২২) নামের দুজন পলাতক রয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় কিশোরীর বড় বোন বাদী হয়ে ওই চারজনকে আসামি করে মামলা করেছেন।
দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় হওয়া মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ওই কিশোরী গত সোমবার উপজেলার একটি ইউনিয়নে বেড়াতে এসেছিল। ওই রাতে কিশোরী স্থানীয় একটি মন্দিরে শ্যামাপূজা দেখতে যায়। এক পর্যায়ে আসামিরা কিশোরীকে আরেকটি মন্দিরে পূজা দেখতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। পরে তাঁরা কিশোরীকে কৌশলে একটি বাগানে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণ করেন। সেখান থেকে রাত একটার দিকে কিশোরীকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর স্থানীয়ভাবে সালিস ডাকা হয়। পরে সেখানে রনি বিকাশ ত্রিপুরা ও ডেটল বাবু ত্রিপুরা উপস্থিত হন। ওই দুজনকে আটক করে মাটিরাঙ্গা থানা-পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
মাটিরাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় কিশোরীর বড় বোন বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। বাকি দুজনকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই শহীদের মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণ: দুই কিশোরকে ১৩ বছর করে, অন্যজনের ১০ বছরের কারাদণ্ড
পটুয়াখালীর দুমকীতে জুলাই আন্দোলনে শহীদ বাবার কবর জিয়ারত করে ফেরার পথে কলেজশিক্ষার্থীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় তিন কিশোরকে পৃথক আইনে সাজা দিয়েছেন আদালত। এদের মধ্যে দুই কিশোরকে ১৩ বছর করে, অন্যজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নীলুফার শিরিন এ রায় দেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবদুল্লাহ আল নোমান রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আদালত রায়ে উল্লেখ করেছেন, আসামিরা প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত শিশু সংশোধনাগারে থাকবে। এরপর প্রচলিত আইনে তারা অন্য আসামিদের মতো কারাগারে সাজা ভোগ করবে।
ঘটনার প্রায় সাত মাসের মধ্যে আদালত এ রায় দিয়েছেন। গত ২৮ মে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এ মামলায় মোট ১৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলায় এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে ধর্ষণের অভিযোগে ১০ বছর করে সাজা দেওয়া হয়। এ ছাড়া উভয়কে পর্নোগ্রাফি আইনে আরও তিন বছর করে সাজা দেন আদালত। অন্যদিকে পুলিশের অভিযোগপত্রে অন্তর্ভুক্ত হওয়া আরেক কিশোর আসামিকে ধর্ষণের অভিযোগে ১০ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা আন্দোলনের সময় গত বছরের ১৯ জুলাই রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন। ১০ দিন পর ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তাঁকে দুমকী উপজেলার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় বাবার কবর জিয়ারত করে নানাবাড়িতে ফেরার পথে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ওই কলেজশিক্ষার্থী। ধর্ষণের সময় এজাহারভুক্ত আসামিরা তাঁর নগ্ন ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মুখ বন্ধ রাখতে বলেন। এরপর ভুক্তভোগী তাঁর মা ও পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে ২০ মার্চ দুপুরে থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। এরপর পর্যায়ক্রমে অভিযুক্ত তিন কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে ২৬ এপ্রিল রাতে রাজধানীর শেখেরটেক এলাকার ভাড়া বাসা থেকে ওই ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। পরদিন ২৭ এপ্রিল বাবার কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হয়।
পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবদুল্লাহ আল নোমান প্রথম আলোকে বলেন, সাত মাস পাঁচ দিনের মাথায় রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের আইনজীবীর যুক্তিতর্ক শেষে আদালত আজ রায় দিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষ আদালতের রায়ে সন্তুষ্ট। আসামিরা যেহেতু কিশোর বয়সের। তাই প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তাদের শিশু সংশোধনাগারে রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।