জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে আরেকটি জোট হলো। কয়েক ভাগে বিভক্ত জাতীয় পার্টির দুটি অংশের নেতৃত্বে এই জোটের নাম হয়েছে ‘জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট’ (এনডিএফ)। জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বাধীন অংশ দুটিসহ মোট ১৮টি দল থাকছে এই জোটে।

ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে এনসিপি, এবি পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন নতুন জোট গড়ার ঘোষণা দেওয়ার পরদিনই এনডিএফ জোটের ঘোষণা এল। আজ সোমবার রাজধানীর গুলশান-১ নম্বর এলাকার একটি মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে জোটের আত্মপ্রকাশ হয়। এই জোটের ১৮টি দলের মধ্যে ৬টির নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধন রয়েছে।

নতুন জোটের প্রধান উপদেষ্টা করা হয়েছে জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে। সভাপতি হয়েছেন জাতীয় পার্টির (একাংশ) চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। জোটের প্রধান মুখপাত্র হয়েছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। এ ছাড়া ইলিয়াস কাঞ্চনের নেতৃত্বে গড়া নতুন দল জনতা পার্টি বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ারকে জোটের প্রধান সমন্বয়ক করা হয়েছে।

নতুন জোটের প্রধান উপদেষ্টা হয়েছেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, সভাপতি আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। জোটের প্রধান মুখপাত্র করা হয়েছে এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারকে।

এনডিএফের শরিক দলগুলো হলো জাতীয় পার্টির (জাপা) আনিসুল ইসলামী নেতৃত্বাধীন অংশ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (জেপি), জনতা পার্টি বাংলাদেশ, তৃণমূল বিএনপি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (মহসিন রশিদ), জাতীয় ইসলামিক মহাজোট, বাংলাদেশ স্বাধীন পার্টি, বাংলাদেশ স্বাধীনতা পার্টি, অ্যাপ্লায়েড ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আন্দোলন, ডেমোক্রেটিক পার্টি, জাতীয় সাংস্কৃতিক জোট, জাতীয় সংস্কার জোট ও বাংলাদেশ লেবার পার্টি (সেকান্দার আলী)।

এই জোটের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ব্রুনেই দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নতুন জোটের নেতারা যা বললেন

সংবাদ সম্মেলনের প্রধান অতিথি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু নতুন রাজনৈতিক ফ্রন্ট গঠনের উদ্যোগের প্রশংসার পাশাপাশি শঙ্কাও প্রকাশ করেন, এ নিয়ে যে অতীত অভিজ্ঞতায় তিনি দেখেছেন, এ ধরনের চেষ্টা অনেক সময় ব্যর্থ হয়।

১৮টি দল নিয়ে গঠিত এনডিএফ জোটের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ব্রুনেই দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার সরকারের এক সময়ের এই মন্ত্রী বলেন, ৫৪ বছরে দেশে অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও মৌলিক অধিকার ও নিরাপদ নাগরিক জীবন নিশ্চিত হয়নি। সরকারগুলো ভয় দেখিয়ে দেশ চালিয়েছে। স্বাধীনতার মূল চেতনাও পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। প্রকৃত স্বাধীনতা হলো নির্ভয়ে কথা বলা ও নিঃশঙ্ক জীবনযাপন—যা এখনো নিশ্চিত নয়।

অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা নিয়ে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, সরকারের মূল দায়িত্ব ছিল রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব প্রশমিত করে অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা। কিন্তু বাস্তবে তারা প্রশাসনিক কাঠামোতে দলীয় প্রভাবমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। অভিযোগ আছে, এই অন্তর্বর্তী সরকার একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক গোষ্ঠীর প্রতি নরম মনোভাব দেখিয়েছে এবং মাঠপর্যায়ে আস্থার সংকট কাটাতে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি। ফলে জনগণের প্রত্যাশা পূরণের বদলে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপরই আস্থাহীনতা আরও বেড়ে গেছে।

নতুন জোট ‘জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট’–এর (এনডিএফ) আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির একাংশের মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। আজ সোমবার ঢাকার গুলশানের একটি হোটেলে এই অনুষ্ঠান হয়.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন নত ন জ ট সরক র র প রক শ য ক তর ফ রন ট এই জ ট

এছাড়াও পড়ুন:

মুছাপুরে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া ও শীতবস্ত্র বিতরণ করলেন মাসুদুজ্জামান

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার বিএনপির উদ্যোগে বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনায় এবং এলাকার অসহায়, শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ ও দোয়া মাহফিল  অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের বিএনপি মনোনীত এমপি প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদ। দোয়া মাহফিলে বক্তারা বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক সুস্থতা, দীর্ঘায়ু এবং দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাসুদুজ্জামান বলেন,"দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনায় এই দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণ করেছি। তিনি বর্তমানে হাসপাতালে অত্যন্ত সংকটময় সময় কাটাচ্ছেন। আমরা আপনাদের কাছে বিনীত অনুরোধ জানাই, আপনারা যে ধর্মেরই হোন না কেন, দেশনেত্রীর সুস্থতার জন্য দোয়া করবেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান মায়ের সেবায় প্রতিনিয়ত আছেন এবং প্রতিটি মুহূর্ত তাঁকে উৎকন্ঠায় কাটাতে হচ্ছে। আমরা আপনাদের কাছে তাঁর জন্যও দোয়া চাই, যাতে সকল ষড়যন্ত্রের অবসান ঘটে এবং তিনি নিরাপদে মায়ের পাশে ফিরে যেতে পারেন। একই সঙ্গে আমরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।"

তিনি আরও বলেন, "বন্দর ও মুছাপুর ইউনিয়নের প্রধান সমস্যা হলো গ্যাসের অভাব। প্রায় ৫০ বছর ধরে নারায়ণগঞ্জের মানুষ এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত। ইনশা আল্লাহ, ভবিষ্যতে যদি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ক্ষমতায় আসে, আমরা এই সমস্যার সমাধান নিশ্চিত করব। এখানে মাদক একটি গুরুতর সমস্যা, যা সমাজকে অনেকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এছাড়া ইটভাটার কারণে জমির মূল্য অনেক কমে যাচ্ছে, যা এখানকার কৃষি জমি এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে। এই সমস্যাগুলোর সমাধান করা হবে ৩১ দফার ভিত্তিতে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামত ও সংস্কার করে। আমি রাজনীতিতে কোনো সুবিধা নিতে আসিনি। আমি আপনাদের পাশে থাকতে এসেছি, আমার বাকি জীবন আপনার কল্যাণে উৎসর্গ করতে চাই। আমি জনাব তারেক রহমানের সঙ্গে অনেকবার আলোচনা করেছি এবং বুঝতে পেরেছি, তাঁর স্বপ্নের বাংলাদেশ গঠনের পরিকল্পনা ৩১ দফায় প্রতিফলিত হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য হলো জনগণের সমস্যা দূর করা এবং একটি উন্নত ও সুরক্ষিত ভবিষ্যত নিশ্চিত করা।"

এ সময় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মো. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, মহানগর বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক ফতেহ মো. রেজা রিপন, মহানগর বিএনপির সদস্য হাজী ফারুক হোসেন, যুবদল সভাপতি মনিরুল ইসলাম সজল, বন্দর থানা বিএনপির; সভাপতি শাহেন শাহ্। আজকের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বন্দর উপজেলা বিএনপি সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণ, এবং সঞ্চালনায় ছিলেন বন্দর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ লিটন। এছাড়াও ওয়ার্ড বিএনপি, বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের স্থানীয় জনগণ এই সময় উপস্থিত ছিলেন।

এমন উদ্যোগ স্থানীয় জনগণের মধ্যে ঐক্য, সহমর্মিতা ও মানবিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দোয়া ও শীতবস্ত্র বিতরণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়। শীতবস্ত্র হাতে পাওয়া অনেকেই স্বস্তি ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। আয়োজকরা জানান, শীতের তীব্রতা অনুযায়ী ভবিষ্যতে আরও কিছু স্থানে এই ধরনের সহায়তা কর্মসূচি নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ