ঝালকাঠির রাজাপুরে আবু বকর (১২) নামের এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে লাঠি দিয়ে বেদম পিটিয়ে আহত করেছেন তার শিক্ষক। ওই শিক্ষার্থী রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাতে রাজাপুর উপজেলার গালুয়া দারুল কুরআন নূরানি কওমি মাদ্রাসায় ওই ছাত্রকে পেটানো হয়। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। 

অভিযুক্ত শিক্ষক জুনায়েদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ। 

আবু বকর রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়ার মিঞা বাড়ি এলাকার মহসিনের ছেলে। সে গালুয়া দারুল কুরআন নূরানি কওমি মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র। শিক্ষক জুনায়েদ (২৬) সাতুরিয়া এলাকার জাহাঙ্গীরের ছেলে।

আবু বকর সাংবাদিকদের বলেছে, বাবা-মায়ের সাথে আমাকে কথা বলতে দিতেন না জুনায়েদ হুজুর। তিনি বলতেন, বার বার বাড়িতে কথা বললে মায়া বাড়ে। তাই, লুকিয়ে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতার ছেলে তানভীরের মোবাইল ফোন থেকে আমার বাবার সাথে কথা বলায় শিক্ষক জুনায়েদ ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। পরে গাব গাছের লাঠি দিয়ে আমার সারা শরীরে পেটায়। 

আবু বকরের বাবা মহসিন বলেছেন, শিক্ষককে ফোন করে আমার ছেলেকে না মারার জন্য অনুরোধ করছি। তারপরও তাকে চরমভাবে মেরেছে। আমি তার শাস্তি চাই। 

তবে, অভিযুক্ত শিক্ষক জুনায়েদ বলেছেন, আবু বকর কথা শোনে না। তাই, তাকে কয়েকটি পিটুনি দিয়েছি। কিন্তু, রাগের মাথায় মাইর বেশি হয়ে গেছে। 

মাদ্রাসার পরিচালক মো.

মজিবুর রহমান বলেছেন, আবু বকরকে যেভাবে মারা উচিত ছিল, তার চেয়ে বেশি মারা হয়েছে। এজন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। আমি কমিটির সবাইকে বিষয়টি জানিয়েছি। এখন অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিটিংএ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 

রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেছেন, আবু বকরের বিষয়ে খোঁজ নিতে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা/অলোক/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বল ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেটে সাংবাদিকের মুঠোফোন ভাঙচুর: আওয়ামী লীগ নেতাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা

সিলেটে আদালত প্রাঙ্গণে খবর সংগ্রহের সময় সাংবাদিকের ওপর হামলা ও মুঠোফোন ভাঙচুরের ঘটনায় কোম্পানীগঞ্জে সাদাপাথর ও বালু লুট মামলায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতা কাজী আবদুল ওয়াদুদসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

হামলার শিকার ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক নয়ন সরকার গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সিলেটের কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। এতে আওয়ামী লীগ নেতা কাজী আবদুল ওয়াদুদ, তাঁর ভাই ও ছেলে কাজী বায়জিদ আহমেদকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার পরপরই পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ পাওয়ার পরই সেটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, মামলার প্রধান আসামি কারাগারে রয়েছেন এবং অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সাদাপাথর লুট–কাণ্ডে গ্রেপ্তার হওয়া আবদুল ওয়াদুদকে রিমান্ড শুনানির জন্য সিলেট আদালত প্রাঙ্গণে আনা হয়। সে সময় তাঁর সমর্থক ও নেতা–কর্মীরা আদালত এলাকায় জড়ো হন। শুনানি শেষে আদালত ভবনের চতুর্থ তলা থেকে তাঁকে হাজতখানায় নেওয়ার সময় কয়েকজন সাংবাদিক ভিডিও ধারণ করছিলেন।

এ সময় পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় আবদুল ওয়াদুদ সাংবাদিক নয়ন সরকারের মুঠোফোন কেড়ে নেন। অন্যদিকে আরেকটি অনলাইন পোর্টালের সাংবাদিক বিশাল দের মুঠোফোন কেড়ে নেন ওয়াদুদের ছেলে কাজী বায়জিদ আহমেদ। বায়জিদ পরে ফোনে থাকা ভিডিও মুছে সেটি ফেরত দেন। এ ঘটনায় অন্য সাংবাদিকেরা এগিয়ে গেলে তাঁদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। আসামিদের প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় ওয়াদুদ ও তাঁর সহযোগীরা আদালত প্রাঙ্গণে হট্টগোল করেন।

সাংবাদিক নয়ন সরকারের অভিযোগ, পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় আসামি তাঁর মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে হাজতে চলে যান। পুলিশ তাঁর মুঠোফোন উদ্ধারে কোনো সহযোগিতা করেনি। পরে তিনি জানতে পারেন, ফোনটি ভেঙে ফেলা হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে সিলেট আদালত পুলিশের পরিদর্শক জামশেদ আলম বলেন, সাংবাদিকেরা খুব কাছ থেকে আসামির ছবি তুলছিলেন। একপর্যায়ে আসামি এক সাংবাদিকের মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলেন। ভাঙা মুঠোফোনটি পুলিশের হেফাজতে আছে। আদালত প্রাঙ্গণে তখন অনেক ভিড় ছিল। কারা সাংবাদিক আর কারা আসামির লোকজন, সেটি জানার উপায় ছিল না।

অভিযুক্ত আসামি কাজী আবদুল ওয়াদুদ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এবং তেলিখাল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। তিনি সাদাপাথর ও বালু লুট, হত্যা এবং ছাত্র আন্দোলনে হামলাসহ ১৯টি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। বর্তমানে তিনি একটি মামলায় রিমান্ডে রয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ