আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী ফিরদৌসী কাদরী বলেছেন, বাংলাদেশে দিনে ১ হাজার ৩১০ জন টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। এর মধ্যে মারা যাচ্ছে ২২ জন। মারা যাওয়া এই ২২ জনের মধ্যে ১৫ জনই শিশু। টাইফয়েড টিকা দিলে দিনে ১২ শিশুর জীবন বাঁচানো সম্ভব। কেননা শিশুদের ক্ষেত্রে এ টিকা ৮৫ শতাংশ কার্যকর।

আজ বৃহস্পতিবার সরকারের সম্প্রসারণ টিকাদান কার্যক্রম (ইপিআই), জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের যৌথ আয়োজনে টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচির সাফল্য এবং শক্তিশালীকরণের জন্য আয়োজিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ফিরদৌসী কাদরী এ কথা বলেন। রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এ অনু্ষ্ঠান হয়।

ম্যাগসাইসাই পুরস্কারপ্রাপ্ত ফিরদৌসী কাদরী বলেন, বাংলাদেশে টাইফয়েডের প্রাদুর্ভাব বেশি। দূষিত পানি ও খাবারের যে সমস্যা তা দ্রুত সমাধান করা সম্ভব না। অন্যদিকে টাইফয়েডের জীবাণু ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে। টাইফয়েড জ্বরে মৃত্যু বেশি, মৃত্যু না হলেও জটিলতা এত বেশি হয় যে চিকিৎসা ব্যয়বহুল হয়ে যায়। কোনো শিশু যাতে টিকা দেওয়া থেকে বাদ না পড়ে সে জন্য সবাইকে একসঙ্গে আওয়াজ তুলতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সভায় টাইফয়েড টিকা নিয়ে সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন ইপিআইয়ের উপপরিচালক শাহারিয়ার সাজ্জাদ। তিনি জানান, ইউনিসেফ, গ্যাভি—দ্য ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সহায়তায় ইপিআইয়ের নেতৃত্বে ১২ অক্টোবর দেশব্যাপী শিশুদের বিনা মূল্যে টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি) দেওয়া শুরু হয়েছে। ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী (প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি/সমমান) শিশুদের টিকা দেওয়ার এ কার্যক্রম চলবে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত। এবার ক্যাম্পেইনে ৪ কোটি ৯০ লাখ শিশুকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। টিকা নেওয়ার জন্য নিবন্ধন অব্যাহত আছে।

শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, রাজশাহী, রংপুর টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে ভালো অবস্থানে থাকলেও খুলনা, বরিশাল পিছিয়ে আছে। টিকা দেওয়ার জন্য হাতে আর ১২ কার্যদিবস আছে। কিছু স্কুল ও মাদ্রাসায় টিকা গ্রহণের হার এখনো অনেক কম। এসব প্রতিষ্ঠানে নিবন্ধন করেনি এমন শিশুরা স্কুলে এলে ম্যানুয়ালি নিবন্ধন করে টিকা দেওয়া হবে। আর যে শিশুরা নির্দিষ্ট দিনে টিকা দিতে পারেনি তারা কমিউনিটির টিকাদান কেন্দ্র থেকে টিকা নিতে পারবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত ভারতের বায়োলজিক্যাল ই কোম্পানির তৈরি টিকাটি সরকার পেয়েছে গ্যাভির কাছ থেকে। এর আগে পাকিস্তান, নেপাল, লাইবেরিয়া, মালাউই, সামোয়া এবং জিম্বাবুয়েতে এ কার্যক্রম চালু হয়েছে।

গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান: দেশজুড়ে শিশুদের দেওয়া হচ্ছে টাইফয়েডের টিকা, তার সঙ্গে নানা গুজবও ছড়াচ্ছে। আজকের সভায় গুজবের বিষয়টি আলোচনায় প্রাধান্য পায়। সভার প্রধান অতিথি প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা) অধ্যাপক মো.

সায়েদুর রহমান বলেন, ২ কোটি ৭০ লাখ শিশু টিকা দেওয়ার জন্য নিবন্ধনের আওতায় এসেছে। এর মধ্যে ১ কোটি ৭০ লাখ (২১ অক্টোবর পর্যন্ত) শিশু টিকা নিয়েছে। দুর্ভাগ্যজনক হলো, যেকোনো টিকা নিয়েই একটি মহল আপত্তি তোলে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশেও এমন আপত্তি জানায় একটি মহল। দেশের প্রয়োজনেই সরকার শিশুদের টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। বর্তমানে শিশুদের যে টিকা দেওয়া হচ্ছে তা মানসম্মত, নিরাপদ এবং কার্যকর। একাধিক গবেষণায় বিষয়টি প্রমাণিত।

ফিরদৌসী কাদরী

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ট ইফয় ড ট ক র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

গণিত উৎসব ২০২৬-এর নিবন্ধন শুরু সময় বাড়ল ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত

ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো গণিত উৎসব ২০২৬–এর অনলাইন নিবন্ধন কার্যক্রম পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী ৮ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত হওয়ার কথা ছিল। ৮ ডিসেম্বর রাতে এক ঘোষণার মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে আয়োজকেরা। গণিত উৎসব ২০২৬-এ অংশগ্রহণের জন্য প্রত্যেককেই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধন করতে হবে। পূর্ববর্তী বছরগুলোয় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের জন্যও নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক।

আয়োজকেরা জানান, গণিত উৎসবে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে গিয়ে নিবন্ধন করতে পারবে। নিবন্ধন লিংক: https://matholympiad.org.bd

গণিত উৎসব অনুষ্ঠিত হবে চারটি ক্যাটাগরিতে—প্রাইমারি (তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি বা সমমান), জুনিয়র (ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি বা সমমান), সেকেন্ডারি (নবম–দশম শ্রেণি) এবং হায়ার সেকেন্ডারি (একাদশ–দ্বাদশ শ্রেণি) ও সমমানের জন্য প্রযোজ্য।

ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো গণিত উৎসব ২০২৬-এর অনলাইন নিবন্ধন কার্যক্রম চলবে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ