ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহার না হলে শান্তিচুক্তি সম্পূর্ণ হবে না। গতকাল শনিবার কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মেদ বিন আবেদলরহিম আল-থানি এ কথা বলেন। কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠিত দোহা ফোরামে তিনি এ কথা বলেন।

কাতারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে আমরা সংকটময় মুহূর্তে আছি। গাজা থেকে সব ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার করা ও উপত্যকাটিতে স্থিতিশীলতা না আসা পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পূর্ণ হবে না।’ গত ১০ অক্টোবর কাতার, যুক্তরাষ্ট্র ও মিসরের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ প্রতীক্ষিত গাজা শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন হয়। এর মাধ্যমে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে দুই বছর ধরে চলা রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটে।

শান্তিচুক্তির দ্বিতীয় ধাপে ইসরায়েলকে গাজার বিভিন্ন স্থানে থাকা সেনাচৌকি প্রত্যাহার, একটি অন্তর্বর্তী কর্তৃপক্ষ শাসনভার গ্রহণ করা এবং সেখানে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার জন্য গঠিত বাহিনী (আইএসএফ) মোতায়েন করা হবে, যা এখনো শুরু হয়নি। কিন্তু ফিলিস্তিনি বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় আরব ও মুসলিম দেশগুলো স্থিতিশীলতা বাহিনীতে অংশ নিতে অনীহা দেখাচ্ছে।

ফোরামে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেন, এই বাহিনী নিয়ে এখনো আলোচনা

চলছে। এটি কীভাবে পরিচালিত হবে এবং কোন কোন দেশ এতে অংশ নেবে—তা নিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন রয়ে গেছে। ফিদান বলেন, ‘এই বাহিনীর প্রথম লক্ষ্য হওয়া উচিত ইসরায়েলি সেনাদের হাত থেকে ফিলিস্তিনিদের পৃথক করা। এটাই আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। এরপর আমরা অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে পারব।’

তুরস্ক স্থিতিশীলতা বাহিনীতে অংশ নিতে চায় বলে ইঙ্গিত দিয়েছে। তবে ইসরায়েল বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে দেখছে না। কারণ, তারা মনে করে হামাসের সঙ্গে আঙ্কারার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।

কাতারের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, চুক্তির পরবর্তী ধাপ বাস্তবায়নের পথ সুগম করতে

কাতার, তুরস্ক, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র একত্রে কাজ করছে। দুই দেশের জনগণের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে একটি স্থায়ী সমাধানের আহ্বান জানান তিনি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

ইমরানের সঙ্গে কারও সাক্ষাৎ নিষিদ্ধ

পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার আদিয়ালা কারাগারে বন্দী পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের সঙ্গে সব ধরনের সাক্ষাৎ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার কথা জানিয়েছেন। তিনি ইমরান খানকে ‘যুদ্ধোন্মাদনায় আচ্ছন্ন এক চরমপন্থী’ বলে আখ্যা দেন। গত শুক্রবার জিও নিউজের ‘নয়া পাকিস্তান’ অনুষ্ঠানে তারার এ কথা বলেন।

এর আগে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী ইমরান খানকে ‘মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তি’ এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেন। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই ইমরান খানের সঙ্গে অন্যদের সাক্ষাৎ বন্ধ করার বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করেন।

তারার বলেন, ‘আইন ও নির্ধারিত বিধি অনুসারেই বন্দীদের সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। এখন ইমরান খানের সঙ্গে সব ধরনের সাক্ষাৎ নিষিদ্ধ।’ কারাগারের বাইরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত করার যেকোনো চেষ্টার বিরুদ্ধে দ্রুত ও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেন তিনি।

পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রীর দাবি, কারা বিধি অনুযায়ী যেকোনো সাক্ষাতের সময় কারা সুপার উপস্থিত থাকেন। কর্মকর্তারা ইমরানের সঙ্গে কারাগারে সাক্ষাৎ করতে আসা ব্যক্তিদের রাজনৈতিক আলোচনা এবং ইমরানের নির্দেশনা দেওয়ার বিষয়টি লক্ষ করেছেন।

পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান ২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকে কারাগারে রয়েছেন। ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি থেকে সন্ত্রাসবাদ পর্যন্ত নানা ধরনের অসংখ্য মামলা রয়েছে।

ইমরান খানের বিরুদ্ধে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ধ্বংসের চেষ্টা এবং রাষ্ট্র ও এর প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে জনগণকে উসকে দেওয়ার অভিযোগ করে আসছে ক্ষমতাসীন জোট সরকার।

তারার বলেন, ইমরান খান ও তাঁর দল দেশকে দেউলিয়া করার দিকে ঠেলে দিতে চেয়েছিল। পাকিস্তানকে দেউলিয়া করতে আইএমএফে (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) চিঠি পাঠানো হয়েছিল। ৯ মে সামরিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছিল।

তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ দেখতে না পেয়েই সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রবিরোধী বয়ান তৈরি করছেন।

খাইবার পাখতুনখাওয়ায় গভর্নর শাসন

তথ্যমন্ত্রী তারার বলেন, খাইবার পাখতুনখাওয়ায় গভর্নর শাসন জারির বিষয়টি ফেডারেল সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে।

সমঝোতার সুযোগ নেই

পিটিআইয়ের সঙ্গে এখনো সমঝোতার সুযোগ আছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তারার বলেন, ‘তারা সুযোগ নষ্ট করেছে। যারা বিশৃঙ্খলা, সন্ত্রাসবাদ বা চরমপন্থী চিন্তাধারা ছড়ায়, তাদের সঙ্গে কোনো সংলাপ হবে না।’ তবে পিটিআই ক্ষমা চাইলে ও অনুশোচনা করলে পুনর্বিবেচনা করা যেতে পারে।’

ইমরানের বোনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ

জিও নিউজের অনুষ্ঠান ‘আজ শাহজেব খানজাদা কে সাথ’-এ কথা বলতে গিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, ইমরান খানের বোন উজমা খানের সাম্প্রতিক ভারতীয় গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকার সাবেক ক্ষমতাসীন দলের জন্য কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। তিনি বলেন, পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা সব সময় রাজনীতিবিদদের সঙ্গে সংলাপে বসতে অস্বীকার করেছেন এবং দলটির কোনো সদস্যের পাকিস্তানবিরোধী বক্তব্যের বিরুদ্ধেও পিটিআই কখনো নিন্দা জানায়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ