অনলাইনে পোস্টিং জিরো ট্রেন্ডে মেতেছেন তরুণ-তরুণীরা
Published: 1st, December 2025 GMT
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসক্তি এখন বিশ্বব্যাপী এক বড় সমস্যা। মানসিক স্বাস্থ্য, উৎপাদনশীলতা ও ব্যক্তিগত সম্পর্কের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব ক্রমেই বাড়ছে। আর তাই অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের সময় আগের তুলনায় কমিয়ে দিয়েছেন।
সম্প্রতি লন্ডনভিত্তিক দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল টাইমসে প্রকাশিত একটি জরিপে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের পরিমাণ বিশ্বব্যাপী প্রায় ১০ শতাংশ কমে গেছে। তরুণ-তরুণীদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি দেখা যাচ্ছে। শুনতে অবাক লাগলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অতিরিক্ত বাণিজ্যিকীকরণ, বিজ্ঞাপনের আধিক্য ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি আধেয়ের (কনটেন্ট) কারণে এমনটা ঘটছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই ঘটনাকেই ‘পোস্টিং জিরো’ বলা হচ্ছে। এই ট্রেন্ডের অংশ হিসেবে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ব্যক্তিগত তথ্য নিয়মিত পোস্ট করা বন্ধ করে দিয়েছেন।
৫০টি দেশের আড়াই লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ওপর জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে, প্রতিদিন অনলাইনে ব্যক্তিগত জীবনের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশের প্রবণতা ক্রমে কমে যাওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহার প্রায় ১০ শতাংশ কমে গেছে। এই পতনের নেতৃত্ব দিচ্ছে তরুণ প্রজন্ম।
মার্কিন গণমাধ্যম দ্য নিউইয়র্কের সাংবাদিক কাইল চেয়কা তাঁর সাপ্তাহিক কলাম ইনফিনিট স্ক্রলে প্রথম পোস্টিং জিরো শব্দটি ব্যবহার করেন। চেয়কা পুরোনো দিনের স্মৃতিচারণা করে বলেন, আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ফিডে বন্ধুদের দৈনন্দিন জীবনের তুচ্ছ ঘটনার তথ্য বা ছবি দেখা যেত বেশি। বর্তমানে এই প্রবণতা কমে গেছে বলা যায়।
আরও পড়ুনঅনলাইন জীবন আমাদের আসল সম্পর্কগুলোকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫কাইল চেয়কা তাঁর কলামে লিখেছেন, ‘আমরা হয়তো পোস্টিং জিরোর দিকে এগোচ্ছি। এটি এমন একটি অবস্থা, যেখানে সাধারণ মানুষ যাঁরা পেশাদার নন, তাঁরা অতিরিক্ত প্রকাশ থেকে বাঁচতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করা বন্ধ করে দেন। পোস্টিং জিরো মানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ধারণাগত সমাপ্তি।’
আরও পড়ুনঅনলাইন জীবন আমাদের আসল সম্পর্কগুলোকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এমন পতনকে ‘ডেড ইন্টারনেট থিওরি’র মাধ্যমেও বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এই তত্ত্ব অনুসারে, অনলাইনে বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মে বেশির ভাগ কনটেন্ট আর প্রকৃত মানুষের তৈরি করছে না। বিভিন্ন বট, এআই মিলে কনটেন্ট তৈরির প্রবণতা বাড়ছে। ফলে অনেকেই আগ্রহ হারাচ্ছেন।
সূত্র: দ্য প্রিন্ট
আরও পড়ুনসামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যাঁরা কিছু পোস্ট করেন না, তাঁদের ৭টি বৈশিষ্ট্য২০ অক্টোবর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পরিবেশ ও অভ্যাস দুটোর সমন্বিত প্রভাবেই দেশে ফুসফুস ক্যানসার বাড়ছে
আগে যেখানে মূলত বয়স্কদের মধ্যে ফুসফুস ক্যানসার দেখা যেত, এখন ২৫ থেকে ৩০ বছর বয়সী তরুণদেরও এই রোগ বাড়ছে। পাশাপাশি বাংলাদেশে নারীদের মধ্যেও ফুসফুস ক্যানসারের প্রবণতা বেড়ে চলেছে। পারিপার্শ্বিক পরিবেশ ও অভ্যাস—এ দুটির সমন্বিত প্রভাবেই দেশে ফুসফুস ক্যানসারের প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে।
এসকেএফ অনকোলজির আয়োজনে ‘বিশ্বমানের ক্যানসার চিকিৎসা এখন বাংলাদেশে’ শীর্ষক অনলাইন আলোচনায় এ কথা বলেন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ও মেডিকেল অনকোলজিস্ট ডা. সৈয়দ মো. আরিফুল ইসলাম।
নভেম্বর ফুসফুস ক্যানসার সচেতনতার মাস। এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে এই অনলাইন আলোচনার আয়োজন করা হয়। উপস্থাপনায় ছিলেন নাসিহা তাহসিন।
এ পর্বে আলোচনার বিষয় ছিল ‘ফুসফুস ক্যানসার বার্তা’। বাংলাদেশে ফুসফুস ক্যানসার রোগের কারণ, ঝুঁকি, লক্ষণ, চিকিৎসা, সচেতনতা ও প্রতিরোধব্যবস্থা ইত্যাদি নিয়ে পরামর্শ দেন ডা. সৈয়দ মো. আরিফুল ইসলাম। পর্বটি বুধবার (২৬ নভেম্বর) সরাসরি প্রচারিত হয় প্রথম আলো ডটকম এবং প্রথম আলো, এসকেএফ অনকোলজি ও এসকেএফের ফেসবুক পেজে।
ফুসফুস ক্যানসারের ঝুঁকিঢাকা শহরের ক্রমবর্ধমান দূষণ ফুসফুস ক্যানসারের ঝুঁকি আশঙ্কাজনকভাবে বাড়িয়ে তুলছে বলে মনে করেন ডা. সৈয়দ মো. আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, শুধু ধূমপায়ীরাই নন, যাঁরা নিয়মিত ধোঁয়া ও দূষণের সংস্পর্শে থাকেন, তাঁরাও সমান ঝুঁকিতে আছেন। ধূমপানের পাশাপাশি আধুনিক খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত ওজন, কম শারীরিক পরিশ্রম এবং অনিয়মিত জীবনযাপনও ফুসফুস ক্যানসারের একটি বড় কারণ। পরিবেশ ও অভ্যাস—এ দুটির সমন্বিত প্রভাবেই দেশে ফুসফুস ক্যানসারের প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে।
লক্ষণ কীফুসফুস ক্যানসারের লক্ষণ নিয়ে জানতে চাইলে ডা. সৈয়দ মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, শুরুতে সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হলো দীর্ঘস্থায়ী কাশি, যা দু-তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরেও ভালো হয় না। এর সঙ্গে শ্বাসকষ্ট, কাশি থেকে রক্ত আসা, হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া, খাওয়ার রুচি কমে যাওয়া এবং আক্রান্ত স্থানে বুকে ব্যথা দেখা দিতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে মুখ বা হাত ফুলে যাওয়ার মতো উপসর্গও দেখা দেয়। নিউমোনিয়া বা অ্যাজমার কারণে সরাসরি ক্যানসার হয়, এমন প্রমাণ নেই। তবে সিওপিডির মূল কারণ যেহেতু ধূমপান, আর ধূমপানই ফুসফুস ক্যানসারের প্রধান ঝুঁকি। তাই সিওপিডির পেছনের ধূমপানের অভ্যাসই ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।
ফুসফুস ক্যানসার রোগের কারণ, ঝুঁকি, লক্ষণ, চিকিৎসা, সচেতনতা ও প্রতিরোধব্যবস্থা ইত্যাদি নিয়ে পরামর্শ দেন ডা. সৈয়দ মো. আরিফুল ইসলাম