জকসুতে আরও ১৩ পদ সংযুক্তি চায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল
Published: 30th, October 2025 GMT
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল শিক্ষার্থী সংসদসমূহের গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা, ২০২৫–এর সংশোধনী চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। গঠনতন্ত্রে আরও ১৩টি পদ সংযুক্তির দাবি জানিয়েছে তারা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ছাত্রদল জকসু গঠনবিধিতে ১০টি নতুন সম্পাদক পদ সৃষ্টির দাবি জানিয়েছে। পদগুলোর মধ্যে রয়েছে, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থী বিষয়ক সম্পাদক, শুধু নারীদের জন্য বরাদ্দকৃত ছাত্রীকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক, দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক, ধর্ম ও সম্প্রীতি বিষয়ক সম্পাদক, মিডিয়া ও যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক, দপ্তর সম্পাদক এবং বিতর্ক সম্পাদক।
পাশাপাশি বর্তমান স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদকে বিভক্ত করে স্বাস্থ্য সম্পাদক ও পরিবেশ সম্পাদক এই দুটি আলাদা পদ সৃষ্টির দাবি তুলেছে ছাত্রদল। একইভাবে সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক পদটিকে ভেঙে সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পাদক—এই দুটি পৃথক পদ গঠনের প্রস্তাব করেছে। কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া বিষয়ক সম্পাদক পদ সৃষ্টিরও দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
এ ছাড়া বর্তমান সংবিধিতে উল্লিখিত সদস্যপদগুলোর সাথে আরও তিনটি নতুন সদস্যপদ যুক্ত করে ১০টি সদস্যপদ করার প্রস্তাব করেছে ছাত্রদল।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি), শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরে ২৭ অক্টোবর জকসুর সংবিধি চূড়ান্ত হয়। সংবিধিতে জকসুতে ২১টি পদ রাখা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ছাত্রদল বলেছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন নানা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। সেশনজট, গবেষণা সংকট, আবাসন ও পরিবহন সমস্যা, ক্যানটিন ও লাইব্রেরির সীমাবদ্ধতার মতো ইস্যুগুলো দীর্ঘদিনের। ছাত্রদলের চাওয়া, জকসু শুধু রাজনৈতিক নয়, শিক্ষার্থীদের বাস্তব জীবনের সমস্যা সমাধানের প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠবে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত ২৮ সেপ্টেম্বর ইউজিসিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল স্মারকলিপি প্রদান করে। স্মারকলিপিতে জকসুর সংবিধিতে পদ সংযোজন করার দাবি জানানো হয়েছিল। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসনের সুযোগ না থাকায় বেশির ভাগ শিক্ষার্থী বাসাবাড়িতে থাকেন। শুধু একটি ছাত্রী হল রয়েছে, সেখানে সংকট সীমাহীন। যেহেতু হল নেই, সেখানে ছাত্র সংসদ বিদ্যমান না থাকায় জকসুতে সম্পাদকীয় পদ বৃদ্ধির কথা জানানো হয়েছিল। ১৮ হাজার শিক্ষার্থীর প্রতিনিধিত্ব ও সংকট সমাধানে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সম্পাদকীয় পদ সৃষ্টি অত্যাবশ্যকীয়।
সংবাদ সম্মেলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘আমাদের চাহিদা অনুযায়ী প্রশাসন কিছু পদ সংযুক্ত করেছে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমাদের প্রত্যাশা ছিল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি অত্যাধুনিক, যুগোপযোগী এবং বাস্তবসম্মত জকসু নীতিমালা প্রণয়ন করবে। কিন্তু আমরা জকসু নীতিমালায় একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে প্রশাসনের ব্যাপক তাড়াহুড়ো দেখেছি, যা খুবই হতাশাজনক। আমরা আশা করছি আমাদের দাবি করা পদগুলো নীতিমালাতে সংযুক্ত করা হবে।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর প্রথমবার জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে—এটি নিঃসন্দেহে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। আমরা আশা করি এই নির্বাচন হবে অবাধ, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক। প্রশাসন সব ছাত্রসংগঠনকে সমান সুযোগ দেবে, যাতে প্রত্যেকে গণতান্ত্রিকভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে।’
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গত আগস্টে আনুষ্ঠানিকভাবে জকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করে। রোডম্যাপ অনুযায়ী ভোটার তালিকা প্রকাশ, সংশোধন, মনোনয়নপত্র জমা ও যাচাইসহ সব ধাপ শেষে আগামী ২৭ নভেম্বর ভোট গ্রহণের কথা রয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পদ স ষ ট ছ ত রদল ক ত কর পদ স য
এছাড়াও পড়ুন:
তিন জরিপে প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে এগিয়ে মামদানি
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনের শেষ পর্যায়ে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী ও শীর্ষ প্রতিদ্বন্দ্বী জোহরান মামদানি সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোর চেয়ে এগিয়ে আছেন। তিনটি পৃথক জরিপে মামদানিকে ১০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ব্যবধানে এগিয়ে থাকতে দেখা যায়। যুক্তরাষ্ট্রের কুইনিপিয়াক বিশ্ববিদ্যালয়ের বুধবার প্রকাশিত এক জরিপে দেখা গেছে, দুজনের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা বেড়েছে। মামদানি কুমোর চেয়ে মাত্র ১০ শতাংশ এগিয়ে। মামদানির সমর্থন ৪৩ শতাংশ আর কুমোর ৩৩ শতাংশ। রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়ার সমর্থন ১৪ শতাংশ।
কয়েক সপ্তাহ আগের জরিপে মামদানির সমর্থন ছিল ৪৬ শতাংশ, কুমোর ৩৩ শতাংশ। তবে মেয়র এরিক অ্যাডামস নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেওয়ার পর কুমোর অবস্থান কিছুটা শক্ত হয়েছে।
কুইনিপিয়াক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী পরিচালক মেরি স্নো বলেন, ‘জোহরান মামদানি বর্তমানে অ্যান্ড্রু কুমোর চেয়ে ১০ শতাংশ এগিয়ে আছেন, কার্টিস স্লিওয়ার অনেক পিছিয়ে। তবে এখনো একটি অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। সম্ভাব্য ভোটারদের মধ্যে যাঁরা এখনো সিদ্ধান্ত নেননি, তাঁদের হার কুমোর ক্ষেত্রে কিছুটা বেড়েছে, যা শেষ মুহূর্তে ফল পরিবর্তনের সুযোগ তৈরি করছে।’
তবে এমারসন কলেজ, পিক্স ১১ ও দ্য হিলের যৌথ জরিপে দেখা গেছে, মামদানি স্বতন্ত্র প্রার্থী কুমোর চেয়ে অনেক বেশি ব্যবধানে এগিয়ে আছেন। তাঁদের মধ্যকার ব্যবধান ২৫ শতাংশ। এই জরিপে মামদানি পেয়েছেন ৫০ শতাংশ সমর্থন, কুমো ২৫ শতাংশ।
ওই জরিপ অনুযায়ী, রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া ২১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন পেয়েছেন, যা মামদানিবিরোধী ভোটকে কুমো ও স্লিওয়ার মধ্যে ভাগ করে দিয়েছে। স্লিওয়ার সমর্থন অন্য জরিপগুলোর তুলনায় বেশি।
গত মাসে এমারসন কলেজের আগের জরিপের তুলনায় মামদানির সমর্থন ৭ শতাংশ বেড়েছে। বর্তমানে মামদানির সমর্থন ৫০ শতাংশ। অন্যদিকে কুমোর সমর্থন ৩ শতাংশ কমে ২৫ শতাংশে নেমেছে। স্লিওয়ার সমর্থন দ্বিগুণ বেড়ে ১০ থেকে ২১ শতাংশ হয়েছে।
ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিতে কুমোকে পরাজিত করার পর কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের মধ্যে জোহরান মামদানির সমর্থন উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। তাঁর সমর্থন ৫০ শতাংশ থেকে লাফিয়ে ৭১ শতাংশে পৌঁছেছে, যা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভোটারগোষ্ঠীর দৃঢ় সমর্থন প্রতিফলিত করে। এদিকে মারিস্ট ইনস্টিটিউট ফর পাবলিক ওপিনিয়নের সর্বশেষ জরিপে দেখা গেছে, মামদানি কুমোর চেয়ে ১৬ শতাংশ এগিয়ে আছেন তাঁদের সমর্থন যথাক্রমে ৪৮ শতাংশ ও ৩২ শতাংশ। রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া পেয়েছেন ১৬ শতাংশ ভোটারের সমর্থন।
তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয় মামদানিমারিস্ট জরিপে দেখা গেছে, ৪৫ বছরের নিচের তরুণ ভোটারদের মধ্যে জোহরান মামদানির বিপুল জনপ্রিয়তা। এই গোষ্ঠীতে তাঁর সমর্থন ৬৪ শতাংশ, যেখানে কুমোর পক্ষে মাত্র ২১ শতাংশ। তবে ৪৫ বছরের ঊর্ধ্ব ভোটারদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হাড্ডাহাড্ডি। কুমোর সমর্থন ৩৯ শতাংশ এবং মামদানি ৩৮ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন। উদারপন্থী ভোটারদের মধ্যে মামদানি বড় ব্যবধানে এগিয়ে থাকলেও মধ্যপন্থী ভোটারদের মধ্যে কুমো সামান্য এগিয়ে। অন্যদিকে রক্ষণশীল ভোটারদের ৪৫ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া—যা মামদানি ও কুমোর চেয়েও বেশি।
ইহুদি ভোটারদের সমর্থন ধরে রেখেছেন মামদানিআগামী ৪ নভেম্বর নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এর আগেই জোহরান এমন এক সূক্ষ্ম ভারসাম্যের পথে হাঁটছেন, যেখানে একদিকে রয়েছে তাঁর দীর্ঘদিনের ইসরায়েলবিরোধী ও ফিলিস্তিনপন্থী অবস্থান, অন্যদিকে তিনি বিশাল ইহুদি জনগোষ্ঠীর সমর্থন আদায়েও কাজ করে যাচ্ছেন। জোহরানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে একাধিক প্রগতিশীল ইহুদি সংগঠন। যেমন বেন্ড দ্য আর্ক, জিউইশ ভয়েস ফর পিস (জেভিপি) অ্যাকশন এবং জিউস ফর রেসিয়াল অ্যান্ড ইকোনমিক জাস্টিস (জেএফআরইজে)। এসব সংগঠন প্রকাশ্যে গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের ভূমিকার সমালোচনা করেছে এবং জোহরানের প্রচারে মাঠে নেমেছে। জরিপে দেখা যাচ্ছে, নিউইয়র্কে বসবাসরত ইহুদি ভোটারদের মধ্যে জোহরান মামদানিই সবচেয়ে এগিয়ে আছেন। গত জুলাইয়ে জেনিথ রিসার্চ পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায়, জোহরান ইহুদি ভোটারদের মধ্যে ১৭ শতাংশ এগিয়ে আছেন। বর্তমানে এখনো তাঁর সমর্থন ১০ শতাংশ বেশি।