টেস্ট ক্রিকেটের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য অনুযায়ী দিনের বিরতিগুলোর ক্রম থাকে- টস, লাঞ্চ, টি এবং শেষে স্টাম্পস। কিন্তু আসন্ন ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় টেস্টে সেই নিয়ম ভেঙে দেখা যাবে এক অভিনব দৃশ্য। ২২ নভেম্বর গৌহাটির বারসাপারা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হতে যাওয়া এই টেস্টে লাঞ্চের আগে দেওয়া হবে টি-ব্রেক। ভারতীয় টেস্ট ইতিহাসে যা ঘটছে প্রথমবারের মতো।

কেন লাঞ্চের আগে টি-ব্রেক?
গৌহাটির বারসাপারা স্টেডিয়াম ভারতের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত। যেখানে সূর্যোদয় হয় দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে অনেক আগে। ফলে সন্ধ্যা নেমেও আসে তাড়াতাড়ি। এই প্রাকৃতিক সময়ের পার্থক্যের কারণে দিনের পূর্ণ ৯০ ওভার খেলা শেষ করা প্রায়ই কঠিন হয়ে পড়ে। তাই খেলার সময় সর্বোচ্চভাবে কাজে লাগাতে এবং আলো নিভে যাওয়ার আগেই দিনের খেলা শেষ করতে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) ও ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকা (সিএসএ) যৌথভাবে বিরতির সময়সূচিতে পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আরো পড়ুন:

রোহিতের সেঞ্চুরির ‘হাফ-সেঞ্চুরি’, ঢুকলেন এলিট ক্লাবে

রশিদ-জাম্পাকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশের রিশাদ

নতুন সময়সূচি:
নতুন সূচি অনুযায়ী ম্যাচ শুরু হবে সকাল ৯টায়। যা ভারতের স্বাভাবিক টেস্ট সময়ের (সকাল ৯টা ৩০ মিনিট) চেয়ে আধঘণ্টা আগে।

প্রথম সেশন: সকাল ৯টা থেকে ১১টা,
টি-ব্রেক: সকাল ১১টা থেকে ১১টা ২০ পর্যন্ত (২০ মিনিট),
দ্বিতীয় সেশন: সকাল ১১টা ২০ থেকে দুপুর ১টা ২০ পর্যন্ত,
লাঞ্চ ব্রেক: দুপুর ১টা ২০ থেকে ২টা পর্যন্ত (৪০ মিনিট),
শেষ সেশন: দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

এতে সূর্যাস্তের আগেই খেলা শেষ করা সম্ভব হবে। আবার দর্শকরাও পাবেন দিনের পূর্ণ খেলার স্বাদ।

ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে এই পরিবর্তন নিঃসন্দেহে এক অভিনব অধ্যায়, যা প্রমাণ করে খেলার সৌন্দর্য যেমন ঐতিহ্যে, তেমনি তা সময়ের প্রয়োজনেও অভিযোজিত হয়।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক র ক ট র কর ড

এছাড়াও পড়ুন:

সুগন্ধি চাল রপ্তানির সময় বাড়ল ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত

সুগন্ধি চাল রপ্তানির সময়সীমা এক মাস বাড়িয়েছে সরকার। এ বৃদ্ধি ৫০ প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রযোজ্য। আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানগুলো সুগন্ধি চাল রপ্তানি করতে পারবে। তাদের আগের সময়সীমা ছিল ৩০ সেপ্টেম্বর।

রপ্তানি সময়সীমা শেষ হওয়ার প্রায় এক মাস পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গতকাল সোমবার সময় বৃদ্ধির কথা জানিয়ে আমদানি-রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। আলাদা করে চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয়েছে ৫০ প্রতিষ্ঠানকে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ বছর দুই দফায় মোট ১৮৭ প্রতিষ্ঠানকে সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমতি দেয়। ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রপ্তানির মেয়াদ দিয়ে ৮ এপ্রিল অনুমতি দেওয়া হয় ১৩৩ প্রতিষ্ঠানকে আর ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ দিয়ে ২৮ মে অনুমতি দেওয়া হয় ৫২ প্রতিষ্ঠানকে। যে ৫০ প্রতিষ্ঠানকে নতুন সময়সীমা দেওয়া হয়েছে, সেগুলো ৮ এপ্রিল অনুমতি পাওয়া। সবাই রপ্তানি করতে পারলে মোট পরিমাণ হবে ২৩ হাজার ৯৫০ টন।

সূত্রগুলো জানায়, ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রপ্তানির সময়সীমা যাদের ছিল, তাদের অনেকেই রপ্তানি করতে না পেরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে সময় বৃদ্ধির আবেদন জানায়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্ত দিতে এক মাস সময় নেয়।

প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা অনুযায়ী ১০০, ১৫০, ২০০, ৩০০, ৪০০ ও ৫০০ টন করে অনুমতি দেওয়া হয় এ বছর। শর্ত হিসেবে বলা হয়, প্রতি কেজি চালের রপ্তানি মূল্য হতে হবে কমপক্ষে ১ দশমিক ৬০ মার্কিন ডলার। প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে হিসাব করলে বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রতি কেজি চালের দাম পড়বে ১৯৫ টাকা।

অন্য শর্তের মধ্যে রয়েছে অনুমোদিত পরিমাণের বেশি চাল কেউ রপ্তানি করতে পারবে না। আর প্রতিটি চালান জাহাজীকরণ শেষে রপ্তানিসংক্রান্ত সব কাগজপত্র বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে। এ অনুমোদন কোনোভাবেই হস্তান্তরযোগ্য নয়। অর্থাৎ অনুমোদিত রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান নিজে রপ্তানি না করে অন্যের মাধ্যমে রপ্তানি করতে পারবে না অর্থাৎ সাব-কন্ট্রাক্ট দেওয়া যাবে না।

রপ্তানি নীতি আদেশ অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে সব সময়ই চাল রপ্তানি নিষিদ্ধ, তবে সরকারের অনুমতি নিয়ে সুগন্ধি চাল রপ্তানির সুযোগ রয়েছে।

কোন বছর কত রপ্তানি

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরে সুগন্ধি চাল রপ্তানি করে ২৮ লাখ ৮০ হাজার ডলার আয় হয়েছিল। পরের বছর ২০২০-২১ অর্থবছরে তা কমে দাঁড়ায় ২০ লাখ ৬০ হাজার ডলারে। ২০২১-২২ অর্থবছরে এই আয় আরও কমে ১০ লাখ ৭০ হাজার ডলারে নেমে আসে। এরপর ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকার সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমতি স্থগিত রাখে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো জানায়, ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে বাংলাদেশ সুগন্ধি চাল রপ্তানি শুরু করে। প্রথম বছর ৬৬৩ টন সুগন্ধি চাল রপ্তানি হয়। পরের বছরগুলোতে রপ্তানি বাড়তে থাকে, যা ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১০ হাজার ৮৭৯ টনে উন্নীত হয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, দেশে বছরে সুগন্ধি চাল উৎপাদিত হয় ১৮ থেকে ২০ লাখ টন। প্রতিবছর গড়ে রপ্তানি হয় ১০ হাজার টন।

কোথায় রপ্তানি হয়

বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠান যুক্তরাজ্য, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ব্রুনেই, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিশ্বের ১৩০টির বেশি দেশে এ চাল রপ্তানি করে আসছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে রপ্তানিযোগ্য সুগন্ধি চালের একটি তালিকা রয়েছে। এগুলো হচ্ছে কালিজিরা, কালিজিরা টিপিএল-৬২, চিনিগুঁড়া, চিনি আতপ, চিনি কানাই, বাদশাভোগ, কাটারিভোগ, মদনভোগ, রাঁধুনিপাগল, বাঁশফুল, জটাবাঁশফুল, বিন্নাফুল, তুলসী মালা, তুলসী আতপ, তুলসী মণি, মধুমালা, খোরমা, সাককুর খোরমা, নুনিয়া, পশুশাইল, দুলাভোগ ইত্যাদি।

সুগন্ধি চাল রপ্তানির সঙ্গে খাদ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়—এ তিন দপ্তর জড়িত। জানা গেছে, সুগন্ধি চাল রপ্তানি করতে গেলে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সম্মতি নিতে হয়, এবারও তা নিতে হয়েছে। রপ্তানিকারকেরা বলছেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অনুমতি দিলেও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যদি ফাইটো স্যানিটারি সনদ না দেয়, তাহলে কেউই সুগন্ধি চাল রপ্তানি করতে পারে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জবির ভর্তি পরীক্ষার চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা
  • সুগন্ধি চাল রপ্তানির সময় বাড়ল ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত