ব্যবসার আড়ালে মালয়েশীয় দুই ভাইয়ের ‘হুন্ডি চক্র’
Published: 26th, October 2025 GMT
আমদানি-রপ্তানি, মুঠোফোনে আর্থিক সেবা (এমএফএস) ও মুঠোফোন মেরামত—এমন সব ব্যবসার আড়ালে অবৈধ চ্যানেলে আর্থিক লেনদেনে (হুন্ডি) জড়িত মালয়েশিয়ার নাগরিক দুই ভাই। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
ওই দুই ভাই হলেন সিরাজউদ্দিন বিন বদরুদ্দিন ও মোহসিন বিন বদরুদ্দিন। বিএফআইইউর প্রতিবেদন বলছে, তাঁদের নামে বাংলাদেশে সাতটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আছে। মালয়েশিয়াতেও তাঁদের একাধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেখানে থাকা বাংলাদেশি প্রবাসীদের বেতনের অর্থ তাঁরা সংগ্রহ করেন। সেই অর্থ এমএফএসের মাধ্যমে প্রবাসীদের দেশে থাকা পরিবার ও স্বজনদের কাছে পৌঁছে দেন।
আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট বিএফআইইউর নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বাংলাদেশে মালয়েশীয় দুই ভাইয়ের প্রতিষ্ঠানগুলো হলো জেন ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, এম এম সার্ভিস, সেলিগ্রা সার্ভিস লিমিটেড, কমপিউগেটস ইন্টারন্যাশনাল, ডেন্স রিটেইল লিমিটেড, আইডিই ডিজাইন লিমিটেড ও টেলিগ্রা লিমিটেড। এ ছাড়া দুই ভাইয়ের নামে মুঠোফোনের আর্থিক সেবাদাতা একটি প্রতিষ্ঠানের ডিস্ট্রিবিউটরশিপের লাইসেন্স আছে। রাজধানীর ধানমন্ডির এ আর প্লাজায় অবস্থিত জেন ইন্টারন্যাশনালের কার্যালয় থেকে এই ডিস্ট্রিবিউটরশিপের ব্যবসা পরিচালনা করা হয়।
এ বিষয়ে খোঁজ নিতে ৫ অক্টোবর জেন ইন্টারন্যাশনালের ধানমন্ডি কার্যালয়ে যান এই প্রতিবেদন। এ আর প্লাজার ৬ তলার কার্যালয়ে কথা হয় প্রতিষ্ঠানটির উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.
সাঈদ এম কাসেদ বলেন, সিরাজউদ্দিন ও মোহসিনের এখন তিনটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান চালু আছে। বাকিগুলো বন্ধ হয়ে গেছে।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) সূত্র জানায়, বিএফআইইউর প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ২০২৩ সালে তারা বিষয়টি অনুসন্ধান করেছিল। তবে তখন প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়নি।
সিআইডির তদন্তসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, তখন সংস্থাটির প্রধান ছিলেন মোহাম্মদ আলী মিয়া। তিনি প্রভাব খাটিয়ে সিআইডির অনুসন্ধান ধামাচাপা দেন। এ বিষয়ে এখন আবার অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আগেও অনুসন্ধান হয়েছিল, তবে সেটা শেষ হয়নি উল্লেখ করে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার লুৎফুল কবির ৯ অক্টোবর প্রথম আলোকে বলেন, মালয়েশিয়ার নাগরিক দুই ভাইয়ের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাচারের অনুসন্ধান চলছে।
এই ফারুকের নামে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে বাংলাদেশে ব্যবসা করতেন সিরাজউদ্দিন ও তাঁর ছোট ভাই মোহসিন। ফারুক বর্তমানে মালয়েশিয়ায় নিবন্ধিত একটি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)।যেভাবে হুন্ডিমালয়েশীয় আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা এফআইইউর বরাত দিয়ে বিএফআইইউর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিরাজউদ্দিনের নামে মালয়েশিয়ার সিআইএমবি ব্যাংকের হিসাবে দেশটির বিভিন্ন শাখা থেকে অনেক অর্থ (মালয়েশীয় মুদ্রা রিঙ্গিত) জমা হয়েছে। এন এস এম ফারুক নামের এক বাংলাদেশির মাধ্যমেই জমা হয়েছে ১ লাখ ২২ হাজার রিঙ্গিত। এই ফারুকের নামে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে বাংলাদেশে ব্যবসা করতেন সিরাজউদ্দিন ও তাঁর ছোট ভাই মোহসিন। ফারুক বর্তমানে মালয়েশিয়ায় নিবন্ধিত একটি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)।
বিএফআইইউর তথ্য বলছে, ফারুক ছাড়াও মেহেদী হাসান ও ফায়েজ আলী নামের দুই বাংলাদেশির মাধ্যমেও সিরাজউদ্দিনের মালয়েশীয় ব্যাংক হিসাবে বিপুল অঙ্কের রিঙ্গিত জমা হয়েছে। এর একটি তারিখ ২০১৬ সালের ৩ মার্চ, অন্যটি ২০১৯ সালের ৪ জুলাই। জমা দেওয়ার পর ঘোষণা দেওয়া হয়, অনুদান ও উপহার হিসেবে এই রিঙ্গিত দেওয়া হচ্ছে। এভাবে প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপার্জনের অর্থ সিরাজউদ্দিনের ব্যাংক হিসাবে জমা হয়। পরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে প্রবাসীদের আত্মীয়স্বজনদের এমএফএসের মাধ্যমে টাকা দেওয়া হয়।
পড়তে এসে ব্যবসায়খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিরাজউদ্দিন চিকিৎসাবিদ্যা পড়তে বাংলাদেশে এসেছিলেন। পড়া শেষ করে আবদুল কাইউম তসলিম নামের এক বাংলাদেশির মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি, বিতরণ ও সরবরাহকারী ব্যবসার জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) থেকে ২০১৩ সালে একটি ট্রেড লাইসেন্স নেন। ধানমন্ডির এ আর প্লাজার ছয়তলার পুরো ফ্লোর ভাড়া নিয়ে জেন ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এর এক বছর আগে ২০১২ সালের ২২ এপ্রিল প্রতিষ্ঠানটি যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের নিবন্ধক (আরজেএসসি) থেকে নিবন্ধন নেয়। পরে এই প্রতিষ্ঠানের নামে দেশের ১৪টি অঞ্চলে মুঠোফোনের আর্থিক সেবাদাতা একটি প্রতিষ্ঠানের ডিস্ট্রিবিউটরশিপ নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন।
এসব এজেন্ট থেকে প্রতি মিনিটে তিনবারের বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে দিবাগত রাত ১২টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত। এসব লেনদেন ছিল ১৫ হাজার বা তার বেশি পরিমাণ টাকা।বিএফআইইউর প্রতিবেদন বলছে, এই ডিস্ট্রিবিউটরশিপের ব্যবসার আড়ালে হুন্ডি ব্যবসা পরিচালনা করে মালয়েশীয় দুই ভাইয়ের প্রতিষ্ঠান। এই ডিস্ট্রিবিউটরের (জেন ইন্টারন্যাশনাল) অধীনে থাকা ১১৮টি এজেন্ট হুন্ডি ব্যবসায় জড়িত।
দুই ভাইয়ের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নামে দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে ৪৩টি হিসাব আছে বলে উল্লেখ করা হয় বিএফআইইউর প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, এসব হিসাব খোলার সময় ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত। এসব হিসাবে ২১ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা লেনদেন (জমা ও উত্তোলন) হয়েছে।
ব্যাংক হিসাব ছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির ডিস্ট্রিবিউটরের আওতাধীন এজেন্টদের এক বছরের লেনদেন পর্যালোচনা করেছে বিএফআইইউ। সংস্থাটি বলছে, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিমাণ টাকা জমা হয়েছে। এসব এজেন্ট থেকে প্রতি মিনিটে তিনবারের বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে দিবাগত রাত ১২টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত। এসব লেনদেন ছিল ১৫ হাজার বা তার বেশি পরিমাণ টাকা।
এভাবে প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপার্জনের অর্থ সিরাজউদ্দিনের ব্যাংক হিসাবে জমা হয়। পরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে প্রবাসীদের আত্মীয়স্বজনদের এমএফএসের মাধ্যমে টাকা দেওয়া হয়।কর্মচারীদের নামে ট্রেড লাইসেন্সবিএফআইইউর নথি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, জেন ইন্টারন্যাশনালের ট্রেড লাইসেন্স নেওয়া হয়েছে আবদুল কাইউম তসলিমের নামে। তিনি প্রতিষ্ঠানটিতে চাকরি করতেন।
শুধু এ প্রতিষ্ঠান নয়, দুই ভাইয়ের মালিকানাধীন অন্য ছয়টি প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্সও অন্যদের (স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের) নামে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর নামে রাখা সিকিউরিটি ডিপোজিটের কিছু অর্থ অবৈধ চ্যানেলে বাংলাদেশে আনা হয়েছে।
বিএফআইইউর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগ বিভাগ ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ বোর্ডের অনুমোদন না নিয়ে জেন ইন্টারন্যাশনাল ক্যারিবীয় ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জে নিবন্ধিত একটি কাগুজে কোম্পানির শেয়ার মালিকানায় ব্যবসা পরিচালনা করছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স র জউদ দ ন র প রব স দ র র ব যবস ব যবস র আর থ ক ন বন ধ ল নদ ন র এক ব স আইড
এছাড়াও পড়ুন:
শব্দগুলো সাজাও, বাক্য বানাও
ইংরেজি: রি–অ্যারেঞ্জ
প্রাথমিক বিদ্যালয়–শিক্ষার্থী মেধা যাচাই পরীক্ষায় ইংরেজি ৮ নম্বর প্রশ্নটি রি–অ্যারেঞ্জের ওপর। নম্বর থাকবে ৬।
# Rearrange words in the correct order to make meaningful sentences
Set-1
a. poetry/ time/ in/ my/ free/ father/ his/ writes.
b. I/ can/ questions/ ask/ some/ you?
c. us/ let/ for/ a/ go/ picnic.
d. should/ eat/ you/ chocolate/ not/ of/ lot/ a.
e. beautiful/ girl/ the/ how/ is!
Ans:
a. My father writes poetry in his free time.
b. Can I ask you some questions?
c. Let us go for a picnic.
d. You should not eat a lot of chocolate.
e. How beautiful the girl is!
আরও পড়ুনসবুজ উদ্ভিদ থেকে খাদ্যশৃঙ্খল শুরু১০ ডিসেম্বর ২০২৫Set-2
a. hare/ for/ slept/ hour/ an/ the.
b. walk/ you/ can’t/ faster?
c. believe/ his/ hare/ the/ couldn’t/ eyes.
d. too/ for/ play/ don’t long.
e. steady/ race/ the/ wins/ slow/ but!
Ans:
a. The hare slept for an hour.
b. Can’t you walk faster?
c. The hare couldn’t believe his eyes.
d. Don’t play for too long.
e. Slow but steady wins the race!
Set-3
a. myself/ I/ introduce/ May?
b. club/ person/ the/ a/ there/ new/ is/ in/ today.
c. down/ please/ sit.
d. hour/ I/ you/ can/ in/ meet/ an.
e. Andy/ can/ when/ meet/ Tamal?
Ans:
a. May I introduce myself?
b. There is a new person in the club today.
c. Please sit down.
d. I can meet you in an hour.
e. When can Tamal meet Andy?
ইকবাল খান, প্রভাষক
বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজ, ঢাকা