শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি, স্নায়ুতন্ত্রকে উদ্দীপিত করা এবং প্রশিক্ষণ গ্রহণের আগে ক্রীড়াবিদরা ওয়ার্ম আপ করেন। ওয়ার্ম আপ করার মাধ্যমে দীর্ঘ সময় শারীরিক পরিশ্রম করার জন্য শরীরকে প্রস্তত করেন তারা। একইভাবে ব্যায়াম করার আগেও শরীরকে প্রস্তুত করতে ওয়ার্ম করা জরুরি।

ওয়ার্ম আপ করার নিয়ম
ওয়ার্ম আপ করার জন্য প্রথমে কমপক্ষে ৩ মিনিট নিতে হয়। এই সময়ের মধ্যে ধীরে তারপর মধ্যম স্পিডে হাঁটতে হয়। এরপর ২ মিনিট দ্রুত হাঁটা,তারপর ৫ মিনিট আস্তে জগিং করার মাধ্যমে ওয়ার্ম আপ করা যায়।

আরো পড়ুন:

পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা হলে যা করতে পারেন

মানুষ কেন ঘুমের মধ্যে কথা বলে?

ঠিক মতো ব্যায়াম করার জন্য ওয়ার্ম আপ করা জরুরি। ওয়ার্ম  আপ না করলে না করলে যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে

মুখের ত্বকে লালচে হয়ে যেতে পারে
ব্যায়ামের সময় দেহের বিভিন্ন অংশে রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায়। তাই এ সময় মুখ লাল হয়ে যেতে পারে কারও কারও। এটি আদতে কোনো সমস্যাই নয়। ব্যায়াম শেষে কিছু সময় পর মুখের ত্বক স্বাভাবিক রং ফিরে পায়। এ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। যাঁদের গায়ের রং ফরসা, তাঁদের ক্ষেত্রে এই লালচে ভাব একটু প্রকট হয়ে ওঠে।

হঠাৎ করে পাঁজরের নিচে ব্যথা হতে পারে
যেসব ব্যায়াম করতে পরিশ্রম বেশি, সেসব ব্যায়ামের সময় হঠাৎ করে পাঁজরের নিচে ব্যথা অনুভব করতে পারেন আপনি। পেশিতে টান লাগার জন্য এ রকম ব্যথা হয়। এমনও মনে হতে পারে, পেশির টানের জন্য আপনার শ্বাসপ্রশ্বাস বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। নড়াচড়া করতেও অসুবিধা হতে পারে। কেন হয় এমন, জানেন? মূলত ওয়ার্মআপে অবহেলার জন্যই এ ধরনের ব্যথা হয়ে থাকে।
ব্যায়ামের শুরুতে ওয়ার্মআপ এবং ব্যায়ামের শেষে কুলডাউন খুব গুরুত্বপূর্ণ। ওয়ার্মআপের সময়ের পেশি স্ট্রেচিং এবং অন্যান্য হালকা শরীরচর্চা আপনাকে এমন ব্যথা থেকে বাঁচাবে। তবে কারও যদি এ রকম ব্যথা হয়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যায়াম থামিয়ে দিতে হবে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। ডিপ ব্রিদিং এক্সারসাইজ বা গভীর শ্বাসপ্রশ্বাস আপনার পেশিকে শিথিল করতে সহায়তা করবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

পায়ের গোড়ালির মাঝের অংশে ব্যথা হতে পারে
ব্যায়াম করতে গিয়ে পায়ের পেছনের পেশিতে টান লাগে অনেকেরই। কাফ মাসল অর্থাৎ হাঁটু থেকে গোড়ালির মাঝের অংশে পায়ের পেছন দিকে যে পেশি থাকে, তাতে টান লাগতে পারে নানান কারণেই। অনেক ক্ষেত্রে এমন সমস্যার জন্য পানিশূন্যতা কিংবা পটাশিয়াম বা ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দায়ী হয়ে থাকে। তাই সারা দিনে আপনাকে পর্যাপ্ত পানি বা তরল খাবার খেতে হবে।
দুধ বা দুধের তৈরি খাবার কিংবা ক্যালসিয়ামজাতীয় অন্যান্য খাবার এবং ফলমূলও খাওয়া চাই। তরল দুধ ও ফলের রসে আপনার পানির চাহিদাও মিটবে। কাফ মাসলে টান লাগলে এই পেশিকে স্ট্রেচ করতে চেষ্টা করুন। পা সামনে ছড়িয়ে বসে পায়ের আঙুলগুলোকে হাত দিয়ে টানলে কাফ মাসলের স্ট্রেচিং হয়।

বমি হতে পারে
ব্যায়াম করতে গিয়ে বমি ভাব কিংবা বমি হতে পারে কারও কারও। এমন সমস্যা এড়াতে হলে খাওয়ার পরপরই ব্যায়াম করা যাবে না। তবে একেবারে খালি পেটে ব্যায়াম করাও ঠিক নয়। তাতেও নানা রকম অস্বস্তি দেখা দেবে। ব্যায়ামের অন্তত এক ঘণ্টা আগে হালকা কিছু খেয়ে নিতে পারেন। ভারী খাবার খাওয়ার অন্তত তিন ঘণ্টা পর ব্যায়াম করা যাবে। ভরপেট পানি খেয়েও ব্যায়াম করতে নেই।

ওয়ার্ম আপ- এর উপকারিতা
শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি, স্নায়ুতন্ত্র সক্রিয়করণ, মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করে ওয়ার্ম আপ। ওয়ার্ম আপ শারীরিক পরিশ্রম করার জন্য শরীরকে প্রস্তুত করে।

সূত্র: ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন অবলম্বনে

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ব স থ যকর জ বন ব য য় ম করত ব য য় ম কর ম কর র সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

বাবা-মাকে মারধর, ব্যতিক্রমী দিলো শাস্তি গ্রামবাসী

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় পারিবারিক সহিংসতা ও মাদকাসক্তির জেরে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার জন্ম দিয়েছে স্থানীয়রা। দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত ছেলের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছিল তার বাবা-মা। অবশেষে এলাকাবাসী তাকে কোমর সমান গর্তে পুঁতে রেখে শাস্তি দিয়েছে। 

ঘটনাটি ঘটেছে শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের টেপিরবাড়ী গ্রামে। অভিযুক্ত যুবকের নাম খলিল (৩২)। তিনি ওই গ্রামের নুরু উদ্দিনের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে মাদক কেনার টাকা জোগাড় করতে না পেরে খলিল তার মা খোদেজা খাতুনের ওপর ইট ও লাঠি নিয়ে হামলা চালান। এতে খোদেজা খাতুন আহত হন। এর আগেও দীর্ঘদিন ধরে মা–বাবার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিলেন খলিল। বারবার সতর্ক করা হলেও তার আচরণে কোনো পরিবর্তন আসেনি।

এমন পরিস্থিতিতে গ্রামবাসীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। পরিবারের সম্মতি নিয়েই তারা খলিলকে শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। শনিবার সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে একটি আঞ্চলিক সড়কের পাশে বুকসমান গর্ত করে তাকে পুঁতে রাখা হয়। প্রায় এক ঘণ্টা পর সে নিজেই মাটি সরিয়ে বের হয়ে পালানোর চেষ্টা করলে এলাকাবাসী তাকে আটক করে রাখে।

গ্রামের বাসিন্দাদের ভাষ্য, এর আগেও একাধিকবার গ্রাম্য সালিশ, মুচলেকা ও সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল। এক মাস আগেও মাদক সেবনের অভিযোগে তাকে ধরে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এরপরও সে মায়ের ওপর নির্যাতন বন্ধ করেনি।

স্থানীয় বাসিন্দা তুতা মিয়া বলেন, “আমরা কাউকে কষ্ট দিতে চাইনি। কিন্তু দিনের পর দিন মা–বাবার ওপর যে অত্যাচার সে করেছে, তার কোনো প্রতিকার না পেয়ে শেষ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।”

এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, “কাউকে এভাবে শাস্তি দেওয়া আইনসম্মত নয়। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/রফিক/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ