বিসিবির হাতে বিপিএল ফিক্সিং তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন
Published: 28th, October 2025 GMT
গত আগস্টে বিসিবির কাছে বিপিএলের ফিক্সিংয়ের অভিযোগের প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় তিন সদস্যের স্বাধীন তদন্ত কমিটি। সেই কমিটি আজ বিসিবিকে দিয়েছে চূড়ান্ত প্রতিবেদনও।
বিপিএলের সর্বশেষ আসরের পর আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দারকে প্রধান করে গঠিত কমিটির অপর দুই সদস্য আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবী ড.
বিসিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, স্বাধীন তদন্ত কমিটির দেওয়া প্রায় ৯০০ পাতার প্রতিবেদনে বিপিএলের দুর্নীতিগ্রস্ত কার্যপ্রণালি ও পরিচালনাগত ত্রুটি তুলে ধরা হয়েছে।
আইনগত প্রস্তাব, প্রাতিষ্ঠানিক পুনর্গঠন, ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর নিয়ম মেনে চলার ব্যবস্থা, খেলোয়াড়দের সুরক্ষা জোরদার, ঝুঁকি পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা ও জনসংযোগ কাঠামো আরও শক্তিশালী করতে একটি বিস্তৃত পথরেখাও রয়েছে তিন সদস্যের কমিটির প্রতিবেদনে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্বাধীন তদন্ত কমিটির দেওয়া প্রতিবেদন নিয়ে আর কোনো মন্তব্য করবে না বিসিবি। তবে তাদের দেওয়া সুপারিশগুলো মাথায় রেখে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে আরও তদন্ত করার কথা জানিয়েছে তারা। এ ক্ষেত্রে আইসিসি দুর্নীতিবিরোধী আইনের ধারা মেনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাহায্যও নেওয়া হবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
গত আগস্টেই বিসিবির দুর্নীতিবিরোধী বিভাগে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগের সাবেক কর্মকর্তা অ্যালেক্স মার্শালকে। তিনিই বিপিএলের স্বাধীন তদন্ত কমিটির দেওয়া প্রতিবেদনটি নিয়ে পরবর্তী কাজ করবেন বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুনবিপিএলের টাকার ভাগ পাবে ফ্র্যাঞ্চাইজিরাও১৪ অক্টোবর ২০২৫এদিকে আজ ছিল দ্বাদশ বিপিএলের জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজি পেতে আগ্রহ প্রকাশের শেষ দিন। সন্ধ্যায় বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্যসচিব ইফতেখার রহমান মিরপুরে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, দল পেতে ১০টি প্রতিষ্ঠান আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আগামী ডিসেম্বর–জানুয়ারিতে বিপিএল হতে পারে ৫–৬টি দল নিয়ে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত কম ট র ব প এল র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
মামলা করবেন না সাজিদের বাবা
রাজশাহীর তানোর উপজেলার কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামে গভীর নলকূপের পরিত্যক্ত বোরহোলে পড়ে দুবছরের শিশু সাজিদের মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ দেশ। যে ব্যক্তি বোরহোলটি খুঁড়েছিলেন, সেই কছির উদ্দিন ঘটনার পর থেকেই পলাতক। মাটির প্রায় ৫০ ফুট গভীর থেকে সাজিদের নিথর দেহ উদ্ধারের পর প্রথমে অবহেলার অভিযোগ তুলে তার বিচার দাবি করলেও এখন মামলা করতে চান না শিশুটির বাবা রাকিবুল ইসলাম।
শনিবার সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা হলে রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘‘আল্লাহর মাল আল্লাহই নিয়েছেন। আমরা বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছি মামলা করব না।’’
পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
আগে অবহেলার অভিযোগ তুলে বিচার চাওয়ার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিলে রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘‘সেটা বলেছিলাম যেন গোটা দেশ সতর্ক হয়। এই ভুলটা আর কেউ যেন না করে- এ জন্যই কথাটা বলেছিলাম। আমার বাচ্চাটা যেভাবে গেছে, সবাই যদি আগে থেকেই সচেতন হয়, তাহলে ইনশাআল্লাহ এমন ক্ষতি আর হবে না। আমার ঘটনার মধ্য দিয়ে যদি অন্যরা শিক্ষা পায়, সেটাই চাই।’’
মামলা না করতে কোনো ধরনের চাপ আছে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘আমার ওপর কোনো চাপ নেই। গোটা দেশ আমাদের পক্ষে আছে। ইনশাআল্লাহ পুলিশ-প্রশাসনও আমাদের পাশে আছে।’’
পলাতক কছির উদ্দিন এলাকায় ফিরে কোনো সহানুভূতি জানিয়েছেন কি না- জানতে চাইলে রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘‘না। উনি এখনও এলাকায় আসেননি। আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগও করেননি।’’
উল্লেখ্য, গত বুধবার দুপুরে বাড়ির পাশেই কছির উদ্দিনের জমিতে থাকা গভীর নলকূপের ৮ ইঞ্চি ব্যাসার্ধের পরিত্যক্ত বোরহোলে পড়ে যায় শিশু সাজিদ। ফায়ার সার্ভিসের প্রায় ৩১ ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানের পর বৃহস্পতিবার রাতে মাটির ৫০ ফুট নিচ থেকে সাজিদের নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় সাজিদের মা রুনা খাতুন শুরু থেকেই বিচার দাবি করে আসছিলেন। তিনি বলেছিলেন, কছির উদ্দিন আমার বাড়ির পাশে এভাবে তিন জায়গায় গর্ত করে ফেলে রেখেছে। কেন এভাবে ফেলে রাখল, গর্তগুলো কেন বন্ধ করল না? আমি বিচার চাই।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কছির উদ্দিন আগে বিদেশে ছিলেন। দেশে ফিরে তিনি পানির ব্যবসা শুরু করেন এবং এলাকায় পাঁচটি অগভীর নলকূপ (সেমিডিপ) স্থাপন করেন। অভিযোগ রয়েছে, অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে এসব সেমিডিপ চালানো হচ্ছিল।
বছরখানেক আগে উপজেলা সেচ কমিটির অনুমোদন ছাড়াই আরও একটি সেমিডিপ বসাতে বোরহোল করান কছির উদ্দিন। মাটির প্রায় ৯০ ফুট গভীরে যাওয়ার পর পাথর উঠতে থাকায় তিনি পরপর তিনটি স্থানে বোরহোল করেন। তবুও পানির সন্ধান না মেলায় সেখানে সেমিডিপ বসানো হয়নি। সেই পরিত্যক্ত বোরহোলগুলোর একটিতে পড়ে মারা যায় শিশু সাজিদ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাঈমা খান বলেন, ‘‘কছির উদ্দিনের অবহেলার কারণেই এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। ভিকটিমের পরিবার যেভাবে চাইবে, সেভাবেই আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
পদাধিকারবলে উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি হিসেবে ইউএনও জানান, কছির উদ্দিনের আগের কয়েকটি সেচপাম্প বৈধ কি না যাচাই করা হবে। তবে যে বোরহোলে পড়ে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে, সেটির জন্য কোনো অনুমোদন নেওয়া হয়নি। এটি ছিল বেআইনি কাজ।
এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে নাঈমা খান বলেন, ‘‘সবকিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ঘটনার পর থেকেই কছির উদ্দিন আত্মগোপনে থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
ঢাকা/শিরিন//