অবমুক্তের পর দুদিন কিছু খাচ্ছে না সেই বক
Published: 28th, October 2025 GMT
পটুয়াখালীর বাউফলে নুরাইনপুর বাজারসংলগ্ন খানবাড়ি এখন ‘বকের বাড়ি’ নামে পরিচিত। বকের বাড়ি পুনরায় আলোচনায় আসার পেছনে রয়েছে মানবিক একটি ঘটনা। যা পরে মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। তারও পরে ঘটনাটি স্থান পায় পত্রিকার পাতায় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
প্রায় মাসচারেক আগে ঝড়ের দিন বকের বাড়িতে বাসা থেকে একটি বকের ছানা নিচে পড়ে যায়। সে সময় গুইসাপ দ্বারা আক্রান্ত হয় ছানাটি। ঘটনাটি দেখতে পেয়ে ছানাটিকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেন স্থানীয় ব্যবসায়ী হেমায়েত উদ্দিন। তিনি গুইসাপের আক্রমণ থেকে বকের ছানা উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে আসেন। পরিচর্যা করে ছানাটিকে তিনি সুস্থ করে তোলেন। মমতা পেয়ে বকের ছানাটি এরপর থেকেই হেমায়েদের সঙ্গী। নুরাইনপুর বাজারে হেমায়েদের দোকানে গেলে ছানাটিকে দেখা যেত তার চারপাশে ঘুরঘুর করতে। বক এবং মানুষের এমন সম্পর্কে সবাই বিস্ময় প্রকাশ করে এবং দ্রুত বিষয়টি আলোচনার জন্ম দেয়।
বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের নজরে এলে বন বিভাগ ও প্রাণী সংরক্ষণ কর্মকর্তারা হেমায়েত উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের আওতায় কোনো বন্যপাখি দীর্ঘদিন গৃহপালিত অবস্থায় রাখা যায় না বলে তারা হেমায়তকে বুঝিয়ে বলেন। পরে সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুর বারোটার দিকে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে বকটিকে অবমুক্ত করা হয়। তবে অবমুক্তের দুদিন অতিবাহিত হলেও বকটি কিছু না খেয়ে নীরব এবং এক জায়গায় স্থির রয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, মুক্ত করে দেওয়ার পর থেকেই বকটি খাবার খাচ্ছে না। তাদের ধারণা, বকটি হয়তো নতুন পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছে না, অথবা হেমায়েতের সঙ্গে তার যে সম্পর্ক ছিল সেটির অভাব বোধ করছে।
এ প্রসঙ্গে হেমায়েত উদ্দিন বলেন, ‘‘আমি আইন শ্রদ্ধা করি। বন বিভাগের কর্মকর্তারা মিডিয়ার মাধ্যমে বিষয়টি জানার পর আমার কাছে আসেন। তাদের কথায় বকটি ছেড়ে দিলে প্রথমে সেটি উড়তে চায়নি। পরে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের হাতেই বকটিকে তুলে দিয়েছিলাম। তারা বকটি অবমুক্ত করেন। যেখান থেকে পরে বকটি আহত হয়েছিল, ঠিক সেই গাছেই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু গতকাল থেকে এখন পর্যন্ত বকটি কিছু খায়নি। আমার খুব কষ্ট লাগছে। আমার কাছে থাকলে নিয়মিত খাওয়াতে পারতাম।’’
আরেকটু বড় হলে অবমুক্ত করলে ভালো হতো বলে জানান হেমায়েত উদ্দিন।
বাউফল উপজেলা বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা বদিউজ্জামান খান বলেন, ‘‘বকটি যেহেতু নির্দিষ্ট স্থানে লালন-পালন করা হচ্ছিল, তাই অন্য কোথাও অবমুক্ত করা সম্ভব হয়নি। স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বকের বাড়িতে যেহেতু আরও বকসহ বিভিন্ন পাখি রয়েছে, তাই সেখানেই বকটি অবমুক্ত করা হয়।’’
‘‘সমস্যা হচ্ছে বক লালন-পালনের কোনো সুযোগ নেই, এটি আইনগত নিষিদ্ধ,’’ উল্লেখ করে তিনি জানান, আমরা চেষ্টা করছি, গাছটির আশেপাশে বকটির জন্য খাবারের ব্যবস্থা করার।
ঢাকা/ইমরান//
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হ ম য় ত উদ দ ন বন ব ভ গ র কর মকর ত ম ক ত কর বক র ব ড়
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দরে সুরুজ বাহিনীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন
বন্দর মদনপুর একতা সমবায় সুপার মার্কেট মালিক বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ ২০০০ ইং হইতে অদ্যাবধি পর্যন্ত মার্কেট পরিচালনার অব্যবস্থা নিয়ে সুরুজ বাহিনীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিক ব্যবসায়ীরা।
এছাড়াও বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম ভূঁইয়া হিরণের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার ও ব্যবসায়ীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে সুরুজ বাহিনী হয়রানির অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে মদনপুর একতা সুপার মার্কেটের ২৭ বৎসরের অবৈধ সভাপতি, হত্যা মামলার আসামী, ওসমান পরিবারের এমপি সেলিম ওসমানের আশির্বাদপুষ্ট অগ্রণী ব্যাংক ঋণ খেলাপী, দুই ডজন মামলার আসামী, ভূমি দস্যু ও মার্কেটের ২৪টি দোকান ভাড়া জোড় পূর্বক আদায় করা ক্যাডার সুরুজ মিয়ার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ব্যবসায়ী হীরা লাল ।
দোকান মালিকদের অভিযোগ, একতা সমবায় সুপার মার্কেট মালিক বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৯৭ সনে। পরবর্তীতে ১৬/১১/২০০০ ইং সনে রেজিস্ট্রেশন হয় যাহার রেজিঃ নং ৩৩৬। মার্কেট সদস্য সংখ্যা ১০১ জনে মিলে ১১৪ শতাংশ জমি কিনে মার্কেট নির্মাণ কাজ শুরু করে মার্কেট প্রতিষ্ঠিত করেন।
শুরু হইতে সভাপতি ছিলেন সুরুজ মিয়া। কিছু দিন যাওয়ার পর সে তাহার স্বৈরাচারী মনোভাবে মার্কেট পরিচালনা করিতে থাকাবস্থায় কোন সদস্যকে গুরুত্ব না দিয়ে একাধারে ২০২৪ইং পর্যন্ত সভাপতির চেয়ার দখল করে আছেন।
ইতিমধ্যে সুরুজ যখন দেখে সে আর সভাপতি থাকতে পারবেনা এবং জেলা সমবায় অফিসার তাকে অবৈধ ঘোষণা করিলে উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে সুরুজ মিয়া মহামান্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন নং ৭৯০৫/২২ দায়ের করে।
পরবর্তীতে ১৮/২/২০২৪ ইং উক্ত রীট খারিজ হইলে এর পূর্বেই ১৯/১/২৪ ইং সুরুজ মিয়া বিনা নির্বাচনে বেআইনীভাবে তার ছেলে নাসির উদ্দিন হিরাকে সভাপতি বানাইয়া তাহার কু-কর্ম বহাল রাখে।
গত ২৫ অক্টোবর সুরুজ মিয়ার অনুগত দোসরা প্রতিবাদী বিএনপি নেতা হিরন মিয়াকে জড়াইয়া একটি ভূয়া সংবাদ সম্মেলন করে। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিয়াছে তাহার সুরুজ মিয়ার নির্দেশে করা মামলার আসামী।
তাহারা সুরুজ মিয়ার কথা মত তাহার ভয়ে মার্কেটের নিজ দোকানের ভাড়া না পাওয়া সত্ত্বেও ভাড়া পায় বলে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেয় যাহা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তারা বর্তমানের মাসের ভাড়া পায় কিন্তু পূর্বের কয়েক বছরের ভাড়া পায় নাই। অদ্য ২৮/১০/২৫ ইং তারিখ সকাল ১১.০০ ঘটিকার সময় সংবাদ সম্মেেেলন দেওয়া বক্তব্য প্রকৃত সত্য বক্তব্য দেওয়া হয়।
ইতিমধ্যে সুরুজ মিয়া তাহার অনুগত লোকদের দিয়ে নিরীহ দোকান মালিকদের নামে মামলা দিয়াছে। মামলা নং (১) ঈজ ৫৬৬/২৩ বাদী কাবিল আসামী হিরা লাল (২) ঈজ ৪৮৯/২৩ বাদী বাবুল শেখ আসামী আরিফ সরকার (৩) ঈজ ২১৮/২৩ বাদী নজরুল ইসলাম আসামী হাপেজ মোঃ ইছহাক কবির গং (৪) ঈজ ৫০৭/২৩ বাদী সুজন মিয়া আসামী আলাউদ্দিন (৫) ৫/২৫ বাদী হারুন আসামী রফিকুল ইসলাম ভূইয়া গং (৬) বন্দর থানার মামলা নং ১১ (৮)২৫ বাদী কাবিল আসামী আমিনুল হক গং (৭) দেঃ নং ১২৭/২৩ বাদী সুরুজ মিয়া আসামী রফিকুল ইসলাম ভূইয়া গং (৮) ঈজ ৫৬৬/২৩ বাদী বাবুল আসামী আমিনুল হক গং (৯) পি ৫৫/২৪ বাদী বাবুল শেখ আসামী সহিদুল গং (১০) পি ২৫২/২৩ বাদী নাজমুল হাসান আসামী রফিকুল ইসলাম ভূইয়া গং ১৩ জন, (১১)১১/৪/২৫ বাদী সবুজ মিয়া আসামী আমিনুল হক গং, (১২) ঈজ ১৩/৯/২২ বাদী সবুজ মিয়া আসামী আমিনুল হক গং।
নিম্নে সুরুজ মিয়া ও তাহার বাহিনীর অপকর্মের বিভিন্ন অপরাধের ফিরিস্তি দেওয়া হইল:অবৈধ ভাবে তার ছেলেকে সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত করা। অবৈধ ভাবে বিনা নির্বাচনে তার ছেলেকে সভাপতি বানানো। গোপনে লিজের রেলওয়ের জায়গা ৪০ শতাংশ মার্কেটের ১১ জনের পরিবর্তে নিজের নামে লীজ নেওয়া।
মার্কেটের নিজস্ব ৩২ শতাংশ কাঁচা বাজারের ভাড়া টাকা আত্মসাত করা। মার্কেটের সামনে মার্কেটের জায়গায় চার তলা ভবনের রুম গুলোর ভাড়া সে ও তার দোসরাসহ ভাগ করে নেওয়া। মার্কেটের অনেক সদস্যের নিজস্ব দোকানের ভাড়াগুলো নিয়ে যাওয়া। মার্কেটের কিছু সদস্যের নামে তার বাহিনী দ্বারা চাঁদাবাজিসহ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করা।
মার্কেটের সাউথ ইস্ট ব্যাংক থেকে মার্কেট একাউন্ট থেকে ১,১৯,০০,০০০/- টাকা নিজের একাউন্টে নিয়ে আত্মসাৎ করা যাহার চেক নং ৬১৩৬০২৭ থেকে তার নিজের ঋণ একাউন্টন ১১১.০০০.৪৭৭৭৭ তারিখ ০৯/০২/২০১৭ ইং।
২০২২ সালে মাননীয় হাই কোর্ট থেকে অবৈধ রীট ১৮/০২/২০২৪ ইং তারিখে হাই কোর্টে খারিজ করার পূর্বেই মামলা থাকাবস্থায় ১৯/০১/২০২৪ ইং তারিখে তার ছেলে নাসির উদ্দিন হিরাকে অবৈধ ভাবে সভাপতি নিয়োগ করা।
সুরুজ মিয়ার বিরুদ্ধে দুদকের গন শুনানীতে দরখাস্ত করলে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের তদন্তে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রমানিত হওয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে তার বিরুদ্ধে নোটিশ জারী হওয়ায় গত ২৫/১০/২০২৫ ইং তারিখে মিথ্যা, বানোয়াট তথ্য দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে।
গত ২৫/১০/২৫ ইং তারিখে মার্কেটের ৩য় তলার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা ও অমূলক হয়। আমরা মার্কেটের বঞ্চিত ৮ জন মালিকগণ উক্ত বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাই ও প্রশাসনের নিকট ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করি।