বগুড়ার শিবগঞ্জে জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে হওয়া মামলার আসামি জাতীয় পার্টির (জাপা) দুই নেতা বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। গতকাল বুধবার এবং গত মঙ্গলবার শিবগঞ্জ উপজেলার সৈয়দপুর ও মাঝিহট্ট ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত আলাদা দুটি কর্মী সমাবেশে এই দুই ইউপি চেয়ারম্যান কর্মী–সমর্থক নিয়ে বিএনপিতে যোগ দেন।

দুটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বগুড়া-২ আসনে বিএনপির সম্ভ্যাব্য প্রার্থী এবং শিবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মীর শাহে আলম।

এই দুজন হলেন শিবগঞ্জ উপজেলা জাপার সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সৈয়দপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোত্তালেব মোল্লা এবং মাঝিহট্ট ইউনিয়ন পরিষদে জাপা-সমর্থিত চেয়ারম্যান মির্জা এসকেন্দার আলী শাহানা। তাঁরা দুজনই বগুড়া-২ আসনের জাতীয় পার্টির (জাপা) সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা জাপার সভাপতি শরিফুল ইসলাম জিন্নাহর ‘ঘনিষ্ঠ সহযোগী’ হিসেবে পরিচিত বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও দলীয় নেতারা। অবৈধভাবে বিপুল অর্থসম্পদ অর্জনের দায়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় অভিযুক্ত শরিফুল ইসলাম গত বছরের ৫ আগস্টের পর আত্মগোপনে আছেন।

শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

শাহীনুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, আবদুল মোত্তালেব মোল্লা ও এসকেন্দার আলীর বিরুদ্ধে শিবগঞ্জ ও বগুড়া সদর থানায় গত বছরের জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও জুলাই যোদ্ধাদের হত্যাচেষ্টায় বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা রয়েছে। দুটি মামলা এখনো তদন্তাধীন। তাঁরা জামিনে আছেন কি না তা নথি না দেখে বলা সম্ভব নয়।

শিবগঞ্জ থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত বছর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আসামিরা শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা বাজারে দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ছাত্র-জনতার মিছিলে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে। এ সময় মিছিলে থাকা মিনহাজ নামের একজন গুলিবিদ্ধ হয়।

আবদুল মোত্তালেব মোল্লা

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ বগঞ জ উপজ ল ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

তিন জরিপে প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে এগিয়ে মামদানি

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনের শেষ পর্যায়ে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী ও শীর্ষ প্রতিদ্বন্দ্বী জোহরান মামদানি সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোর চেয়ে এগিয়ে আছেন। তিনটি পৃথক জরিপে মামদানিকে ১০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ব্যবধানে এগিয়ে থাকতে দেখা যায়। যুক্তরাষ্ট্রের কুইনিপিয়াক বিশ্ববিদ্যালয়ের বুধবার প্রকাশিত এক জরিপে দেখা গেছে, দুজনের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা বেড়েছে। মামদানি কুমোর চেয়ে মাত্র ১০ শতাংশ এগিয়ে। মামদানির সমর্থন ৪৩ শতাংশ আর কুমোর ৩৩ শতাংশ। রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়ার সমর্থন ১৪ শতাংশ।

কয়েক সপ্তাহ আগের জরিপে মামদানির সমর্থন ছিল ৪৬ শতাংশ, কুমোর ৩৩ শতাংশ। তবে মেয়র এরিক অ্যাডামস নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেওয়ার পর কুমোর অবস্থান কিছুটা শক্ত হয়েছে।

কুইনিপিয়াক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী পরিচালক মেরি স্নো বলেন, ‘জোহরান মামদানি বর্তমানে অ্যান্ড্রু কুমোর চেয়ে ১০ শতাংশ এগিয়ে আছেন, কার্টিস স্লিওয়ার অনেক পিছিয়ে। তবে এখনো একটি অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। সম্ভাব্য ভোটারদের মধ্যে যাঁরা এখনো সিদ্ধান্ত নেননি, তাঁদের হার কুমোর ক্ষেত্রে কিছুটা বেড়েছে, যা শেষ মুহূর্তে ফল পরিবর্তনের সুযোগ তৈরি করছে।’

তবে এমারসন কলেজ, পিক্স ১১ ও দ্য হিলের যৌথ জরিপে দেখা গেছে, মামদানি স্বতন্ত্র প্রার্থী কুমোর চেয়ে অনেক বেশি ব্যবধানে এগিয়ে আছেন। তাঁদের মধ্যকার ব্যবধান ২৫ শতাংশ। এই জরিপে মামদানি পেয়েছেন ৫০ শতাংশ সমর্থন, কুমো ২৫ শতাংশ।

ওই জরিপ অনুযায়ী, রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া ২১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন পেয়েছেন, যা মামদানিবিরোধী ভোটকে কুমো ও স্লিওয়ার মধ্যে ভাগ করে দিয়েছে। স্লিওয়ার সমর্থন অন্য জরিপগুলোর তুলনায় বেশি।

গত মাসে এমারসন কলেজের আগের জরিপের তুলনায় মামদানির সমর্থন ৭ শতাংশ বেড়েছে। বর্তমানে মামদানির সমর্থন ৫০ শতাংশ। অন্যদিকে কুমোর সমর্থন ৩ শতাংশ কমে ২৫ শতাংশে নেমেছে। স্লিওয়ার সমর্থন দ্বিগুণ বেড়ে ১০ থেকে ২১ শতাংশ হয়েছে।

ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিতে কুমোকে পরাজিত করার পর কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের মধ্যে জোহরান মামদানির সমর্থন উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। তাঁর সমর্থন ৫০ শতাংশ থেকে লাফিয়ে ৭১ শতাংশে পৌঁছেছে, যা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভোটারগোষ্ঠীর দৃঢ় সমর্থন প্রতিফলিত করে। এদিকে মারিস্ট ইনস্টিটিউট ফর পাবলিক ওপিনিয়নের সর্বশেষ জরিপে দেখা গেছে, মামদানি কুমোর চেয়ে ১৬ শতাংশ এগিয়ে আছেন তাঁদের সমর্থন যথাক্রমে ৪৮ শতাংশ ও ৩২ শতাংশ। রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া পেয়েছেন ১৬ শতাংশ ভোটারের সমর্থন।

তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয় মামদানি

মারিস্ট জরিপে দেখা গেছে, ৪৫ বছরের নিচের তরুণ ভোটারদের মধ্যে জোহরান মামদানির বিপুল জনপ্রিয়তা। এই গোষ্ঠীতে তাঁর সমর্থন ৬৪ শতাংশ, যেখানে কুমোর পক্ষে মাত্র ২১ শতাংশ। তবে ৪৫ বছরের ঊর্ধ্ব ভোটারদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হাড্ডাহাড্ডি। কুমোর সমর্থন ৩৯ শতাংশ এবং মামদানি ৩৮ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন। উদারপন্থী ভোটারদের মধ্যে মামদানি বড় ব্যবধানে এগিয়ে থাকলেও মধ্যপন্থী ভোটারদের মধ্যে কুমো সামান্য এগিয়ে। অন্যদিকে রক্ষণশীল ভোটারদের ৪৫ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া—যা মামদানি ও কুমোর চেয়েও বেশি।

ইহুদি ভোটারদের সমর্থন ধরে রেখেছেন মামদানি

আগামী ৪ নভেম্বর নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এর আগেই জোহরান এমন এক সূক্ষ্ম ভারসাম্যের পথে হাঁটছেন, যেখানে একদিকে রয়েছে তাঁর দীর্ঘদিনের ইসরায়েলবিরোধী ও ফিলিস্তিনপন্থী অবস্থান, অন্যদিকে তিনি বিশাল ইহুদি জনগোষ্ঠীর সমর্থন আদায়েও কাজ করে যাচ্ছেন। জোহরানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে একাধিক প্রগতিশীল ইহুদি সংগঠন। যেমন বেন্ড দ্য আর্ক, জিউইশ ভয়েস ফর পিস (জেভিপি) অ্যাকশন এবং জিউস ফর রেসিয়াল অ্যান্ড ইকোনমিক জাস্টিস (জেএফআরইজে)। এসব সংগঠন প্রকাশ্যে গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের ভূমিকার সমালোচনা করেছে এবং জোহরানের প্রচারে মাঠে নেমেছে। জরিপে দেখা যাচ্ছে, নিউইয়র্কে বসবাসরত ইহুদি ভোটারদের মধ্যে জোহরান মামদানিই সবচেয়ে এগিয়ে আছেন। গত জুলাইয়ে জেনিথ রিসার্চ পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায়, জোহরান ইহুদি ভোটারদের মধ্যে ১৭ শতাংশ এগিয়ে আছেন। বর্তমানে এখনো তাঁর সমর্থন ১০ শতাংশ বেশি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ