বন্যায় ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডে নিহতের সংখ্যা ১৭৫০ ছাড়াল
Published: 6th, December 2025 GMT
এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে টানা বৃষ্টি থেকে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডে নিহতের সংখ্যা ১ হাজার ৭৫০ ছাড়িয়েছে। এসব দেশের উদ্ধারকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবীরা এই দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত লাখ লাখ মানুষকে সহায়তা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন।
দেশগুলোর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ হালনাগাদ এ তথ্য জানিয়েছে বলে শনিবার আল–জাজিরার খবরে বলা হয়।
গত ২৭ নভেম্বর দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এসব দেশে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়। টানা বৃষ্টি থেকে বন্যা ও ভূমিধস দেখা দেয়। শ্রীলঙ্কায় ‘ডিটওয়া’ নামের এক ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। মাঝখানে দু-এক দিন বৃষ্টি কিছুটা কমে আসে। তবে আবারও কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের সুমাত্রা দ্বীপের কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, অন্তত ৯০৮ জন নিহত হয়েছেন। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ৪১০ জন। দ্বীপটিতে বাস্তুচ্যুত হয়েছে ৮ লাখের বেশি মানুষ।
আচেহ প্রদেশের গভর্নর মুজাকির মানাফ জানিয়েছেন, উদ্ধারকারী দল এখনো ‘কোমরসমান গভীর কাদা’ থেকে মরদেহ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। তবে দূরবর্তী ও দুর্গম গ্রামগুলোতে এখন খাদ্যসংকটই সবচেয়ে বড় হুমকি বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
গভর্নর মুজাকির বলেন, ‘অনেক মানুষের মৌলিক প্রয়োজনীয় জিনিসের দরকার। আচেহের দূরবর্তী অনেক এলাকা এখনো সাহায্যের বাইরে রয়ে গেছে।’ তিনি বলেন, মানুষ বন্যায় মারা যাচ্ছে না, বরং অনাহারে মারা যাচ্ছে। পরিস্থিতি এখন এ রকমই।
শ্রীলঙ্কা সরকার জানিয়েছে, তাদের দেশে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬০৭ জনে পৌঁছেছে।
এখনো ২১৪ জন নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজ ব্যক্তিদের প্রায় সবাই মারা গেছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকে জাতীয় জরুরি অবস্থার ঘোষণা দিয়ে দেশ পুনর্গঠনের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। দেশটি বর্তমানের এই প্রাকৃতিক দুর্যোগকে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
শ্রীলঙ্কায় ২০ লাখের বেশি মানুষ অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ বন্যায় ক্ষতির শিকার হয়েছেন। দেশটির কর্মকর্তারা শুক্রবার সতর্ক করেছেন, টানা ভারী বৃষ্টিতে নতুন করে ভূমিধসের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
আরও পড়ুনএশিয়ার কিছু অংশে ঝড়-বন্যা-ভূমিধস কেন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে০৩ ডিসেম্বর ২০২৫শ্রীলঙ্কার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র (ডিএমসি) জানিয়েছে, ৭১ হাজারের বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৫ হাজার বাড়ি গত সপ্তাহের বন্যা ও ভূমিধসে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।
ডিএমসি শুক্রবার পূর্বাভাসে বলেছে, ইতিমধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মধ্যাঞ্চলসহ দেশের অনেক এলাকায় আবারও বৃষ্টি হতে পারে। এতে নতুন ভূমিধসের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, থাইল্যান্ডে বন্যায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২৭৬ জন নিহতের খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। অন্যদিকে মালয়েশিয়া ও ভিয়েতনামে ভারী বৃষ্টিতে ভূমিধসের কারণে দুজন করে চারজন নিহত হয়েছেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
এশিয়ার ৫ দেশে বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৭৫০
এশিয়ার পাঁচটি দেশে বন্যা ও ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত লাখ লাখ মানুষকে সহায়তা করার জন্য উদ্ধারকারী দল এবং স্বেচ্ছাসেবকরা লড়াই করে যাচ্ছেন। শনিবার ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডে মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৭৫০ জন ছাড়িয়ে গেছে।
আচেহ প্রদেশের সুমাত্রা দ্বীপ থেকে শনিবারের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, ইন্দোনেশিয়ায় কমপক্ষে ৯০৮ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে এবং ৪১০ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছে। এই অঞ্চলে আট লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
শ্রীলঙ্কায় সরকার ৬০৭ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। বন্যা ও ভূমিধসের কারণে আরো ২১৪ জন নিখোঁজ রয়েছে। সেই হিসেবে মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বন্যায় থাইল্যান্ডেও কমপক্ষে ২৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে। এছাড়া মালয়েশিয়ায় দুজন এবং ভিয়েতনামে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, ইন্দোনেশিয়ার আবহাওয়া সংস্থা সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, আচেহ প্রদেশে শনিবার পর্যন্ত ‘খুব ভারী বৃষ্টিপাত’ হতে পারে, উত্তর ও পশ্চিম সুমাত্রাও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
আচেহের গভর্নর মুজাকির মানাফ জানিয়েছেন, উদ্ধারকারী দলগুলো এখনো ‘কোমর-গভীর’ কাদায় মৃতদেহ অনুসন্ধান করছে। দুর্ভিক্ষ এখন প্রত্যন্ত ও দুর্গম গ্রামগুলোতে সবচেয়ে গুরুতর হুমকি হয়ে উঠছে এখন।
তিনি বলেন, “অনেক মানুষের মৌলিক জিনিসপত্র প্রয়োজন। আচেহের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক এলাকায় এখনো যাওয়া সম্ভব হয়নি উদ্ধারকারীদের।”
শ্রীলঙ্কায় ২০ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কর্মকর্তারা শুক্রবার ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার ফলে নতুন ভূমিধসের ঝুঁকি তৈরি হওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছেন।
শ্রীলঙ্কার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র (ডিএমসি) জানিয়েছে, ৭১ হাজারেরও বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার বাড়ি গত সপ্তাহের বন্যা ও ভূমিধসে ধ্বংস হয়ে গেছে।
ঢাকা/শাহেদ