ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ জ্যামাইকায় ধেয়ে আসছে হারিকেন মেলিসা। দেশটির ইতিহাসে এটি হতে যাচ্ছে সবচেয়ে ভয়াবহ হারিকেন। তবে এ দ্বীপের কিছু বাসিন্দা বলছেন, চোখে না দেখলে তাঁরা বিশ্বাস করবেন না।

হারিকেন ধেয়ে আসার পরিপ্রেক্ষিতে নাগরিকদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে জ্যামাইকা সরকার। এ নির্দেশ কার্যকর করতে নাগরিকদের প্রতি সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন শীর্ষ কর্মকর্তারা। তবে প্রবল বৃষ্টি আর ঝোড়ো বাতাস শুরু হলেও অনেকে নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে যেতে চাইছেন না।

জ্যামাইকার দক্ষিণ উপকূলের শহর পোর্ট রয়্যালের একটি হোটেলের ব্যবস্থাপক জামাল পিটার্স (৩৪) বলেন, ‘জ্যামাইকানরা সাধারণত এমন নন যে একদিন উঠে হুট করে নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে চলে যাবেন। তাঁরা বরং বাড়িতে থাকতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। ঘরের দরজা-জানালা উড়ে গেলেও তাঁরা সেখানেই থাকবেন।’

পিটার্স এএফপিকে বলেন, ‘আমরা এখনো হারিকেনের প্রভাব মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে এটা আমাদের প্রথম হারিকেন নয়। তাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জ্যামাইকানরা আগেই প্রস্তুত আছেন।’

হারিকেন মেলিসা ক্যারিবীয় অঞ্চলে ১৯৮৮ সালে আঘাত হানা হারিকেন গিলবার্টের চেয়েও ভয়াবহ হতে পারে বলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। গিলবার্টের আঘাতে জ্যামাইকায় ৪০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছিলেন। ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ ও মেক্সিকোয় সব মিলিয়ে কয়েক শ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

গতকাল সোমবার হারিকেন মেলিসা সর্বোচ্চ শক্তির ক্যাটাগরি ৫ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়। ঘণ্টায় ঝড়ের গতিবেগ ছিল ১৭৫ মাইল বা ২৮০ কিলোমিটার। এর প্রভাবে ব্যাপক বৃষ্টি ও প্রাণঘাতী বন্যা হতে পারে।

হারিকেন মেলিসা ক্যারিবীয় অঞ্চলে ১৯৮৮ সালে আঘাত হানা হারিকেন গিলবার্টের চেয়েও ভয়াবহ হতে পারে বলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। গিলবার্টের আঘাতে জ্যামাইকায় ৪০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছিলেন। ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ ও মেক্সিকোয় সব মিলিয়ে কয়েক শ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

এ সতর্কতা জারির ফলে কিছু মানুষের মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তবে অন্যরা বলছেন, সবকিছু আগের মতোই চলছে।

আরও পড়ুনক্যারিবীয় অঞ্চলে অতি বিপজ্জনক রূপ নিয়েছে হারিকেন বেরিল, দ্রুত প্রস্তুতি সারার নির্দেশ০১ জুলাই ২০২৪

রয় ব্রাউন নামের এক ব্যক্তি জানান, হারিকেনের জন্য তিনি বাড়িঘর ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে চান না। তিনি বলেন, ‘হারিকেনটি ক্যাটাগরি ৬ হলেও আমি নড়ব না। মৃত্যু থেকে পালানো যাবে না। যখন ঈশ্বর চাইবেন, তখনই তিনি আমাকে নেবেন। আমি পালাচ্ছি না।’

খারাপ অবস্থার কারণেও অনেকে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে চান না বলে দাবি করেছেন রয় ব্রাউন। জেনিফার রামডিয়াল নামের এক মৎস্যজীবী নারী একই ধরনের কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি কোথাও যেতে চাই না।’

তবে মরান্ট বে প্রাইমারি স্কুলের আশ্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক শেলি-অ্যান ম্যাককালা বলেন, গত বৃহস্পতিবার থেকেই মানুষ আশ্রয় নিতে আসছেন। আগের দিনই জ্যামাইকায় হারিকেনের সতর্কতা জারি করা হয়। তবে গত বছর হারিকেন বেরিলের তুলনায় এবার কম মানুষ আশ্রয় নিতে আসছেন বলে স্বীকার করেন তিনি।

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রে ৫ মাত্রার ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে হারিকেন মিল্টন০৮ অক্টোবর ২০২৪

শেলি-অ্যান ম্যাককালা বলেন, অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে চান না। কারণ, কোনো ঝড় হবে না বলে তাঁদের বিশ্বাস।

৪২ বছর বয়সী ইশাক উইলমট রাজধানী কিংস্টনে পরিবারসহ আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি এএফপিকে বলেন, ‘আমাদের পরিবার ঝড় সামলাতে বেশ অভ্যস্ত।’

আরও পড়ুনহাইতিতে ম্যাথিউর আঘাতে নিহত ৮৪২০৭ অক্টোবর ২০১৬.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জ্যামাইকায় ধেয়ে আসছে দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ হারিকেন মেলিসা

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ জ্যামাইকায় ধেয়ে আসছে হারিকেন মেলিসা। দেশটির ইতিহাসে এটি হতে যাচ্ছে সবচেয়ে ভয়াবহ হারিকেন। তবে এ দ্বীপের কিছু বাসিন্দা বলছেন, চোখে না দেখলে তাঁরা বিশ্বাস করবেন না।

হারিকেন ধেয়ে আসার পরিপ্রেক্ষিতে নাগরিকদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে জ্যামাইকা সরকার। এ নির্দেশ কার্যকর করতে নাগরিকদের প্রতি সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন শীর্ষ কর্মকর্তারা। তবে প্রবল বৃষ্টি আর ঝোড়ো বাতাস শুরু হলেও অনেকে নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে যেতে চাইছেন না।

জ্যামাইকার দক্ষিণ উপকূলের শহর পোর্ট রয়্যালের একটি হোটেলের ব্যবস্থাপক জামাল পিটার্স (৩৪) বলেন, ‘জ্যামাইকানরা সাধারণত এমন নন যে একদিন উঠে হুট করে নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে চলে যাবেন। তাঁরা বরং বাড়িতে থাকতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। ঘরের দরজা-জানালা উড়ে গেলেও তাঁরা সেখানেই থাকবেন।’

পিটার্স এএফপিকে বলেন, ‘আমরা এখনো হারিকেনের প্রভাব মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে এটা আমাদের প্রথম হারিকেন নয়। তাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জ্যামাইকানরা আগেই প্রস্তুত আছেন।’

হারিকেন মেলিসা ক্যারিবীয় অঞ্চলে ১৯৮৮ সালে আঘাত হানা হারিকেন গিলবার্টের চেয়েও ভয়াবহ হতে পারে বলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। গিলবার্টের আঘাতে জ্যামাইকায় ৪০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছিলেন। ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ ও মেক্সিকোয় সব মিলিয়ে কয়েক শ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

গতকাল সোমবার হারিকেন মেলিসা সর্বোচ্চ শক্তির ক্যাটাগরি ৫ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়। ঘণ্টায় ঝড়ের গতিবেগ ছিল ১৭৫ মাইল বা ২৮০ কিলোমিটার। এর প্রভাবে ব্যাপক বৃষ্টি ও প্রাণঘাতী বন্যা হতে পারে।

হারিকেন মেলিসা ক্যারিবীয় অঞ্চলে ১৯৮৮ সালে আঘাত হানা হারিকেন গিলবার্টের চেয়েও ভয়াবহ হতে পারে বলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। গিলবার্টের আঘাতে জ্যামাইকায় ৪০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছিলেন। ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ ও মেক্সিকোয় সব মিলিয়ে কয়েক শ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

এ সতর্কতা জারির ফলে কিছু মানুষের মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তবে অন্যরা বলছেন, সবকিছু আগের মতোই চলছে।

আরও পড়ুনক্যারিবীয় অঞ্চলে অতি বিপজ্জনক রূপ নিয়েছে হারিকেন বেরিল, দ্রুত প্রস্তুতি সারার নির্দেশ০১ জুলাই ২০২৪

রয় ব্রাউন নামের এক ব্যক্তি জানান, হারিকেনের জন্য তিনি বাড়িঘর ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে চান না। তিনি বলেন, ‘হারিকেনটি ক্যাটাগরি ৬ হলেও আমি নড়ব না। মৃত্যু থেকে পালানো যাবে না। যখন ঈশ্বর চাইবেন, তখনই তিনি আমাকে নেবেন। আমি পালাচ্ছি না।’

খারাপ অবস্থার কারণেও অনেকে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে চান না বলে দাবি করেছেন রয় ব্রাউন। জেনিফার রামডিয়াল নামের এক মৎস্যজীবী নারী একই ধরনের কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি কোথাও যেতে চাই না।’

তবে মরান্ট বে প্রাইমারি স্কুলের আশ্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক শেলি-অ্যান ম্যাককালা বলেন, গত বৃহস্পতিবার থেকেই মানুষ আশ্রয় নিতে আসছেন। আগের দিনই জ্যামাইকায় হারিকেনের সতর্কতা জারি করা হয়। তবে গত বছর হারিকেন বেরিলের তুলনায় এবার কম মানুষ আশ্রয় নিতে আসছেন বলে স্বীকার করেন তিনি।

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রে ৫ মাত্রার ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে হারিকেন মিল্টন০৮ অক্টোবর ২০২৪

শেলি-অ্যান ম্যাককালা বলেন, অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে চান না। কারণ, কোনো ঝড় হবে না বলে তাঁদের বিশ্বাস।

৪২ বছর বয়সী ইশাক উইলমট রাজধানী কিংস্টনে পরিবারসহ আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি এএফপিকে বলেন, ‘আমাদের পরিবার ঝড় সামলাতে বেশ অভ্যস্ত।’

আরও পড়ুনহাইতিতে ম্যাথিউর আঘাতে নিহত ৮৪২০৭ অক্টোবর ২০১৬

সম্পর্কিত নিবন্ধ