গ্রামটির এ মাথা থেকে ও মাথা পর্যন্ত ঘুমভাঙা শান্ত পরিবেশ। ‘পৃথিবীর সব ঘুঘু ডাকিতেছে হিজলের বনে’—জীবনানন্দ দাশের কবিতার পঙ্‌ক্তির মতো ওখানে হয়তো পৃথিবীর সব ঘুঘু ডাকছে না, তবে থেমে থেমে দু-একটি ঘুঘুর ডাক শোনা যাচ্ছে, ডাকছে আরও কিছু পাখি।

গ্রামটির পথের পাশে, খালের পাড়ে, বাড়ির সীমানায় ফুল-কুমারী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে হিজলের একেকটি গাছ। খুব বেশি নয়, তারপরও এই গ্রীষ্মে নিজেদের আলাদা পরিচিতি নিয়ে বিক্ষিপ্তভাবে অন্য সব গাছের ভিড়ে মিলেমিশে আছে এই হিজলেরা। গাছে গাছে বেণিতে ঝোলানো মালার মতো দুলছে হিজল ফুলের ঝুমকা লতা। গাছ থেকে টুপ টুপ করে ঝরে পড়ছে এসব ফুল। গাছতলায় ঝরা ফুল লালচে, গোলাপি একপশলা চাদর হয়ে আছে। হাওয়ায় সেই ফুলের মৃদু ঘ্রাণ ভাসছে।

গত শুক্রবার এমন দৃশ্যের দেখা মিলল মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার কাউয়াদীঘি হাওরপারের অন্তেহরি গ্রামে।

হিজলের গাছ। গত শুক্রবার মৌলভীবাজারের কাউয়াদীঘি হাওরপারের অন্তেহরি গ্রামে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ জল র

এছাড়াও পড়ুন:

জামনগরে মুকেশ আম্বানির ছেলের বিয়েই কি সর্বনাশ করল ভারতের

ভারতের গুজরাট রাজ্যের বৃহৎ শহর জামনগর। কচ্ছ উপসাগরের তটে রৌদ্রোজ্জ্বল শহরটি মূলত একটি শিল্পাঞ্চল। শহরটি গত বছর অনেক মার্কিন নাগরিকের মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল। আর এর কারণ ছিল হলিউডের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী রিয়ানা।

জামনগরে ২০২৪ সালের মার্চে এশিয়ার অন্যতম শীর্ষ ধনী মুকেশ আম্বানির ছোট ছেলে অনন্ত আম্বানির প্রাক্‌–বিবাহ অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেছিলেন রিয়ানা। দর্শকসারিতে ছিলেন বিল গেটস, মার্ক জাকারবার্গ, ইভাঙ্কা ট্রাম্পসহ নামীদামি অনেক অতিথি।

নামজাদা এসব অতিথি জামনগরে ছিলেন, যেখানে নেই কোনো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কিংবা বেশির ভাগ অতিথির থাকার উপযোগী হোটেল। কারণ, শহরটির বন্দর ও তেল শোধনাগার আম্বানি সাম্রাজ্য এবং তাঁর ১১ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের সম্পদের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

চলতি সপ্তাহে আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছে এই জামনগর। এর কারণ, শহরের জ্বালানি তেলশিল্প। এসব জ্বালানি তেলের একটি অংশ আসে রাশিয়া থেকে। আর বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্কে গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মাসের পর মাস ধরে ওয়াশিংটন আর নয়াদিল্লির মধ্যে চলা বাণিজ্যিক আলোচনা গত জুলাইয়ের শেষ দিকে ভেঙে পড়ে। দেশ দুটির বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কেও ফাটল ধরে। গত ৩০ জুলাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে দেন। শুধু তাই নয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কটাক্ষ করে লেখেন, মার্কিন কোম্পানিগুলো হয়তো শিগগিরই ভারতের চিরশত্রু পাকিস্তানের সঙ্গে তেল খনন শুরু করবে। ‘কে জানে, হয়তো একদিন তারা ভারতের কাছেই তেল বিক্রি করবে!’

এর ঠিক এক সপ্তাহ পর, ট্রাম্প আরও কড়া একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি কার্যত ভারতের রপ্তানিকারকদের জন্য বিপদের দুয়ার খুলে দেন। ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ভারতীয় কোম্পানিগুলোকে আন্তর্জাতিক জ্বালানি তেল বাণিজ্য থেকে মুনাফা তুলে নেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে দেশটির সরকার। এর মধ্য দিয়ে দেশটি ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ প্রচেষ্টা সহায়তা করছে।

ট্রাম্প কোনো কোম্পানির নাম উল্লেখ করেননি। কিন্তু ঘুরেফিরে সব সূত্র মুকেশ আম্বানি এবং তাঁর কোম্পানি রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের সঙ্গে মিলে যায়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নিজের রাজ্য গুজরাটের জামনগরে কোম্পানিটির প্রধান তেল শোধনাগার অবস্থিত। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় শোধনাগার। জামনগর ও পুরো ভারতে রিলায়েন্স গ্রুপের বিনিয়োগ পরিকল্পনা হয়েছে মোদি ও অন্যান্য রাজনীতিবিদদের পরামর্শে।

ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে ভারতের অন্যতম শীর্ষ ধনী মুকেশ ও নিতা আম্বানি

সম্পর্কিত নিবন্ধ