নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ষষ্ঠ শ্রেণির ভর্তিতে ব্যাপক কারসাজি ও বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীকে ভুয়া মিউচুয়াল ট্রান্সফার ও ভুয়া প্রত্যয়নের মাধ্যমে বিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।

সম্প্রতি বিরামপুর গ্রামের বাসিন্দা মাহমুদ হাসান নামে এক অভিভাবক এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক বরাবর অভিযোগ করেছেন। পাশাপাশি তিনি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক ও ময়মনসিংহ দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। 

আরো পড়ুন:

যবিপ্রবিতে তদন্তে সাক্ষ্য দেওয়ায় কর্মচারীকে বদলি চেষ্টার অভিযোগ

যবিপ্রবির উপ-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে আসবাবপত্র লোপাটের চেষ্টার অভিযোগ

অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।  

এ ঘটনায় গত ২২ অক্টোবর বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রাখাল চন্দ্র করকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। 

সোমবার (২৭ অক্টোবর) পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত  প্রধান শিক্ষক শেখ মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অভিযোগকারী মাহমুদ হাসান চৌধুরী বলেন, “আমার মেয়ে আটপাড়া বানিয়াজান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ওয়েটিং লিস্টে ১৪৮তম থাকা সত্ত্বেও তাকে সুযোগ না দিয়ে ১৫০তম অবস্থানে থাকা আরেক শিক্ষার্থীকে অনিয়ম করে ভর্তি করিয়ে মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে মিউচুয়াল ট্রান্সফার করা হয়।”

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ষষ্ঠ শ্রেণির মর্নিং শিফটের কর্ণফুলি শাখার শিক্ষার্থী সৃজন ঘোষের বিপরীতে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার বাদশাগঞ্জ সরকারি পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাসরুর বিন জামানকে মিউচুয়াল ট্রান্সফার করা হয়। অথচ সৃজন ঘোষ পাইলট স্কুলে ভর্তি হলেও বছরের শুরু থেকে নেত্রকোনার আঞ্জুমান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়মিত পড়াশোনা করছে। সৃজন ঘোষের এই শূন্য আসনে ভুয়া প্রত্যয়ন তৈরি করে মাসরুর বিন জামানকে পাইলট স্কুলে ভর্তি করা হয়।

একইভাবে মওদুদ আহমেদ মাহিন নামে এক শিক্ষার্থীকে আরাফ ঢালী নামে অপর এক শিক্ষার্থীর শূন্য স্থানে ভর্তি করা হয়। আরাফ ঢালী বর্তমানে নেত্রকোনা কালেক্টরেট স্কুলে অধ্যয়নরত।

তদন্ত কমিটির প্রধান শিক্ষক রাখাল চন্দ্র কর জানান, তদন্ত শেষ হয়েছে। আজ (সোমবার) তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। 

মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শেখ মোহাম্মদ আবদুল ওয়াদুদ বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পর প্রাথমিক তদন্তে একাধিক ভুয়া মিউচুয়াল ট্রান্সফার ও ভুয়া প্রত্যয়নে ভর্তির বিষয়ে সত্যতা পেয়েছি। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আরো কতগুলো এমন ঘটনা ঘটেছে জানতে পারবো। পরে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/ইবাদ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ, স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির সবাই পলাতক

নেত্রকোণার মোহনগঞ্জে রাহিমা আক্তার (২৬) নামে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী মুনসুর মিয়াসহ (৩২) পরিবারের সবাই পলাতক।

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে মোহনগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মো. শফিকুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার জয়পুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত মুনসুর মিয়া একই গ্রামের রঙ্গ মিয়ার ছেলে। নিহত রাহিমা আক্তার মো. আবুল হাশেমের মেয়ে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর আগে মুনসুর মিয়ার সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় রাহিমার। তাদের সংসারে আট বছর ও তিন বছর বয়সী দুটি ছেলেসন্তান রয়েছে।

নিহত রাহিমার বাবা আবুল হাশেম বলেন, “মুনসুরের জুয়া খেলার অভ্যাস আছে। জুয়ায় হারলে রাহিমাকে মারধর করত। গতকাল জুয়ায় হেরে এসে রাহিমাকে পেটালে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জানান, রাহিমা আর বেঁচে নেই।”

মোহনগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুজ্জামান বলেন, ‘‘রাহিমার মুখ দিয়ে ফেনা বের হতে দেখা গেছে। তিনি বিষ পান করে থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে এখনো কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে মুনসুর মিয়ার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি।

ঢাকা/ইবাদ/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ, স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির সবাই পলাতক