মাগুরায় সালিসে হাতুড়িপেটায় গ্রাম্য মাতবর নিহত
Published: 24th, October 2025 GMT
মাগুরায় বিরোধপূর্ণ একটি জমির সালিসে গিয়ে একপক্ষের হাতুড়িপেটায় এক গ্রাম্য মাতবর নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে সদর উপজেলার কুচিয়ামোড়া ইউনিয়নের বলুগ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত বাদশা মোল্লার (৬৫) বাড়ি উপজেলার বলুগ্রামে। তাঁর পরিবারের সদস্য ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বলুগ্রামে ১৯ শতাংশ জমির মালিকানা নিয়ে বাদশা মোল্লার বোনের মেয়ে শিউলি খাতুন ও পাশের বাখরবা গ্রামের আনোয়ার নামের এক ব্যক্তির মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। জমির মালিকানা নিয়ে আদালতে মামলা চলমান। এ নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই বিরোধের মীমাংসার জন্য বলুগ্রাম পূর্বপাড়ায় একটি সালিস বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এতে দুই পক্ষের লোকজনের পাশাপাশি এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। বেলা ১১টার দিকে সালিসের শেষ পর্যায়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ বেধে যায়।
বাদশার চাচাতো ভাই ওসমান মোল্লা প্রথম আলোকে বলেন, ‘সালিসে একটা মীমাংসা হয়। তবে শেষ পর্যায়ে আনোয়ারের লোকজন আমার ভাই বাদশা মোল্লার ওপর হামলা করেন। তাঁকে হাতুড়ি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। ঠেকাতে গিয়ে আমিও আহত হই। এরপর তাঁকে উদ্ধার করে কুল্লিয়া বাজারে নিয়ে গেলে তিনি মারা যান।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আনোয়ারের মুঠোফোন নম্বরে কল করলে বন্ধ পাওয়া যায়। সালিসে অংশ নেওয়া কুচিয়ামোড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো.
সালিসে সভাপতিত্ব করেন এলাকার মাতবর নওশের আলী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মারামারির সময় হাতুড়ি দিয়ে হামলা করা হয়। এতে বোঝা গেছে, এক পক্ষ আগে থেকেই মারামারির প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিল।
মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আইয়ুব আলী প্রথম আলোকে বলেন, নিহত ব্যক্তির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে তদন্ত চলছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বল গ র ম
এছাড়াও পড়ুন:
ফরিদপুরের তিন উপজেলায় বিএনপির সাংগঠনিক কমিটি ঘোষণা
ফরিদপুরের বোয়ালমারী, মধুখালী ও আলফাডাঙ্গার উপজেলা ও পৌর বিএনপির ছয়টি সাংগঠনিক কমিটির অনুমোদন দিয়েছে জেলা বিএনপি।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী ও সদস্যসচিব এ কে এম কিবরিয়া স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ ছয়টি কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রতিটি উপজেলা ও পৌরসভা কমিটিতে আছেন ১০১ জন করে।
ঘোষিত কমিটি পর্যালোচনায় দেখা যায়, গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে প্রাধান্য পেয়েছেন ফরিদপুর-১ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী এবং কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার নাসিরুল ইসলামের পক্ষের নেতারা।
ফরিদপুর-১ আসনে খন্দকার নাসিরুল ইসলাম ও বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দিন মিয়ার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। এই দুই নেতার নেতৃত্বে তিনটি উপজেলার বিএনপি বিভক্ত। বোয়ালমারী উপজেলা কমিটিতে শামসুদ্দিন মিয়াকে তিন নম্বর সহসভাপতি করা হয়েছে। তবে সব ক্ষেত্রে তাঁর অনুসারীদের বঞ্চিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বোয়ালমারী, মধুখালী ও আলফাডাঙ্গায় সর্বশেষ পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়েছিল ২০১৫ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে। প্রায় এক দশক পর এবার কোনো সম্মেলন ছাড়াই জেলা আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের যৌথ স্বাক্ষরে নতুন কমিটিগুলো ঘোষণা করা হয়েছে।
বোয়ালমারী উপজেলা কমিটিতে সভাপতি করা হয়েছে সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামকে, আর সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সঞ্জয় সাহা। বোয়ালমারী পৌরসভা কমিটিতে সভাপতি হয়েছেন সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র ও পৌর কাউন্সিলর আবদুল কুদ্দুস শেখ এবং সাধারণ সম্পাদক উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে ইমরান হোসেন।
মধুখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি করা হয়েছে পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদকে, আর সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন জেলা যুবদলের সাবেক সহসভাপতি আবদুল আলিম মানিক। মধুখালী পৌরসভা কমিটির সভাপতি হয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হায়দার আলী মোল্লা এবং সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ইয়াছিন বিশ্বাসকে।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা বিএনপি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছে যথাক্রমে আবদুল মান্নান মিয়া আব্বাস ও মো. নূরজামাল খসরু। আলফাডাঙ্গা পৌরসভা বিএনপির সভাপতি হয়েছেন মো. রবিউল হক রিপন ও সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে মো. হাসিবুল হাসান হাসীবকে।
বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এবং ঘোষিত কমিটির তিন নম্বর ভাইস চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্য আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির লোকজনদের নিয়ে প্রকৃত নিবেদিতপ্রাণ বিএনপির নেতা–কর্মীদের বঞ্চিত করে একপক্ষীয় কমিটি করা হয়েছে।
তবে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব এ কে এম কিবরিয়া স্বপন বলেন, ‘আমরা সবাইকে নিয়ে কার্যকর কমিটি করার চেষ্টা করেছি। সম্মেলন করে কমিটি হয়নি এ কথা সত্য, তবে চাপিয়ে দেওয়া হয়নি। একাধিকবার কর্মী সম্মেলন করে সবার মতামতের ভিত্তিতে এ কমিটি দেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কমিটিতে আছেন আবার তাঁদের আওয়ামী লীগ বা জাতীয় পার্টির পদ রয়েছে এবং তা যদি সঠিকভাবে প্রমাণ করা যায়, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে সে কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হবে।’